সব কৃতিত্ব সাকিবকেই দিতে চান কোচ সুজন
শুরুটা ভালো হলেও পরে বড় ধাক্কা। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে জয় পাওয়ার পর ঢাকায় প্রথম পর্বের বাকি দুই ম্যাচে মিনিস্টার ঢাকা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে টানা দুই ম্যাচ হেরে পিছিয়ে পড়েছিল ফরচুন বরিশাল।
এর সঙ্গে যোগ হয় ওপেনিং সমস্যা। ক্রিস গেইলের আর সেই আগের রূপ নেই। এতকাল গেইল মানেই ছিল উড়ন্ত সূচনা। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে প্রতিপক্ষ বোলারদের নাভিশ্বাস ওঠা, চার ও ছক্কা বৃষ্টি।
বিপিএলেই তো গত আসরগুলোতে গেইলের ব্যাটিং তাণ্ডব দেখেছেন দর্শক, ভক্ত ও সমর্থকরা। এবার তার কিছুই দেখা যায়নি। গেইল ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। সৈকত আলী, নাজমুল হোসেন শান্তরাও কিছু করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে এক সময় ডোয়াইন ব্রাভোকে দিয়েও ওপেন করানো হয়। কিন্তু সে ফর্মুলাও কাজে দেয়নি।
প্রথম ৪-৫ ম্যাচ টিম কম্বিনেশন তৈরিতেই ব্যস্ত ছিলেন বরিশাল কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তারপর চট্টগ্রামে গিয়ে ভাগ্য বদল। অধিনায়ক সাকিবের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া।
ব্যাট হাতে ২৭৭ রানের পাশাপাশি ১৫ উইকেট শিকারি সাকিব সন্দেহাতীতভাবেই এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা অলরাউন্ড পারফরমার। ভক্ত ও সমর্থকরা প্রিয় তারকার নৈপুণ্যে পুলকিত। কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও রীতিমত মুগ্ধ।
নিজ দলের পারফরম্যান্স, ফাইনালে উঠে আসা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন সাকিবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তার মূল্যায়ন, ‘সাকিব সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েই বরিশালকে ফাইনালে পৌঁছে দিয়েছে।’
জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে সুজন বলেন, ‘সাকিবই দলকে টেনে তুলেছে। যাকে বলে লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট।’
এবারের বিপিএলের সাকিবের সঙ্গে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সাকিবের মিল পাচ্ছেন সুজন। সেবার ব্যাটে-বলে পারফর্ম করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার।
এবারও সাকিবকে তেমন চেহারায় দেখা যাচ্ছে। সুজন বলেন, ‘বিশ্বকাপের সাকিবকেই খুঁজে পাচ্ছি বারবার। বিশ্বকাপে যেমন তার রেঞ্জ অফ শটস বেড়ে গিয়েছিল অনেক। উইকেটের সামনে, দু’দিকে ও পেছনে ইচ্ছেমত বাহারি, দৃষ্টিনন্দন আর আক্রমণাত্মক শটস খেলে প্রচুর রান করেছে, এখানেও যদি লক্ষ্য করে থাকেন, দেখবেন এবার সাকিবের শটের রেঞ্জ বেড়ে গেছে। অনেক শট খেলছে।’
বরিশাল কোচ যোগ করেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা একদম অ্যাকিউরেট খেলছে সাকিব। যে শট যেখানে খেলতে চাচ্ছে, পারছে অ্যাকিউরিসির সঙ্গে পাওয়ার যোগ করেছে। এবারের বিপিএলে সাকিবের দুটোই কাজ করছে।’
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত সর্বাধিক ম্যাচ জেতা বরিশাল অন্তত ৪ থেকে ৫ খেলায় ১৪০’র ঘরে রান করে জিতেছে। প্রশিক্ষক সুজন সেই সব কম পুঁজিকে জয়ে রূপান্তর করার কৃতিত্বও সাকিবকে দিতে চান।
তার মূল্যায়ন, ‘এবারের বিপিএলে সাকিব ছিল খুবই সিরিয়াস। মাঠে দলকে অনুপ্রাণিত করা, দল পরিচালনা, পরিবেশ-পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং বোলার ব্যবহারে দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে গেম প্ল্যান বদলের কারণেই আমরা ১৪১, ১৪৩ , ১৪৫ আর ১৪৯ ডিফেন্ড করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে সাকিবের বোলিং হ্যান্ডেলের কারণে। মাঠে সে দারুণ সব প্ল্যান করেছে, যা দলকে সাফল্য এনে দেয়।’
এআরবি/এমএমআর/জেআইএম