দুই বলে দুই উইকেট, লড়াইয়ে ফিরলো বাংলাদেশ
প্রথম ওভারেই উইকেট গিয়েছিল। কিন্তু শুরুর সেই চাপটা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ডেভিড মালান আর জস বাটলার বড় এক জুটি গড়ে চাপ সরিয়ে ফেলেন।
অবশেষে ১৪তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান আঘাত হেনেছেন। ভেঙেছেন ৭৬ বলে ৯৫ রানের ঝোড়ো জুটি। ৪৭ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৫৩ রান করে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হয়েছেন মালান।
পরের বলে আরও একটি উইকেট। এবার মেহেদি হাসান মিরাজের সরাসরি থ্রোতে রানআউট আরেক সেট ব্যাটার জস বাটলার (৩১ বলে ৪০)।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৩.২ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০১ রান। মঈন আলি ১ আর বেন ডাকেট ১ রানে অপরাজিত আছেন।
বিপিএলে দারুণ খেলে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন তরুণ বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ। তাকেই প্রথম ওভারটা করার দায়িত্ব দিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
তানভীর অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানটাও দিলেন প্রথম ওভারেই। ইনিংসের তৃতীয় বলে তিনি স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন ফিল সল্টকে (০)। ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।
পরের ওভারেই আরেকটি উইকেট পড়তে পারতো ইংল্যান্ডের। তাসকিন আহমেদের বল ডেভিড মালানের প্যাডে লাগলে আঙুল তুলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। মালান রিভিউ নেন।
রিপ্লেতে ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না, বল তার ব্যাটে লেগেছে কিনা। তবে তৃতীয় আম্পায়ার নটআউট ঘোষণা করেন মালানকে। ৬ রানে বেঁচে যান ইংলিশ ওপেনার।
এর আগে ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের ছিল ১ উইকেটে ১৩১। হাতে ৯ উইকেট। মনে হচ্ছিল, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবার বড়সড় সংগ্রহ গড়তে যাচ্ছে টাইগাররা। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে হতাশার ব্যাটিং উপহার দিলো সাকিব আল হাসানের দল।
মিরপুর শেরে বাংলায় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র ২৭ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২ উইকেটে স্বাগতিকদের ইনিংস থেমেছে ১৫৮ রানেই।
সিরিজ আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে। তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি তাই বাংলাদেশের জন্য হোয়াইটয়াশ মিশন পূরণের। মিরপুর শেরে বাংলায় গুরুত্বহীন এই ম্যাচে টসভাগ্য গেছে ইংল্যান্ডের পক্ষে।
টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। তবে দুরন্ত ছন্দে থাকা বাংলাদেশ সিরিজের শেষ ম্যাচেও করেছে উড়ন্ত সূচনা। লিটন দাস আর রনি তালুকদারের ব্যাটে চড়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বিনা উইকেটেই ৪৬ রান তুলে ফেলে টাইগাররা।
রনি তালুকদার অবশ্য পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে একটা সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু জোফরা আর্চারের বলে শর্ট থার্ড ম্যানে তার সহজ ক্যাচ ফেলে দেন রেহান আহমেদ। ১৭ রানে জীবন পান রনি।
তবে সেই জীবন কাজে লাগাতে পারেননি রনি। ব্যক্তিগত সংগ্রহে আর ৭ রান যোগ করেই আউট হয়ে যান এই ওপেনার (২২ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৪)। আদিল রশিদ বল করে নিজেই নেন ক্যাচ।
দ্বিতীয় উইকেটে লিটন আর নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে রীতিমত ঝড় বইয়ে দেন ইংলিশদের ওপর। ৫৭ বলে ৮৪ রানের জুটি গড়েন তারা।
লিটন দাসের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খারাপ গেছে। খারাপ গেছে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিও। ইংলিশদের বিপক্ষে পাঁচবারের মধ্যে চারবারই লিটন আউট হয়েছেন দশের নিচে। একবার দশ পার করলেও ফেরেন ১২ রানে।
অবশেষে পাঁচবার হোঁচটের পর ইংলিশ পরীক্ষায় পাস করলেন লিটন। পেলেন ফিফটির দেখা। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে লিটনের নবম হাফসেঞ্চুরির ইনিংসটি থেমেছে ক্যারিয়ারসেরা করেই।
ক্রিস জর্ডানের বলে পুল খেলতে গিয়ে ফিল সল্টকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। ৫৭ বলে গড়া তার ৭৩ রানের ইনিংসটিতে ছিল ১০টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কার মার।
এরপর সাকিব আল হাসান আর শান্তর জুটিটি তেমন কিছু করতে পারেনি। ১৮ বলে তারা যোগ করেন ১৯ রান। শান্ত ৩৬ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৪৭ রানে। ৬ বলে ৪ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব।
এমএমআর/এমএস