বৈশ্বিক আসরে অবিচারের শিকার বাংলাদেশ
শুনতে খানিকটা খটকা লাগতে পারে। প্রশ্নও উঠতে পারে। তবে ক্রিকেটের বৈশ্বিক এবং মহাদেশীয় আসরে এখন ভারতের বড় প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় করে দিয়েছিলো বাংলাদেশ। সেই থেকে সাদা বলের ক্রিকেটের বৈশ্বিক মঞ্চে ভারতের কঠিন প্রতিপক্ষ টাইগাররা!
শুধু জাতীয় দলই নয়, বয়সভিত্তিক এমনকি নারী দলের লড়াইয়েও একই উত্তাপ। ২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ট্রফি জয়ের উৎসবেও ভারত ছিল প্রতিপক্ষ। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টেন-এর ম্যাচে বেঙ্গালুরুতে ৩ বলে ২ রানের সহজ টার্গেট পাড়ি দিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। হেরেছিলো ১ রানে।
২০১৮ সালের মার্চে কলোম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিদাহাস কাপ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে শেষ বলের থ্রিলারে হেরেছিলো বাংলাদেশ। সে বছর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের ফাইনালেও শেষ বল থ্রিলারে হেরেছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালে অ্যাডিলেডে আশা জাগিয়েও শেষ ওভারের থ্রিলারে ভারতের কাছে ৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
ভারতকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেলে যেন একটু বেশিই চাঙ্গা হয়ে ওঠে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বাংলাদেশকে হারাতে হলে ভারতের ১১ তারকার সহযোগী হতে হয় চার ম্যাচ অফিসিয়ালকেও (ম্যাচ রেফারি, ২ ফিল্ড আম্পায়ার, টিভি আম্পায়ার)। ২০১৫ থেকে ২০২২- মেলবোর্ন, বেঙ্গালুরু এবং অ্যাডিলেডে তিনটি বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
মেলবোর্নে বাংলাদেশের ৩০০তম ম্যাচের মাইলস্টোনের ম্যাচকে সামনে রেখে ফুরফুরে বাংলাদেশ দেখেছে ইতিহাস রচনার স্বপ্ন। ম্যাচের আগের দিন বিকেলে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে এসে পাকিস্তানী আম্পায়ার আলিম দার সঙ্গ দিয়েছিলেন। হাই ক্যাচ, লো ক্যাচ নিয়ে হাসি ঠাট্টাও করেছেন। অথচ, পরদিন ৯০ হাজার দর্শকের সামনে সেই আম্পায়ারই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। ৯০ রানের মাথায় রুবেলের যে ফুলটস বলে রোহিত ক্যাচ তুলে দেন ডিপ মিড উইকেটে, ইমরুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা শুরু করেছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে মেলবোর্ন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সমর্থকরাও উৎসবে ফেটে পড়েছিলেন তখন। এমন সময় স্কয়ারলেগে দাঁড়িয়ে থাকা আম্পায়ার আলিম দার হাত তুলে দিয়েছেন ‘নো’ কল। তার চোখে চোখ রেখে ইংলিশ আম্পায়ার ইয়ান গোল্ডেরও রায় ‘নো’।
টিভি রিপ্লেতে পরিষ্কার ছিল, ওটা বৈধ ডেলিভারি। আম্পায়ারের কৃপায় ৯০ রানে বেঁচে যাওয়া সেই রোহিত শর্মা বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন ওই ম্যাচে (১৩৭)। বেঁচে যাওয়ার পর যোগ করেছেন ৪৭ রান। সুরেশ রায়নার স্কোর যখন ১০, তখন মাশরাফির একটি ডেলিভারিতে পরিষ্কার এলবিডব্লু হয়েছিলেন তিনি। টিভি রিপ্লেতে বলের পিচিংয়ে তা পরিষ্কার। ওই বলটিকে আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ‘নো’ কল করে বঞ্চিত করেছেন মাশরাফিকে। আম্পায়ারের কৃপায় বেঁচে যাওয়া সেই সুরেশ রায়না ইনিংস টেনে নিয়েছেন ৬৩ পর্যন্ত।
