ঢাকার কোচের চোখে ‘বিপিএল মাতাবেন শান্ত-লিটন’
দেখতে দেখতে শুরুর সময় ঘনিয়ে এলো। আর তিনদিন পরই পর্দা উঠবে বিপিএল এর অষ্টম আসরের। কারা হবে বিজয়ী? তিন সিনিয়র ক্রিকেটার মাশরাফি, তামি, রিয়াদের ঢাকা? নাকি সাকিবের বরিশাল? মুশফিকের খুলনা বা লিটন-মোস্তাফিজের কুমিল্লাও বা কম কিসে!
পাশাপাশি আসরে সবচেয়ে বেশি রান করবেন কে? কার ঝুলিতে জমা পড়বে সর্বাধিক উইকেট? সেরা অলরাউন্ডার হবেন কে? আসর সেরা পারফরমারের পুরস্কার উঠবে কার হাতে? এর বাইরে বিদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল খেলবেন কে আর দেশিদের মধ্যেই বা মাঠ মাতাবেন কারা?
বিপিএলে আবার জ্বলে উঠতে পারবেন ক্রিস গেইল? এই টুর্নামেন্টে তার রেকর্ড দুর্দান্ত। ধারেকাছেও কেউ নেই তার। ৪২ খেলায় ১৪৮২ রান আছে এ ক্যারিবিয়ানের। সর্বাধিক সেঞ্চুরির মালিক গেইল। সমান ৫টি করে সেঞ্চুরি-হাফসেঞ্চুরির। ফরচুন বরিশালের হয়ে গেইল কী করেন, সেটিই দেখার।
গেইলের স্বদেশি আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিন, ডোয়াইন ব্রাভো, আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের দিকেও সবার নজর। পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে মাঠ মাতাবেন কারা সে নিয়েও আছে নানান আলোচনা।
জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে এ বিষয়ে নিজের মূল্যায়ন জানিয়েছেন দেশের প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেট প্রশিক্ষক মিজানুর রহমান বাবুল। ২০২০ সালের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের চ্যাম্পিয়ন জেমকন খুলনার প্রশিক্ষক ছিলেন জাতীয় দলের এ সাবেক মিডিয়াম পেসার। আর এবার তিনি মিনিস্টার ঢাকার কোচ।
তার কাছে প্রশ্ন ছিল, এবার বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে মাঠ মাতাতে পারেন কারা? উত্তরে ৫ জনের নাম উল্লেখ করেছেন বাবুল। সবার আগে তার মুখ থেকে এসেছে লিটন দাসের নাম। পরের চারটি নাম হলো তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
গতবছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থ হলেও টেস্টে লিটন দারুণ ফর্মে আছেন। নিউজিল্যান্ড সফরে দুর্দান্ত পারফরম করেছেন। ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষেও তার ব্যাট থেকে সেঞ্চুরির দেখা মিলেছে। সাদা পোশাকে শেষ ৭ ইনিংসে (১১৪, ৫৯, ৬, ৪৫, ৮৬, ৮ ও ১১২) লিটন সমান দুটি সেঞ্চুরি-ফিফটি হাঁকিয়েছেন।
কাজেই ধরেই নেয়া যায়, লিটন এখন ফর্মের চূড়ায়। আর নিউজিল্যান্ডে জাতীয় দলের সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে লিটনকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন কোচ বাবুল। নেটেও ম্যাচে লিটনের ব্যাটের স্বচ্ছন্দ ও সাবলীল রুপ দেখেই বাবুলের ধারণা, এবারের বিপিএলে স্থানীয় ব্যাটারদের মধ্যে লিটন দাসের ব্যাট আলো ছড়াবে।
এছাড়া তার নিজ দলের দুই সিনিয়র পারফরমার তামিম ও রিয়াদের ব্যাটও দ্যুতি ছড়াবে- এমন বিশ্বাস কোচ বাবুলের। তামিম সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা, তামিম বেশ কিছু দিন মাঠের বাইরে। কিন্তু আমি ভালোভাবে লক্ষ্য করেছি, তার ভেতরে আবার ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠার অদম্য স্পৃহা কাজ করছে। মাঠে ফিরে খুব ভাল কিছু করার তাড়না আছে এ বাঁহাতি ব্যটারের। তাই আমার মনে হয় এবারের বিপিএলে জ্বলে উঠতে পারে তামিমের ব্যাট।
ঢাকার অধিনায়ক রিয়াদ সম্পর্কে কোচ বাবুলের একটাই কথা, রিয়াদ সবসময়ই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভাল খেলে। বিপিএল তার পয়মন্ত আসর। এ আসরের অন্যতম সফল এবং ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার রেকর্ড আছে রিয়াদের। তাই আমার ধারণা এবারও রিয়াদ ব্যাট-বল হাতে নিজেকে মেলে ধরতে পারবে।
এরপরই কোচ বাবুলের মুখে উঠে আসে সাকিবের নাম। সাকিব সম্পর্কে তার মূল্যায়ন, আমি আর কী বলবো? সাকিব বিশ্ব ক্রিকেটে এক বড় নাম। উজ্জ্বল নক্ষত্র। টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট হিসেবেও সারা বিশ্বে সমাদৃত। বিপিএলেরও বেস্ট অলরাউন্ডিং পারফরমার। আমার মনে হয়, সাকিব সে ধারা বজায় রাখবে।
সবশেষ বাবুল বলেছেন নাজমুল হোসেন শান্তর নাম। জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ হিসেবে শান্তকে একদম কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। সেই দেখা ও অনুভব থেকে বাবুলের ধারণা, শান্ত খুব ভাল ছন্দে আছে। তার ব্যাট বেশ সাবলীল। তাই তার মনে হয় এবারের বিপিএলে শান্তর ব্যাট শাসন করবে প্রতিপক্ষ বোলারদের।
এআরবি/এসএএস/জিকেএস