ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

‘বাংলাদেশ দলকে এত খারাপ অবস্থায় আগে কখনো দেখিনি’

আরিফুর রহমান বাবু | প্রকাশিত: ০৯:৫২ পিএম, ০৩ জুন ২০২৪

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হয়ে গেছে দু’দিন আগেই; কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগী, ভক্ত ও সমর্থকদের মনে উচ্ছ্বাস নেই। আগের সেই প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসাহ-উদ্দীপনায়ও রাজ্যের ভাটা। পরিবর্তে টাইগার সমর্থকরদের মনে হঠাৎ এসে বাসা বেঁধেছে সংশয়।

কেমন খেলবে বাংলাদেশ? কতদূর যাবে, গ্রুপে আইসিসির দুই সহযোগি সদস্য নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে জিততে পারবে তো? সাথে শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকার কাউকে হারিয়ে দ্বিতীয় পর্বে পা রাখবে? নাকি ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে দেশে ফিরবেন লিটন, সৌম্য, শান্তরা? সবার মনে রাজ্যের শঙ্কা, কি হয়?

প্রিয় জাতীয় দলের পরিণতি নিয়ে দেশের ক্রিকেট বোদ্ধা, বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা যার যার মত করে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করছেন। তবে জাতীয় দলের সাবেক প্রশিক্ষক, এ মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ও অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের প্রশিক্ষকের গুরু দায়িত্ব পালন করা সারোয়ার ইমরান রীতিমত চিন্তিত।

এ অভিজ্ঞ ক্রিকেট বোদ্ধা টিম বাংলাদেশের পরিণতি নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দিহান। আজ সোমবার পড়ন্ত বিকেলে জাগো নিউজের সাথে একান্ত আলাপে অনেক কথার ভিড়ে সরোয়ার ইমরান বলে ফেলেছেন, তার কোচিং ক্যারিয়ারে টিম বাংলাদেশকে এত অবিন্যস্ত, ভাঙ্গাচোরা এবং ছন্নছাড়া দেখেননি।

চোখে-মুখে রাজ্যের হতাশা নিয়ে কোচ ইমরানের উচ্চারণ, ‘বাংলাদেশ দলকে এত খারাপ অবস্থায় আগে কখনো দেখিনি আমি। সেই টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর শুরুর দিকে যখন আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে রীতিমত দুগ্ধপোষ্য শিশু ছিলাম, তখনো মনে হয় এতটা খারাপ অবস্থা ছিল না দলের। আমরা হয়তো তখন জিততাম না। জিতলেও কালে ভদ্রে। কিন্তু পুরো দলের মধ্যে ভাল খেলার তাগিদ ছিল। সেভাবে উৎসাহ, উদ্দীপনা আর উদ্যম নিয়ে প্র্যাকটিস করতো। টিম স্পিরিট ছিল। ভাল খেলার ইচ্ছে ছিল প্রবল এবং নিজের সেরাটা দেওয়ার একটা বাসনা ও সংকল্প ছিল সবার মাঝে। এখনকার ভেতরের অবস্থা কি, জানি না। তবে বাইরে থেকে দেখে মনে হয় ছন্নছাড়া একটি দল। টিম স্পিরিট নাই।’

২ যুগে বেশ কয়েকবার টিম বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্বে থাকা সারোয়ার ইমরান আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের দলের অবস্থা আর কি বলবো! যে দল বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেনি, সেই জিম্বাবুয়ের সাথেও টস জিতে প্রথম ব্যাটিং নেই না। বা আগে ব্যাট করার সাহস দেখাইনি।’

শুধু তাই নয়। কোচ ইমরানের অনুভব, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটাও ভাল হয়নি। কোনো লক্ষ্য-পরিকল্পনা ছিল না। তার প্রমাণ বিশ্বকাপ খেলতে না পারা জিম্বাবুয়ে আর যুক্তরাষ্ট্রের মত আইসিসির সহযোগী দলের সাথে ৩ ম্যাচের সিরিজ খেলে বিশ্বকাপের দেশে চলে যাওয়া।’

ইমরান দুঃখ করে বলেন, ‘প্রস্তুতি পর্বটা আমরা মোটেই ভেবেচিন্তে সারিনি। নিজেদের ঘাটতি কোথায়, দূর্বল জায়গা কি কি, সে সব খুঁজে বের করে উন্নতির পথ খোজার চেষ্টাই ছিল না। তা থাকলে জিম্বাবুয়ের মত দলের সাথে ঘরের মাঠে ৫ ম্যাচের সিরিজে টস জিতলেই আগে ব্যাটিংয়ে নেমে পড়তাম এবং দেশের মাটিতে চেনা-জানা কন্ডিশনে আগে ব্যাট করে ১৮০-২০০ রান করার টার্গেট নিয়ে খেলতাম। আমরা সে পথে হাঁটিনি। আর পরের দিকে আগে ব্যাটিংয়ে নেমেও যাচ্ছেতাই ব্যাটিং করেছি। এখন বিশ্বকাপের মাঠে গিয়ে কি করবো? পারফরমেন্স কি হবে তা সহজেই অনুমেয় ।’

এমন হতাশার মাঝেও একটা পর্যায়ে গিয়ে নিজেকেই যেন প্রবোধ দিলেন এ বয়োজ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষক। প্রিয় শিষ্যদের সাহস জোগালেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেটারদের নিয়ে নানা সমালোচনার পাশাপাশি, ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ হচ্ছে। এমনকি গালমন্দও করা হচ্ছে। ইমরানের শঙ্কা, বিশ্বকাপে পারফরমেন্স খারাপ হলে ক্রিকেটাররা আরও গালমন্দ হজম করবে।

তাই কোচ হিসেবে ইমরান চান দল জায়গামত ভাল করুক। সে কারণেই মুখে এমন বক্তব্য, ‘আগে যাই হোক, আমি চাই মূল আসরে আমাদের প্লেয়াররা নিজেদের ফিরে পাক। প্লেয়াররা অনেক গালমন্দ হজম করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা তীর্যক কথা-বার্তা শুনছে। রাজ্যের সমালোচনা। আমরাও শুনছি রাস্তা ঘাটে। আমি চাই আমাদের প্লেয়াররা ভয়-ডরহীন ক্রিকেট খেলুক। ভাবুক আমাদের কোন কিছু হারানোর নেই। আমরা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভাল দল না। চ্যাম্পিয়ন হবো না। সেমিফাইনাল খেলার সামর্থও নেই। আমাদের অত চাপ নিয়ে খেলার কিছু নেই। খেলাটা উপভোগ করবো। নিজের সামর্থ্যের সেরাটা উপহার দিব। এটাই হওয়া উচিৎ আমাদের লক্ষ্য।’

এআরবি/আইএইচএস