ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

সাকিবের সঙ্গে একমত মাশরাফি, বিপিএল নিয়ে করলেন বিস্ফোরক মন্তব্য

ক্রীড়া প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০২৩

আগের দিন বিপিএলে বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিস্ফোরক মন্তব্য করে তিনি বলেছিলেন, দায়িত্ব পেলেন দুই মাসের মধ্যে সব ঠিক করে ফেলবেন। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন দেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও। তিনিও মনে করেন, এবারের বিপিএল অনেকটাই বিশৃঙ্খল। ইচ্ছা করলে এ টুর্নামেন্টকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যেতো।

এবার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মাশরাফি বিন মর্তুজাও। বিপিএল শুরুর আগেরদিন মিরপুরে অনুশীলন করতে এসে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মিডিয়ার সামনে। সেখানেই নানা প্রশ্নের জবাবে সাকিবের সঙ্গে একমত পোষণ করেন মাশরাফি।

মাশরাফির কাছে প্রশ্ন করা হয়, ‘সাকিবের মন্তব্য নিয়ে, বিপিএলের অনেক অসঙ্গতি নিয়ে কি বলবেন? ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এর থেকেও কী সুশৃঙ্খল?

জবাবে মাশরাফি বলেন, ‘ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। আমরা ক্যারিয়ারের একদম ছোট থেকে দেখে এসেছি, ঢাকা লিগকে খেলোয়াড়রা অনেক গুরুত্ব দেয়। বিপিএল তো একটা অর্গানাইজেশনের, অর্গানাইজ করার ব্যাপার থাকে।’

বিপিএলের নির্দিষ্ট একটা ক্যালেন্ডার থাকা উচিত বলে মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘ক্যালেন্ডার ইয়ারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালেন্ডারে কখন শুরু হবে, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যতগুলো পয়েন্ট বললেন, এর ভেতরে খেলোয়াড় আসা-যাওয়ার (অ্যাভেইলেবল) বিষয়টা যুক্ত। ক্যালেন্ডার ইয়ার সেট করলে হয় কি, ভিন্ন দেশের খেলোয়াড়রা জানে- কোথায় যাওয়া যাবে, কোন লিগে খেলা যাবে। বিষয়টা তাদের জন্য সুইটেবল হবে। এখন পিএসএল, ইউএই, দক্ষিণ আফ্রিকান লিগের সঙ্গে একসঙ্গে হয়ে যায়, এটা তো একটা ঝামেলা।’

বিপিএলে বিশৃঙ্খলা নিয়ে সরব হয়েছেন সাকিব। তার সঙ্গে একমত পোষণ করে মাশরাফিও বলেন, ‘জার্সির কথা বললেন। জার্সির লোগো যেটা (যে লোগো ব্যবহার করা হয়), সেখানে স্পন্সরশিপ এবং মালিকানার বিষয়টা থাকে। এই একটা জায়গায় বিশাল শূন্যস্থান থেকে যায়। আরেকটা জিনিস, অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বেনিফিট পায় বোর্ড থেকে। প্রফিট ভাগাভাগির একটা বেনিফিটিং হয়। এখানে সেটা যেহেতু হয় না, তখন আসলে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ থাকে যে, স্পন্সরশিপ থেকে সে অর্থটা বের করে আনা। এখানে একটা শূন্যস্থান (গ্যাপ) থেকেই যায়।’

আরেকটু কাজ করলে কিংবা মনোযোগ দিলে কাজটা ভালো হতো। এটা জানিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আরেকটু অর্গানাইজ করতে পারলে ভালোই হয়। কিন্তু সত্যি বলতে, বাংলাদেশে ওই পরিমাণ মার্কেট ভ্যালুও নেই। এ ধরনের টুর্নামেন্টের জন্য যে পরিমাণ মার্কেট ভ্যালু থাকার প্রয়োজন, ওই ভ্যালুও নেই। আমার কাছে মনে হয় যে, এক পর্যায়ে জোর করে আসা হয় বা আনা হয়। মার্কেট ভ্যালু থাকলে হয়তো আসার ব্যাপার থাকত। আইপিএলে গ্যালারির (টিকিট বিক্রির) টাকায় হোম ফিফটি-ফিফটি করে। এরকম অনেক কিছু বিষয় আছে। এগুলো করলে হয় তো আরেকটু জমজমাট হতো। কিন্তু এই টুর্নামেন্টটা গুরুত্বপূর্ণ।’

মাশরাফির কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, ‘সাকিব যেটা বলেছেন, মার্কেট ভ্যালু যে নাই, সেটা সে বিশ্বাস করেন না। ১৮-২০ কোটি মানুষের দেশে খুবই জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট, সদিচ্ছার প্রয়োজন। আপনার কী মনে হয়?’

