টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে যে আইন চায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া
সাম্প্রতিক কয়েক বছর ধরেই টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আগামীতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার ভিড়ে টেস্ট ক্রিকেট হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণার পর এই আলোচনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। কিউইদের বিপক্ষে ৭ নতুন মুখ নিয়ে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অপরদিকে দেশটির বড় তারকা ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি এসএ২০ খেলার জন্য দেশেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলে আগামীতে টেস্ট ক্রিকেটে আশঙ্কার ‘অচলাবস্থা’ কাটাতে নতুন কোনো কৌশল নিয়ে ভাবতে হচ্ছে দীর্ঘ ফরম্যাটের খেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্রিকেট বিশ্লেষকদের।
টেস্ট ক্রিকেটকে শক্তিশালী করতে নতুন আইন করার কথা জানিয়েছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রধান নির্বাহী নিক হকলি। তিনি জানিয়েছেন, আগামীতে টেস্ট সিরিজে সর্বনিম্ন তিনটি ম্যাচ রাখার কথা।
বর্তমানে আইসিসির বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশ সিরিজ আয়োজন করলে তাদের কমপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে হবে। এই নিয়ম সংশোধন করে, সেখানে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলাকে বাধ্যমূলক করার পরামর্শই দিয়েছেন হকলি।
অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় রেডিও স্টেশন ‘সেন’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হকলি বলেন, ‘কমপক্ষে তিন-ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলাকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আমরা এটিকেই সমর্থন করবো। আমি মনে করি, এফটিপি (ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রামস) তে এটি কার্যকর করা হবে। একইসাথে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সঙ্গেও যুক্ত করা হবে এবং সর্বনিম্ন তিন-ম্যাচের টেস্ট সিরিজকে সমর্থন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারপর সম্ভাব্য সর্বোত্তম যে কৌশল অবলম্বন করতে পারি, সেটি হলো- যে দেশগুলির জন্য ঘরোয়া টে-টোয়েন্টি ক্রিকেট আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্স, সেসব দেশগুলোর টেস্ট ক্রিকেটকে ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলার শিডিউলের সঙ্গে গুলিয়ে না ফেলা। যেন প্রতিটি দেশ আন্তর্জাতিক খেলায়, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটকে অগ্রাধিকার দেয়।’
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট এটি বুঝতে পেরেছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এসএ২০ এর বড় প্রভাব রয়েছে। কারণ, এই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট দেশটির আয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজও বাতিল করেছে।
হকলি আরও বলেন, ‘এটি সকলের জন্য একটি সতর্ক বার্তা। তবে নতুন শিশু ও নতুন মানুষদের ক্রিকেটে নিয়ে আসার যে দক্ষতা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দেখিয়েছে, সেটিকে কোনোভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তবে দুই ফরম্যাটের মধ্যেই পারস্পরিক সহযোগিতা থাকতে হবে।’
হকলি আত্মবিশ্বাসী যে, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশগুলোও টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছে। তবে তিনিও স্বীকার করেন, অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় টেস্ট ক্রিকেট সত্যিকার অর্থেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
আইএইচএস/জিকেএস