ওই নতুনের কেতন ওড়ে
অধিনায়ক সাকিবের তুরুপের তাস হতে পারেন তাওহিদ হৃদয়
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই’- বাংলাদেশের ক্রিকেটে উদয়ের পথে আশার বাণী শুনিয়ে অনেক ক্রিকেটারেরই আগমণ ঘটে। কিন্তু ক’জনই বা সেই আগমণধ্বনি ধরে রাখতে পারেন? তাওহিদ হৃদয় সম্পর্কে এখনও কোনো চূড়ান্ত উপসংহারে পৌঁছানোর সময় আসেনি।
তবে উদয়ের পথে পায়ের যে চাপ রেখেছেন তরুণ ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয়, সেই চাপ অনেকটাই গভীর মনে হচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে, লম্বা রেসের ঘোড়া হতেই ক্রিকেটাঙ্গনে পথচলা শুরু করেছেন তিনি। অন্তত গত বিপিএল থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত তেমনই বোঝা যাচ্ছে হৃদয়কে নিয়ে।
বয়সটা খুব বেশি নয়, মাত্র ২২। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চমক দেখিয়ে চলেছেন বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের তুরুপের তাস হতে পারেন ডান হাতি এ ব্যাটার।
২০০০ সালে বগুড়াতে জম্ম হৃদয়ের। ডানহাতি এ ব্যাটার যে কোনো বোলিং আক্রমণকে ছারখার করে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সে প্রমাণ রেখে চলেছেন।
এ বছরের শুরুতে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে নেমে স্বপ্নের মতো এক ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। ৯২ রানের ঝলমেল সেই ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন হারিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি জাতীয় দলে আসেননি। বরং রাজত্ব করার জন্যই এসেছেন। এখনও ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছেন হৃদয়। ব্যাট হাতে ভক্তদের হৃদয় জয় এবং প্রতিপক্ষের সমীহ আদায় করে এখন বিশ্বকাপ মঞ্চে তাওহিদ।
গত মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসের মাধ্যমে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছিলেন হৃদয়। কোনো বাংলাদেশি ব্যাটারের অভিষেক ম্যাচে ওটাই ছিল সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
চতুর্থ উইকেটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সমানতালে লড়েছিলেন। ক্যারিয়ারে এখনো সেঞ্চুরির দেখা পাননি, তবে সে সামর্থ্য যে ভালোভাবেই আছে এবারের এশিয়া কাপে তার প্রমাণ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮২ রানের ঝলমলে এক ইনিংসে খেলে। পাশাপাশি ভারতের শক্তিশালী বোলিং লাইনকেও বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছিলেন তিনি। পরের ম্যাচেই স্কোরবোর্ডে জমা করেছিলেন ৫৪ রান।
মিডল অর্ডারে একাধিক পজিশনে ব্যাট করায় দক্ষ তাওহিদ হৃদয়। তবে তার সবেচেয়ে পছন্দের স্থান পাঁচ নম্বর। দলের প্রয়োজনে ছয় নম্বরে ব্যাট হাতে নামতে পারেন। পাঁচ নম্বর পজিশনে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন। ১০ ম্যাচে ৩৪৮ রান করেছেন। আর ছয় নম্বর পজিশনে খেলেছেন দুই ম্যাচ।
দলকে টেনে নেওয়ার সার্মথ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও দেখিয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজী দলের সদস্য তাওহিদ হৃদয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যখন প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন, তখন তিনি তাকে ডাবলে রূপ দিয়েছিলেন।
ঘরোয়া ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট, বিপিএলে সিলেট সিক্সার্সের খেলোয়াড় হৃদয়। খেলেছেন লঙ্কান ক্রিকেট লিগেও (এলপিএল)। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি এশিয়া কাপের দারুণ ব্যাটিং তাকে বিশ্বকাপেও জ্বলে উঠতে সহায়তা করবে- এটাই প্রত্যাশা সবার।
আইএইচএস/