অবশেষে সেঞ্চুরি জুটি ভাঙলেন এবাদত
শুরুর সাফল্যের পর উইকেট ফেলতেই পারছিল না বাংলাদেশ। পল স্টারলিং আর অ্যান্ডি বালবির্নি মিলে গড়ে ফেলেন সেঞ্চুরি জুটি। দুজনই পেয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না।
অবশেষে ইনিংসের ২৭তম ওভারে এবাদত হোসেন ভেঙেছেন প্রতিরোধ। বালবির্নিকে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান টাইগার পেসার। ৭৮ বলে ৬ বাউন্ডারিতে বালবির্নি করেন ৫৩ রান।
আয়ারল্যান্ডের লক্ষ্য ২৭৫ রান। তামিম ইকবাল দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণে আনেন হাসান মাহমুদ আর মোস্তাফিজুর রহমানকে। শুরু থেকেই তারা চাপে রাখেন আয়ারল্যান্ডকে। প্রথম ৫ ওভারে ১৭ রান তুলতে পারেন আইরিশ দুই ওপেনার পল স্টারলিং আর স্টিফেন দোহানি।
ষষ্ঠ ওভারে মোস্তাফিজের আগাত। পুশ করতে গিয়ে আউটসাইডেজ হয়ে স্লিপে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন দোহেনি (৪)। বেশ চাপেই পড়ে গিয়েছিল আইরিশরা।
তবে পল স্টারলিং আর অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নির জুটিতে সেই চাপ কাটিয়ে উঠে আয়ারল্যান্ড। তারা ১২৫ বলে গড়েন ১০৯ রানের জুটি।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৬.৩ ওভার শেষে আইরিশদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১২৬ রান। স্টারলিং ৫৬ আর হ্যারি টেক্টর শূন্য রানে অপরাজিত আছেন।
এর আগে ৪৬তম ওভারে বাংলাদেশের ৫ উইকেটে ছিল ২৬১ রান। তিনশো রানের পথেই ছিল টাইগাররা। কিন্তু আর ১৩ রান তুলতেই শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে পুঁজিটা প্রত্যাশিত হয়নি তামিম ইকবালের দলের।
ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে ২৭৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। তামিম ৬৯ আর মুশফিক করেন ৪৫ রান। মেহেদি মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৩৭। ৩৫ করে আউট হন লিটন দাস আর নাজমুল হোসেন শান্ত।
চেমসফোর্ডে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নি। দেখেশুনে শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম আর রনি তালুকদার।
যদিও আইরিশরা বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেছে বাংলাদেশি দুই ওপেনারকে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উইকেট পাওয়ার সুযোগও তৈরি করেন জশ লিটল। খোঁচা দিয়ে তামিম দ্বিতীয় স্লিপে দেন সহজ ক্যাচ। কিন্তু বালবির্নি সেই ক্যাচ ফেলে দেন। ব্যক্তিগত ১ রানে জীবন পান টাইগার অধিনায়ক।
তবে তার সঙ্গী টিকতে পারেননি। পরের ওভারেই মার্ক এডায়ারকে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন রনি। ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে শট খেলেন, বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। ১৪ বলে ৪ করে সাজঘরে ফেরেন রনি। ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
রনি তালুকদার অভিষেকে সুবিধা করতে পারলেন না। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত সেই চাপ অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছিলেন তামিম ইকবালের সঙ্গে জুটিতে।
৪৪ বলে ৪৯ রানের মারকুটে জুটি গড়েন তারা। কিন্তু সেট হয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন শান্ত। উইল ইয়ংকের বলটি খোঁচা মেরে স্লিপে ধরা পড়েছেন এই বাঁহাতি। ৩২ বলে ৭ বাউন্ডারিতে শান্ত করেন ৩৫ রান। ৬৭ রানে পড়ে টাইগারদের দ্বিতীয় উইকেট।
এরপর তামিম ইকবাল আর লিটন দাস গড়েন জুটি। তাদের ৭৬ বলে ৬০ রানের জুটিটি অবশেষে ভাঙে লিটন আউট হলে। ম্যাকব্রিনের বলে মিডঅফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। ৩৯ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় লিটন করেন ৩৫ রান।
তাওহিদ হৃদয় ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৬ বলে ১৩ করে ডকরেলের বলে বোল্ড হন এই তরুণ। ১৫৯ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা।
গত ৯ ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি পাননি তামিম। খুব যে খারাপ ব্যাটিং করেছেন, এমন নয়। বেশিরভাগ ম্যাচেই সেট হয়ে আউট হয়েছেন। অবশেষে তামিমের 'কুফা' কাটলো। পেলেন ফিফটির দেখা।
দেখেশুনে খেলে হাফসেঞ্চুরি করেন তামিম, ৬১ বলে। ওয়ানডেতে এটি তার ৫৬তম ফিফটি। বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই খেলছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৬৯ রানে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক। তার উইকেটটিও নেন ডকরেল। ৮২ বলের ইনিংসে তামিম বাউন্ডারি হাঁকান ৬টি।
তামিম ইকবাল উইকেটে থাকা পর্যন্ত বেশ স্বস্তিতেই ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তিনি ফিফটি করে আউট হয়ে যাওয়ায় ফের চাপে পড়ে টাইগাররা। ১৮৬ রানে হারায় ৫ উইকেট।
মুশফিকুর রহিম আর মেহেদি হাসান মিরাজ মিলে সেই চাপ কাটিয়ে উঠেন। ৭২ বলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৬তম ওভারে ম্যাকব্রিনকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন মুশফিক, হাফসেঞ্চুরির কাছে এসে। ৫৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে মুশফিক হাঁকান তিনটি চার আর একটি ছক্কা।
পরের ওভারেই মেহেদি মিরাজকেও হারায় টাইগাররা। ৩৯ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩৭ করে মার্ক এডায়ারের শিকার হন এই অলরাউন্ডার। এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ।
আইরিশ পেসার মার্ক এডায়ার ৪০ রানে নিয়েছেন ৪টি উইকেট।
এমএমআর/এএসএম