ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

জাহানারার ‘পক্ষপাতে’র অভিযোগ এবং চিঠির বিষয়ে কী ভাবছে বিসিবি?

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৬:২৮ পিএম, ১১ জানুয়ারি ২০২২

নারী ক্রিকেট দল মালয়েশিয়া গেছে কমনওয়েলথ গেমসের বাছাইপর্ব খেলতে। ওই দলের সঙ্গে নেই দেশের নারী ক্রিকেটের অন্যতম শীর্ষ পারফরমার এবং সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম।

বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের হাতেগোনা কয়েকজন শীর্ষ পারফরমারের অন্যতম জাহানারা। দলের পেস বোলিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ এবং সন্দেহাতীতভাবেই দলের অপরিহার্য সদস্য।

নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময়ে নারী দলের বেশিরভাগ সাফল্যে আছে জাহানারার কার্যকর অবদান এবং তিনি ভারতের নারী আইপিএলেও বাংলাদেশের পারফরমার হিসেবে সুনামের সঙ্গে খেলেছেন। সেখানেও পারফরমার জাহানারার প্রশংসা ছিল সবার মুখে। দেশের ক্রিকেটের এমন এক উল্লেখযোগ্য ও অন্যতম শীর্ষ পারফরমার ১৫ জনের দলের বাইরে!

হঠাৎ বাদ! তাও ইনজুরি ছাড়া। প্রশ্ন জাগে বৈকি। ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন, নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে সফরের সময় নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে এবং ড্রেসিং রুমের ভেতরেও নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে তার।

এর পরপরই জাতীয় দলের পরবর্তী বিদেশ সফর মানে কমনওয়েলথ গেমসের বাছাই পর্বে বাদ পড়লেন জাহানারা। কেন বাদ পড়লেন, তার মূল কারণ এতদিন অপ্রকাশিতই ছিল। গুঞ্জন অবশ্য শাখা-প্রশাখা মেলেছে; কিন্তু আজ বিশেষ কারণে বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে।

জানা গেছে, কমনওয়েলথের জন্য দল গঠন করার আগেই জাহানারা বিসিবির কাছে চিঠি দিয়েছেন এবং চিঠিতে দাবি করেছেন, তিনি টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বৈষম্যের স্বীকার এবং তার দলের বাইরে থাকাটা আসলে পক্ষপাতদুষ্ট। তাকে নাকি ইচ্ছা করেই বাদ দিয়েছেন নারী ক্রিকেটের নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম।

সত্যিই জাহানারা বোর্ডে চিঠি দিয়েছেন? দিলে কী লিখেছেন? এবং এ ব্যাপারে বিসিবি কিংবা নারী ক্রিকেট উইংয়েরই বা ভাষ্য কী? তা জানতে আগ্রহী অনেকেই।

আজ মঙ্গলবার জাগো নিউজ ও শেরে বাংলায় উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন বিসিবি পরিচালক ও ওমেন ক্রিকেট উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল চৌধুরী। অনেক কথার ভিড়ে বিসিবি পরিচালক নাদেল স্বীকার করেছেন, হ্যাঁ, জাহানারা একটি চিঠি দিয়েছে।

তবে সেটা বিসিবি বরাবর নাকি ওমেন্স উইংয়ের কাছে, তা পরিষ্কার করেননি নাদেল। তিনি জানিয়েছেন, অভিযোগটা উইমেন্স উইং হোক কিংবা সিইও- যার কাছেই দিক, আমরা বিষয়টাকে ইতিবাচক হিসেবেই নিতে চাই। যাকে অ্যাড্রেস করে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে উনি বলেছেন বিষয়টা দায়িত্ব নিয়েই দেখবেন। আশা করি উনি বিষয়টা সুরাহা করবেন। সে জায়গায় যদি আমাদের প্রয়োজন হয় বা কিছু করতে হয় সেটাও আমরা করবো।

নাদেল বলেন, ‘দেখুন, ম্যানেজার ও কোচ জিম্বাবুয়ে সফরের রিপোর্ট দিয়েছেন এবং সেটা সিইও’র কাছে আছে। আমরাও সেটা দেখেছি। যেহেতু আমাদের সঙ্গে সেভাবে কথা হয়নি এবং তার যে অভিযোগ, সেটা আমার কাছে অর্থাৎ উইমেন্স উইংয়ে আসেনি সেজন্য আমি কথা বলিনি। সিইও তার সাথে কথা বলেছেন। সিইও তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে তার অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্বের সাথেই দেখবেন।’

যে কোনো ক্রিকেটার নিজের অভিযোগ-অনুযোগ বোর্ডে জানাতে পারেন। এ বিষয়টা তুলে ধরে নাদেল চৌধুরী বলেন, ‘হ্যাঁ, জাহানারা সে তো পার্ট অব বোর্ড। সে তার মতামত, অনুযোগ জানাতেই পারে। আমি মনে করি, এটা খুব স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এবং আমি খুব ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই তা দেখতে চাই। তবে আমরা খুঁটিয়ে দেখবো তার দাবি ও বক্তব্য কতটা সঙ্গতিপূর্ণ।’

তবে এখনই জাহানারার দেয়া চিঠির ভিত্তিতে টিম ম্যানেজমেন্ট মানে কোচ ও ম্যানেজারকে তলব করা হবে না বলেও জানান নাদেল। তার ব্যাখ্যা, ‘এখন একটি সিরিজ চলছে। জাতীয় দল দেশের বাইরে। সিরিজের মধ্যে ম্যানেজমেন্টকে চাপ দিলে কী ভালো হবে নাকি খারাপ হবে, সেটাও ভেবে দেখতে হবে।’

নাদেল যোগ করেন, ‘প্লেয়াররা আমাদের সম্পদ। তাদের প্রটেক্ট করার দায়িত্ব আমাদের। আমরা তা করবো। তার মানে এই নয় যে, কাউকে মাথায় তুলে ফেলতে হবে।’

মঙ্গলবার অপরাহ্নে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ওমেন উইং চেয়ারম্যান বোঝানোর চেষ্টা করেন, বিষয়টি খানিক স্পর্শকাতর। তাই তার মুখে এমন কথা, ‘দেখুন আমি নারী খেলোয়াড়দের অভিভাবক। যতদিন আমি উইমেন উইংসে কাজ করবো ততদিন আমার টিমের প্রত্যেকের অভিভাবক আমি। সবার ভালোটার দায়ও আমার। খারাপটার দায়ও আমার। এই দায় নিয়েই বলছি, আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। অনেক বিষয় থাকে যা সামনে আনলে আমাদের পুরো ক্রিকেটের, প্রমীলা ক্রিকেটের ক্ষতি হয়- এমন কোনো বিষয় আমি এড়িয়ে যেতে চাই।‘

জাহানারার পক্ষপাতের অভিযোগ খণ্ডন করে নাদেল চৌধুরীর ব্যাখ্যা, ‘দেখুন এখানে পক্ষে-বিপক্ষে যাওয়ার কিছু নেই। আমরা খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যেতে চাই। বোর্ড, ম্যানেজমেন্ট, সংগঠক আমাদের মাঝে তারা (খেলোয়াড়রা) সন্তানের মতো। তারা আমাদের ছোট বোনের মতো, ছোট ভাইয়ের মতো। চলার পথে তাদের কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকতেই পারে। সেটা আমরা সংশোধনের জন্য সহনশীল ও অভিভাবকসুলভ মনোভাব যেটা দেখানোর সেটাই দেখাবো।’

এআরবি/আইএইচএস