মাশরাফি বলেন, ‘আমি তো এটা বললাম, কাজ না করলে তো বোঝা যাবে না। এটা তো দীর্ঘ সময়ের একটা কাজের ব্যাপার। মার্কেট ভ্যালু কতটুকু, আপনার দলের কাছে স্পন্সরশিপ কতটুকু আসতে চাচ্ছে, এগুলো তো দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। একটা দল যখন জানে যে, আমি এই দলটার মালিক, আমি পরবর্তী ১০ বছর, ৭ বছর এটার মালিক। তখন সে দুই বছর লস করতে পারে। ঠিক আছে, আমি আমার দলকে নিয়ে কাজ করব, মার্কেটে প্রমোট করব, ডিসিপ্লিন ওয়েতে। তখন কিন্তু তার যে দুই বছরে প্রফিটে সে চলে যাবে। এটা তো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য ব্যবসা। বিজনেসে যদি আপনি প্রফিট না করেন (তাহলে তো তারা আসবে না)। লস হয়ে গেলে তো সমস্যা। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এজন্য দীর্ঘ সময় স্থায়ী হতে পারছে না। তবে যদি এটি প্রোপার অর্গানাইজ করে করা হয়, যেটা সাকিব বলেছে, আমার কাছেও মনে হয়, অন্তত ৭, ৫ বা ১০ বছর যেটার যে মালিক, তাদের সঙ্গে টিম করা। নির্দিষ্ট তারিখে করা। তখন কিন্তু অনেক কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব।’

গতবার সাকিব বলেছিলেন বিপিএল ৪–৫ নম্বরেও পড়ে না। এবার বললেন তালিকায়ই পড়ে না। আসলে মানটা কোথায় আছে, আপনার কি মনে হয়?

মাশরাফি বলেন, ‘পরিবেশ দেখলে আপনার তা–ই মনে হবে। কারণ, এক মাঠে ৬-৭ দল অনুশীলন করছে। রংপুর যেমন তাদের নিজ দায়িত্বে নিজেদের মাঠে অনুশীলন করছে। এ বিষয়গুলো কিন্তু ম্যাটার করে। আমাদের ওই নির্দিষ্ট দলের সুযোগসুবিধা। ওই যে বললাম না, অর্গানাইজ সঠিক পন্থায় করতে হবে। তখন হয় তো–বা এটা হবে। খালি চোখে যে কেউ এসে দেখে যে, একই মাঠে সবকিছু হচ্ছে, অনুশীলন হচ্ছে। এটা হ–য–ব–র–ল ব্যাপার, এটা বলতে পারে। কিন্তু দিন শেষে খেলার মাঠে খেলা কিন্তু খেলার মতোই হয়। একটা টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য আছে, শুরুর দিকে একটা হাইপ তোলার ব্যাপার আছে, এ জিনিসটা হয় তো আমরা শুরু থেকেই পারিনি, এটা সত্য।’

ক্রিকেট বোর্ডের করণীয় নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘এই ছোট ছোট জিনিসগুলো নিয়ে যখন ক্রিকেট বোর্ড চিন্তা করে। এগুলোয় কিন্তু বড় আকার ধারণ করে। এগুলো যদি পরিবর্তন করে, তাহলে তো পরিবর্তন হবেই। পরিবর্তন না হওয়ার তো কোনো কারণ নেই। এমনও না যে, আমাদের মাঠ নেই। ফতুল্লা পড়ে আছে, আরও কিছু মাঠ পড়ে আছে। বাইরেও আছে। এগুলো যদি একটু অর্গানাইজ করা যায় খারাপ হয় না।’

আইএইচএস/