ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

ওভারপ্রতি ৮.২২ রান, কানপুর টেস্টে আর যে সব রেকর্ড গড়লো ভারত

ক্রীড়া প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:৩২ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ওভারপ্রতি রান তোলার হার দেখলে যে কেউ এটাকে স্রেফ একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বলে ভুল করতে পারে। কেউ হয়তো কল্পনাও করতে পারবে না, কোনো টেস্ট ম্যাচে কেউ এত দ্রুততার সাথে রান তুলতে পারে। এমনকি বর্তমান সময়ে ইংল্যান্ড টেস্টে যে বাজবল ক্রিকেট খেলে, সেখানেও এত দ্রুততার সাথে রান তুলতে পারে কি না সন্দেহ।

কানপুর টেস্টের প্রথমদিন খেলা হয়েছিলো মাত্র ৩৫ ওভার। এরপর প্রথমদিনসহ তিনদিন প্রায় পুরোটাই গেছে বৃষ্টির পেটে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন তো বলই মাঠে গড়াতে পারেনি। আজ চতুর্থদিন আকাশের মেঘ সরিযে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া ছিল কানপুরের আকাশে।

কিন্তু টাইগার ব্যাটারদের আকাশ মেঘমুক্ত হতে পারলো না। ভারতীয় বোলাররা ঝড় বইয়ে দিলেন। মুমিনুল হকের দারুণ এক সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ২৩৩ রানে অলআউট হলো বাংলাদেশ।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে যেভাবে ভারতীয় ব্যাট করতে শুরু করে, তা রীতিমত টি-টোয়েন্টিকেও হার মানায় যেন। মাত্র ৩৪.৪ ওভার ব্যাট করে ভারতীয়রা। তাতে রান ওঠে ২৮৫টি। ৯ উইকেট হারিয়েছিলো রোহিত শর্মার দল। ওভারপ্রতি রান তুললো তারা ৮.২২ করে। এটুকু পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়, ব্যাট হাতে কতটা বিধ্বংসী ছিল ভারতীয়রা।

বিধ্বংসী ব্যাটিংই নয়, দ্রুততম রান তোলার ক্ষেত্রে অনেকগুলো রেকর্ডও গড়ে রোহিত শর্মার দল।

১: ভারতের দলীয় ১০০ রান আসে মাত্র ১০.১ ওভারে (৬১ বলে)। যা টেস্ট ইতিহাসে দ্রুততম দলীয় টেস্ট শতরানের রেকর্ডের জন্ম দিলো। ভারত নিজেদের রেকর্ডই ভেঙেছে এ ক্ষেত্রে। এর আগে টেস্টে দলীয় দ্রুততম শতরান ছিল তাদেরই দখলে। গত বছর পোর্ট অব স্পেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২.২ ওভারে দলীয় শতরান করেছিলো তারা।

২৪.২: দলীয় ২০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছাতে ভারত খেলেছে মাত্র ২৪.২ ওভার। টেস্ট ক্রিকেটে এটাও দ্রুততম দলীয় ২০০ রান তোলার রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার। যারা ২০১৭ সালে সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৮.১ ওভারে দলীয় ২০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছেছিলো। আজ যেটা ভেঙে দিলো ভারত।

৩.০: দলীয় ৫০ রানের মাইলফলকে পৌঁছাতে ভারতের লেগেছিলো মাত্র ৩.০ ওভার। এটাও টেস্ট ক্রিকেটে দলীয় দ্রুততম ফিফটি রানের রেকর্ড। এর আগে চলতি বছরের জুলাইয়ে নটিংহ্যাম ও বার্মিংহ্যামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দু’বার ইংল্যান্ড দ্রুততম দলীয় ফিফটি করেছিলো ৪.২ ওভার।

০: প্রথম ২০ বলের আগে দলীয় ৫০ রান করার রেকর্ড ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাটে এর আগে আর ছিল না ভারতের। এর আগে তারা যে কোনো ইনিংসে দ্রুততম দলীয় ফিফটির রেকর্ড গড়েছিলো ৩.৪ ওভারে। তাও বাংলাদেশের বিপক্ষে, গত বছর এশিয়ান গেমস টি-টোয়েন্টিতে।

৮.২২: বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তোলার সময় ভারতের রান রেট। অন্তত ২০০ বল খেলা যে কোনো টেস্ট ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ রানরেটের রেকর্ড। এর আগে টেস্টে সর্বোচ্চ রানরেটের রেকর্ড ছিল ৭.৩৬। ২০২২ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে ওই রেকর্ডটি পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলো ইল্যান্ড। ৩৫.৫ ওভারে ইংল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান করেছিলো। শুধু তাই নয়, টেস্টে অন্তত দলীয় ১০০ রান করেছে এমন কোনো দলই আজকের আগ পর্যন্ত ৮ রান রেটে রান করতে পারেনি।

১৪.৩৪: ভারতের ওপেনিং জুটিতে জয়সওয়াল এবং রোহিত শর্মা ২৩ বলে তোলেন ৫৫ রান। তাদের রান তোলার গড় ছিল ১৪.৩৪ করে। রান রেটের হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে এটা ছিল দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি জুটির রেকর্ড। এর আগে ৫০ রানের জুটির রান রেটের রেকর্ড ছিল ১১.৮৬’র। গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের বেন ডাকেট ও বেন স্টোকস। তারা এ বছরই বার্মিংহ্যামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়েছিলেন।

৫: ভারতের অন্তত ৫জন ব্যাটার ২০ কিংবার তার বেশি রান করেছেন ১০০’রও বেশি স্ট্রাইক রেটে। যে কোনো টেস্টে এক ইনিংসে এটা যৌথ রেকর্ড। এর আগে ২০২২ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে ইংল্যান্ডেরও ৫জন ব্যাটার ১০০’রও বেশি স্ট্রাইকরেটে রান তুলেছিলেন।

৯৬: ২০২৪ সালে খেলা ৮টি টেস্ট ম্যাচে মোট ৯৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ভারতীয় ব্যাটাররা। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড এটি। তারা পেছনে ফেলেছে ইংল্যান্ডের ৮৯ ছক্কার রেকর্ডকে। ২০২২ সালে ১৫ ম্যাচ খেলে ৮৯টি ছক্কা মেরেছিলো ইংলিশ ব্যাটাররা।

৪: টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৪জন ব্যাটার নিজের প্রথম দুই বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন। তার মধ্যে একজন রোহিত শর্মা। আজ (সোমবার) বাংলাদেশের বোলার খালেদ আহমেদকে নিজের প্রথম দুই বলেই ছক্কা হাঁকান ভারতীয় অধিনায়ক।

এর আগে ১৯৪৮ সালে বার্বাডোজ টেস্টে ইংল্যান্ডের জিম লেকারকে প্রথম দুই বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফোফি উইলিয়ামস। বাকি দু’জন হলেন ভারতের শচিন টেন্ডুলকার এবং উমেষ যাদব। ২০১৩ সালে চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়নকে এবং ২০১৯ সালে রাঁচি টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জর্জ লিন্ডেকে প্রথম দুই বলে ছক্কা হাঁকান উমেষ যাদব।

আইএইচএস/