এক অন্যরকম হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে মিরাজ
টিম বাংলাদেশের সময়টা ভাল যাচ্ছেনা একদমই। তবে অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজের দিনকাল মন্দ কাটছে না। আগস্টে ২ টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানিদেরকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ; টাইগারদের সে সাফল্যের মিশনে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
সেঞ্চুরি করতে না পারলেও রাওয়ালপিন্ডিতে হওয়া ২ টেস্টেই টানা ২ বার ৭০-এর ঘরে (৭৭ ও ৭৮*) পা রাখেন স্পিনার কাম লেট অর্ডার হিসেবে খেলা মেহেদী হাসান মিরাজ।
তারপর ভারতে ও সর্বশেষ দেশের মাটিতে দক্ষি আফ্রিকার সাথে টানা ২ সিরিজে নাকানি চুবানি খেলো বাংলাদেশ। একদম দাঁড়াতেই পারলোনা শান্তর দল; কিন্তু এর মধ্যেও ঢাকায় প্রোটিয়াদের বিপক্ষে শেষ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন মিরাজ। একদিক আগলে রেখে পৌঁছে গিয়েছিলেন শতরানের খুব কাছে; কিন্তু মাত্র ৩ রানের জন্য পারেননি।
যে কারণে সমালোচদের মুখেও মিরাজের প্রশংসা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সাকিববিহীন বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তিও ভাবা হচ্ছে মিরাজকে। বাংলাদেশ ভক্তদের জন্য একটা আশার খবর, আফগানদের বিপক্ষে মিরাজই হতে পারেন আলোকবর্তিকা।
এ অলরাউন্ডারের সামনে আছে দারুন এক হ্যাটট্রিকের দূর্লভ সুযোগ। সেটা কি? যদি আগামীকাল ৬ নভেম্বর শারজায় প্রথম ম্যাচে মিরাজ ম্যাচসেরা পারফরমারের পুরষ্কার পান, তাহলে আফগানদের বিপক্ষে টানা ৩ ওয়ানডেতেই ম্যাচ সেরা পারফরমারের পুরস্কার পেয়ে এক অন্যরকম হ্যাটট্টিক পূরণ হবে মিরাজের।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ওয়ানডে মোকাবিলা হয়েছিল ভারতের ধর্মশালায়; ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে। সেখানে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ব্যাট (৭৩ বলে ৫৭) ও বলে (৩/২৫) দারুণ নৈপুণ্যে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
আফগানদের সাথে ঠিক তার আগের ম্যাচটি ছিল ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর লাহোরে। এশিয়া কাপের খেলায় ম্যাচ সেরা এবং বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন মিরাজ। ওপেন করতে নেমে দারুন শতক উপহার দেন মিরাজ।
১১৯ বলে ১১২ আর ৪১ রানে ১ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান মিরাজ। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও সেঞ্চুরি করেন (১০৫ বলে ১০৪ )। তাদের জোড়া শতকে ৩৩৪ রান করে ৮৯ রানে জয়ী হয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারের পরপর ৩ ম্যাচে সেরার পুরস্কার জেতার রেকর্ড নেই। প্রয়াত মানজার রানা তার ওয়ানডে ক্যারিয়াঠে ২০০৫ সালে পরপর ২ ম্যাচে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন। দুটি কৃতিত্বই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ৩৪ রানে ৪ উইকেট দখল করে ম্যাচ সেরা হওয়ার পর, ২৯ জানুয়ারি ঢাকা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ৩৬ রানে ৪ উইকেট ঝুলিতে ভরার পর ৭ বলে ১৫ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দিয়ে আবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন।
তবে ৩১ জানুয়ারি ঢাকায় শেষ ম্যাচে আর পারেননি মানজার রানা। মোহাম্মদ রফিক ৩৪ রানে ২ উইকেট দখলের পর ব্যাট হাতে ঝড়ের গতিতে ৬৬ বলে ৭২ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলে হন ম্যাচ সেরা।
কাজেই একই দলের বিপক্ষে টানা তিন খেলায় ম্যাচ সেরা পারফরমার হওয়ার রেকর্ডও তাই নেই কারো। এখন মিরাজ কি প্রথম পারফরমার হিসেবে সে অধরা কৃতিত্বর অধিকারী হবেন?
এআরবি/আইএইচএস/