আগের দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহকে ঝটপট (২১ রান) ফিরিয়ে দিতেও পক্ষপাতমূলক রায় দিতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান টিভি আম্পায়ার স্টিভ ডেভিসকে। মোহাম্মদ শামির শর্ট বল মাহমুদউল্লাহ পুল শটে ছক্কা মারতে চেয়েছেন। ছক্কা হয়েও গিয়েছিল। লং লেগের ফিল্ডার ধাওয়ান বাউন্ডারি রোপের উপর শুন্যে বলটি থামিয়ে যখন দেখেছেন পা বাউন্ডারি রোপ পেরিয়ে যাচ্ছে, তখন দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বাউন্ডারি রোপের ভেতরে বলটি তালুবন্দি করতে চেয়েছেন। করেছেনও। তবে টিভি রিপ্লে-তে বাউন্ডারি রোপ স্পর্শ করার দৃশ্য পরিষ্কার। বেনিফিট অব ডাউট দিতে পারতেন, প্রয়োজনে ক্যাচের সময়ে ধাওয়ানের পা’র পজিশন জুম করে দেখতে পারতেন টিভি আম্পায়ার। অথচ, তা না করে দশ সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি মাহমুদউল্লাহকে আউট রায়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ১০৯ রানে হারল, টাইগারদের থামিয়ে দেয়া হলো কোয়ার্টার ফাইনালে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে প্রতিটি অন্যায় সিদ্ধান্তই গেল বাংলাদেশের বিপক্ষে। এ যে ক্রিকেটেরই বিশাল এক লজ্জা! বিশাল এই লজ্জার ইতিহাস রচিত হলো বিশালাকায় মেলবোর্নে। ভারতের কাছে তাই শুধু বাংলাদেশ হারেনি, হেরেছে ক্রিকেটও! আম্পায়াররাই হারিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ও ক্রিকেট নামের ভদ্রলোকের খেলাটিকে!
মেলবোর্নে প্রেসবক্সের সঙ্গে লাগোয়া ভিভিআইপি বক্স। সেখানে বসে খেলা দেখেছেন আইসিসির সে সময়ের প্রেসিডেন্ট আ.হ.ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল), আইসিসির চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন এবং আইসিসির পরিচালকবৃন্দ। বাংলাদেশী বলেই মেলবোর্নে বাংলাদেশের বিপক্ষে পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং মেনে নিতে পারেননি আইসিসি সভাপতি লোটাস কামাল। ভিভিআইপি বক্স থেকে বেরিয়ে নির্লজ্জ পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের বিপক্ষে মুখ খুলেছেন।
আইসিসিকে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’ বলতেও দ্বিধা করেননি তিনি। মেলবোর্ন স্টেডিয়ামের খুব কাছাকাছি থাকা হোটেল ল্যাংহামের ভিআইপি স্যুটে উঠেছিলেন আইসিসি সভাপতি। তার রুমে বসে ভারতের গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়া সাক্ষাৎকারেও বাংলাদেশের বিপক্ষে অবিচারের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
২০১৫ সালের ১৯ মার্চের কোয়ার্টার ফাইনালে বাজে আম্পায়ারিংয়ের সমালোচনা করায় লোটাস কামাল পড়েছেন বিগ থ্রি'র রোষানলে। নিয়ম অনুযায়ী আইসিসি সভাপতির হাত দিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি দেয়ার রেওয়াজ ভাঙ্গা হয়েছে ওই আসরে। প্রকাশ্যে আইসিসির সমালোচনা করায় ফাইনালের পোডিয়ামে ডাকা হয়নি আইসিসি সভাপতিতে। গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আইসিসি চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন ট্রফি দিয়েছেন সেই আসরের বিশ্বকাপ জয়ী দল অস্ট্রেলিয়াকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও শ্রীনিবাসনের এই গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করার সমালোচনা করেছে। ২০১৫ সালে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে আলিম দার-ইয়ান গোল্ড এর পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় এবং গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে বিশ্বকাপ জয়ী দলকে চেয়ারম্যানের হাত দিয়ে ট্রফি দেয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে আইসিসি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করে জবাব দিয়েছিলেন আ.হ.ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল)।
