ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

সোমবার শুরু সুপার লিগ

প্রথম তিন ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৯:৩২ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২৪

সুপার লিগ, নামের মধ্যেই একটা সুপার ভাব আছে। তাই সব সময়ই ভাবা হয় সুপার লিগ মানেই ‘সুপার লড়াইা।’ জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বীতা; কিন্তু এবারের প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগে সেই সুপার লড়াইয়ের সম্ভাবনা খুব কম।

এক কথায় আগামীকাল সোমবার, ২২ এপ্রিল থেকে যে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে সেরা ৬ দলের লড়াই শুরু হবে, তার আকর্ষণ খুব কম। প্রতিদ্বন্দ্বীতার সম্ভাবনাও নেই তেমন।

সোমবার সুপার লিগের প্রথম দিন শীর্ষে থাকা আবাহনী খেলবে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন এবং জাকির হাসানের দল প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে। খেলাটি হবে শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। অন্যদিকে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে হবে মোহামেডান আর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের লড়াই। বিকেএসপি ৩ নম্বর মাঠে মোকাবিলা হবে শাইন পুকুর ও গাজী গ্রুপের।

এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে আবাহনীর একচ্ছত্র দাপট। পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরে নাজমুল হোসেন শান্ত, নাইম শেখ, এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস, জাকের আলী অনিক, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ও তানভির, রাকিবুলের গড়া আবাহনী।

প্রথম লিগেই নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর প্রায় ধরা ছোয়ার বাইরে চলে গেছে আকাশী হলুদরা। প্রথম লিগে ১১ খেলার সবকটা জেতা আবাহনীর পয়েন্ট ২২। নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী শাইন পুকুর, শেখ জামাল ধানমন্ডি ও মোহামেডানের পয়েন্ট ১১ খেলায় ১৬ করে। সবার ওপরে থাকা আবাহনীর সাথে ওই তিন দলের পয়েন্ট পার্থক্য অনেক; ৬।

আর সুপার সিক্সে পা রাখা অপর দুই দল প্রাইম ব্যাংক ও গাজী গ্রুপের পয়েন্ট আরও কম; ১১ ম্যাচে ১৪ করে। অর্থাৎ আবাহনী প্রথম লিগেই শিরোপার পথে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। এখন সুপার লিগে প্রথম ২ ম্যাচ জিতলেই মোটামুটি শিরোপার গন্ধ পাবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। আর প্রথম ৩ ম্যাচ জিতলে ২ ম্যাচ আগেই শিরোপা হয়ে যাবে আকাশী হলুদদের।

মোট কথা, অতিনাটকীয় কিছু না ঘটলে আর আবাহনী অস্বাভাবিক ও অবিশ্বাস্য রকমের খারাপ না খেললে অন্য কারো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। শুধু পয়েন্টই এগিয়ে নয়, মাঠের পারফরমেন্সকে মানদণ্ড ধরলেও আবাহনী সবার চেয়ে এগিয়ে।

আকাশী শিবিরের ব্যাটার- নাইম শেখ, এনামুল হক বিজয়, জাকের আলী অনিকরা ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলেছেন। পেসার তাসকিন, শরিফুল, সাইফউদ্দীন আর বাঁ-হাতি স্পিনার তানভির ইসলাম ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করছেন। জাতীয় দলের খেলা শেষে দলে ফিরে শতরান করে দলের ব্যাটিং শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সুপার লিগে লিটন দাসও খেলবেন। সব মিলিয়ে আবাহনী সুপার লিগে মাঠে নামবে পূর্ণ শক্তিতে বলিয়ান হয়ে, নব উদ্যমে।

কাগজে-কলমের হিসেবে যে দল দুটি আবাহনীর জন্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারতো, সেই প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডান নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারেনি। তামিম ইকবাল, পারভেজ ইমন, জাকির হাসান, মোহাম্মদ মিঠুন, হাসান মাহমুদ, নাজমুল অপু আর শেখ মেহদির গড়া প্রাইম ব্যাংক বেশ শক্তিশালী।

এর বাইরেও আছেন সৌম্য সরকার ও তাইজুল ইসলাম। দুজনই ইনজুরির কারণে নিয়মিত মাঠে নামতে পারেননি। এখন ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরার লড়াই করছেন তাইজুল ও সৌম্য।

অন্যদিকে ইমরুল কায়েস, রনি তালুকদার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম রাব্বির মত প্রতিষ্ঠিত পারফরমারে সাজানো মোহামেডানও দল হয়ে খেলতে পারেনি। শুরুতে মাহিদুল ইসলাম অংকন আর কামরুল ইসলাম রাব্বির একক নৈপুণ্যের ওপর ভর করে বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতেছে সাদা কালোরা।

আর প্রথম লিগের শেষ দিকে এসে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও নিজেকে ফিরে পেয়ে দল টেনে নিচ্ছেন। পেসার আবু হায়দার রনিও বোলিংয়ের পাশাপাশি মোহামেডানের ত্রাণকর্তার ভূমিকা নিয়েছেন একাধিক ম্যাচে; কিন্তু সামগ্রিকভাবে মোহামেডান দল হয়ে খেলতে পারেনি। সুপার লিগে ব্যক্তি নির্ভরতা কাটিয়ে দল হিসেবে খেলতে না পারলে মোহামেডানের পক্ষে প্রথম ৩ দলের মধ্যে থাকা কঠিন হবে।

সাকিব আল হাসান চলে যাওয়ার পর খাপছাড়া হয়ে পড়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। সুপার লিগে সাকিব খেলবেন কি না, তাও নিশ্চিত নয়। সাকিবের সাথে শেখ জামাল ম্যানেজমেন্টের যোগাযোগ কতটা নিবিঢ়, তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। মাঝে আবাহনীর সাথে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেরদিন কোচ সোহেল ইসলামকে না জানিয়ে সাকিব ওমরাহ করতে চলে গিয়েছিলেন। ঈদ করেছেন স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে আমেরিকায়।
এবারের সুপার লিগে সাকিব আদৌ খেলবেন কি না? তা নিশ্চিত নয়। একটি সূত্র জানিয়েছে সাকিব দেশে ফিরবেন ২৬ এপ্রিল। কাজেই অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও ওপেনার সাইফ হাসানই ভরসা শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের।

তারচেয়ে বরং একদম তরুণদের দল শাইন পুকুর ও গাজী গ্রুপ বেশ নজরকাড়া ক্রিকেট খেলছে। দল দুটিতে সে অর্থে কোন তারকা নেই, কিন্তু তরুণরা নিজেদের উজার করে খেলছেন। তানজিদ তামিম, জিসান আলম, রিশাদ হোসেন, আর ফাস্টবোলার নাহিদ রানা প্রায় খেলায় ভাল করে শাইনপুকুরকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।

গাজী গ্রুপেও আছেন ৩ সম্ভাবনাময় তরুণ; পেসার রুয়েল মিয়া, হাবিবুর রহমান সোহান ও আনিসুল ইসলাম ইমন। রুয়েল মিয়া প্রথম লিগে ২৫ উইকেট শিকার করে উইকেট শিকারে সবার ওপরে। দুই টপ অর্ডার হাবিবুর রহমান সোহান ও আনিসুল ইসলাম ইমনও হাত খুলে খেলে প্রতিপক্ষ বোলিংকে এলোমেলো করে দিচ্ছেন।

মূল লড়াইয়ে না থাকলেও গাজী গ্রুপ আর শাইন পুকুর সুপার লিগে আরও চমক দেখাতে পারে কিনা, সেটাই দেখার।

এআরবি/আইএইচএস/