কতটা বদলেছেন হাথুরু?
তিনি এসেছেন, নতুন করে কাজ শুরু করেছেন। হয়ে গেলো প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনও। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এর আগে বছর তিনেক বাংলাদেশ দলের হেড কোচ ছিলেন। তিনি এ দেশকে চেনেন, এ দেশের মানুষও তার সম্পর্কে কমবেশি জানেন।
হাথুরু কেমন? রগচটা স্বভাবের, সত্যটা মুখের ওপর বলে দিতে ভয় করেন না। কড়া হেডমাস্টার চরিত্রের জন্য তাকে নিয়ে যেমন সমালোচনা আছে, আলাদা একটা গ্রহণযোগ্যতাও আছে।
সেই হাথুরু কি এখন বদলেছেন? প্রথম মেয়াদে কোচের দায়িত্ব ছেড়েছেন সেই ২০১৭ সালে। মাঝে কেটে গেছে পাঁচ বছরের বেশি সময়। লঙ্কান এই কোচের মনোভাব, আচার-আচরণ কতটা বদলেছে?
প্রথম দিনের সংবাদ সম্মেলনে একটা জিনিস পরিষ্কার। হাথুরুর চেহারায় বয়সের ছাপ পড়েছে কেবল, বাকি সব কিছু প্রায় আগের মতোই আছে। বিশেষ করে তার ‘চাঁছাছোলা’ স্বভাব আর ‘থোড়াই কেয়ার’ ভাব।
যদিও প্রথম দিনের সংবাদ সম্মেলনে আগের তুলনায় একটু সহনশীল আর ধীরস্থির মনে হলো তাকে। তবে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনেকটাই আগের চেহারায় দেখা গেছে তাকে।
কে কী ভাবলো, কে কী মনোভাব পোষণ করলো, সে সব নিয়ে মাথাব্যথা নেই হাথুরুর। নিজে যা বিশ্বাস করেন, মুখের ওপর বলে দেন। তেমনটাই দেখা গেলো প্রথম দিনের সংবাদ সম্মেলনে।
সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে এক পর্যায়ে হাথুরু তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় কড়া গলায় বললেন, ‘ফালতু প্রশ্ন।’
আবার মাশরাফিকে ফেরানো হবে কিনা? এমন প্রশ্নে তির্যক জবাব, ‘(কোথায় ফেরানো হবে) নির্বাচনের জন্য? আমার মনে হয়, সে আর খেলছে না।’
একইভাবে সাকিবের কমিটমেন্টের অভাব আছে বলেছিলেন, এমন প্রসঙ্গ আসতেই হাথুরুর পরিষ্কার জবাব, ‘এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। কখনো এমন চিন্তাও করিনি, বলিওনি।’
আরেক সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে শুরু হবে এবার হাথুরুর এবারের অ্যাসাইনমেন্ট। কিসে জোর দেবেন, স্পিন নাকি পেসে?
হাথুরু উল্টো সেই সাংবাদিককে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘আমি আপনাকেই জিজ্ঞেস করছি, হোম অ্যাডভান্টেজ কি? নিউজিল্যান্ডে গেলে আমাদের কেমন উইকেট দেওয়া হয়? অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডে গেলে তারা কী করে? ভারত ঘরের মাঠে কী করে?’
‘যদি আপনার মিসাইল না থাকে, আপনি কি দিয়ে ফাইট করবেন? আমাদের গেরিলা যুদ্ধ করতে হবে, তাই না? ছোট বন্দুক নিয়ে তো আমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারব না। যদি আমাদের কাছে গোলাবারুদ না থাকে, আমরা পারব?’
হাথুরু তার বারুদমাখা জবাবে বুঝিয়ে দিলেন, একটা জায়গায় তিনি আগের মতোই আছেন। তাকে যে কোনো প্রশ্ন করতে গেলে ভেবেচিন্তেই করতে হবে। কে কী ভাবলো, তিনি যে এসবের ধার ধারেন না!
এমএমআর/জিকেএস