পরের বছর ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও অবিচারের শিকার হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে ৬৩ বলে ১০ চার, ৫ ছক্কায় ১৬৩.৪৯ স্ট্রাইক রেটে ১০৩ রানের হার না মানা ইনিংসে সেই ইতিহাস রচনা করেছেন বাঁ-হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল। সেঞ্চুরিতে ইতিহাস রচনার দিনে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন তামিম।
তামিম ঝড়ে সুপার এইটে বাংলাদেশকে ঘিরে দারুণ কিছুর সম্ভাবনা দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। তবে বিগ থ্রি’র ষড়যন্ত্রে সুপার এইটে থামিয়ে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশকে। ধর্মশালা থেকে বাংলাদেশ দল পেয়েছে অশনি সংকেত। দারুণ ফর্মে থাকা পেস বোলার তাসকিন আহমেদ, মিতব্যয়ী বাঁ হাতি স্পিনার আরাফাত সানিকে ত্রুটিপূর্ণ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট করেছেন রিপোর্ট। হেড কোচ হাতুরুসিংহে, পেস বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক ম্যাচ রেফারির এই সন্দেহের তীব্র প্রতিবাদেও কাজ হয়নি।
ধর্মশালা থেকে চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দন বিশ্ববিদ্যালয়ে বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষার রিপোর্টেও রিপোর্টেড তারা। ওই পরীক্ষার এক সপ্তাহের মধ্যে দু'জনকে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ওই ঘটনাটা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উপর বইয়ে দিয়েছে ঝড়। বাংলাদেশের পারফরমেন্সে পড়েছে বিরূপ প্রভাব।
বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশের হৃদয়ে হয়েছে রক্তক্ষরণ।
পেটের পীড়ায় ইনফর্ম তামিমের অনুপস্থিতির খবর এমনিতেই বাড়িয়েছিল দুশ্চিন্তা। তার উপর টুর্নামেন্ট থেকে তাসকিন-আরাফাত সানির নিষেধাজ্ঞাদেশের খবর এলোমেলো করে দিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে আইসিসির এই নিষেধাজ্ঞা শুনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন গণমাধ্যমকে। আইসিসির এই অবিচারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হাতুরুসিংহে, পেস বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক। দেশজুড়ে ওই ঘটনায় হয়েছে বিক্ষোভ।
আইসিসির পরিচালক হয়েও বাংলাদেশের প্রতি অবিচার মুখ বুজে সহ্য করেননি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি। তিনিও আইসিসির এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, করেছেন আপীল। তবে ওই আপীলে মন গলেনি আইসিসির।
২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে ভালই চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। ৭ বছর আগে অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার উৎসবটা করতে পেরেছে বলেই এই ভেন্যুতে ফিরে একটু বেশিই চাঙ্গা ছিল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।
তবে ৭ বছর আগের সুখস্মৃতির পুনরাবৃত্তি হয়নি। বৃষ্টি হয়নি আর্শিবাদ। ভারতের ১৮৪/৬ স্কোরের জবাব দিতে যেয়ে বাংলাদেশের স্কোর যখন ৭ ওভার শেষে ৬০/০, তখন বৃষ্টি নামলে হাসি ফুটে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মুখে। ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডের হিসেবে বাংলাদেশ তখন ১৭ রান এগিয়ে।
বৃষ্টি আইনের হিসাবটা হাতে নিয়ে যখন আইসিসি দেখছে ভারতের অবশ্যম্ভাবী হার, তখন নিয়েছে অপকৌশলের আশ্রয়। যে করেই হোক বাংলাদেশকে পরিবর্তিত টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামাতে হবে। তাছাড়া ভারতের হার ঠেকানো যাচ্ছে না। তাই বৃষ্টির মধ্যেই চলেছে সুপার সপার দিয়ে মাঠ শুকানোর চেষ্টা! মাঠ না শুকিয়ে কেনো পুনরায় খেলা শুরু করা হয়েছে ?
এ নিয়ে ডাগ আউট থেকে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দুই ফিল্ড আম্পায়ার ক্রিস ব্রাউন এবং মারিয়াস এরাসমাসের সাথে তর্ক করছেন, প্রেসবক্সে বসে স্পষ্টভাবে তা দেখা গেছে। কিন্তু অন্যায়ভাবে টিপ টিপ বৃষ্টির মধ্যেই গড়িয়েছে পরিবর্তিত টার্গেটে ম্যাচটি। বৃষ্টিতে ৫২ মিনিট স্থগিত থাকার পর ১৬ ওভারে ১৫১ রানের টার্গেটে বাংলাদেশকে মাঠে পাঠিয়ে ভারতকে উৎসাহিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৫৪ বলে ৮৫ রানের টার্গেট পাড়ি দিতে পারেনি বাংলাদেশ। ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে হেরেছে ৫ রানে।
বৃষ্টির পর অশ্বিনের দ্বিতীয় বলে দুই রান নিতে যেয়ে ডিপ মিড উইকেট থেকে লোকেশ রাহুলের ডাইরেক্ট থ্রো-তে লিটন রান আউট হলে (২৭ বলে ৭ চার, ৩ ছক্কায় ৬০) দায়িত্বটা নিতে পারেনি অন্য কেউ। স্যাতসেঁতে পিচে পা পিছলে তার রান আউটটাই রোহিত শর্মাদের দিয়েছে স্বস্তি। হার্দিককে ফাইন লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে পরের ওভারে সামী’র বলে একই পজিশনে দিয়েছেন ক্যাচ (২৫ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ২১)।
এডিলেডে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশ ভারতের কাছে হেরে গেছে ৫ রানে। তবে গত বুধবার এডিলেডে বাংলাদেশের হার নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ আম্পায়ারিং। ভেজা মাঠে পুনরায় ক্রিকেট ম্যাচ মাঠে গড়ানো নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
এই ম্যাচে ‘ফেক ফিল্ডিং’য়ের দায়ে ভারতের স্কোর থেকে ৫ রান কেটে নিতে পারতো আইসিসি। এমন কিছু করলেও বাংলাদেশ জিতে যেতো সেই ম্যাচে। তবে কোহলির মতো ফিল্ডারের এমন কাণ্ড করার আম্পায়ারদের কৃপায় পরও বেঁচে গেছে ভারত।
খেলার ৭ম ওভারে ভারতের স্পিনার আসকার প্যাটেলের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে খেলেছিলেন লিটন। ফিল্ডার আর্শদীপ সিং-এর থ্রো উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিকের গ্লাভসে পৌঁছানোর আগেই ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের ফিল্ডার বিরাট কোহলি শ্যাডো থ্রো করেন।
২০১৭ সালে আইসিসি প্রণীত পেনাল্টি ল’ অনুযায়ী কোনো ফিল্ডার ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বা কাজ দিয়ে ব্যাটারকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করলে তা আনফেয়ার প্লে বলে বিবেচ্য হবে। বলটি হবে ‘ডেড’ এবং ৫টি পেনাল্টি রান পাবে ব্যাটিং সাইড। তবে ফিল্ডারের ফেক থ্রো’র ব্যাপারে রায় দেয়ার এখতিয়ার ফিল্ড আম্পায়ারদের।
ব্যাপারটি ওপেনিং ব্যাটার শান্ত'র চোখ এড়ায়নি। শান্ত তাৎক্ষণিকভাবে ‘ফেক ফিল্ডিং’এর অভিযোগ করেন আম্পায়ারের কাছে। টিভি রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা গেছে তা। অথচ, শান্ত’র অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে টিভি আম্পায়ারের শরনাপন্ন হননি ফিল্ড আম্পায়ার। চালিয়ে গেছেন খেলা।
বৈশ্বিক আসরে বার বার অবিচারের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এ নিয়ে যাদের সোচ্চার ভূমিকা রাখা দরকার, তারা কি সেই ভূমিকা রাখছেন ? ক্রিকেট ডিপ্লোমেসিতে কী আমরা পিছিয়ে পড়ছি না ?
আইএইচএস/