বাংলাদেশের ‘লজ্জার’ সেই চার ইনিংস
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এলেই যেন মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ। তখন যেন একের পর এক লজ্জার রেকর্ডে নাম লেখানোর প্রতিযোগিতায় নামে টাইগাররা। তীরে এসে তরী ডোবা তো আছেই, ১০০ রানের নিচে অলআউট হওয়ার ঘটনাও আছে চারটি।
চলুন দেখে নেওয়া যাক, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই লজ্জার চারটি ইনিংস
১। ৭০ বনাম নিউজিল্যান্ড; ২৬ মার্চ, ২০১৬
ভেন্যু: ইডেন গার্ডেন্স, কলকাতা, ভারত
স্বাধীনতার ৪৫তম বার্ষিকীতে এমন লজ্জার রেকর্ড করেছিল বাংলাদেশ। সুপার টেনে সান্ত্বনার জয় পেতে কলকাতায় সেদিন বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৪৬ রান। ১৪৬ এর লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই কিউই বোলারদের সামনে নাভিঃশ্বাস উঠতে থাকে বাংলাদেশি ব্যাটারদের।
গ্র্যান্ট ইলিয়ট (৪-০-১২-৩) ও ইশ সোধির (৩.৪-০-২১-৩) দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৫.৪ ওভারে ৭০ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ব্যর্থ হয়ে যায় মোস্তাফিজুর রহমানের ফাইফার (৪-০-২২-৫)।
২। ৮৩ বনাম শ্রীলঙ্কা; ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০০৭
ভেন্যু: ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়াম, জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা
বিশ্বকাপের প্রথম মৌসুমেই ১০০’র নিচে অলআউট হওয়ার রেকর্ড করছিল বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য জোহানেসবার্গে দুই দলের কাছেই ম্যাচটি ছিল ‘ডু-অর-ডাই’ ম্যাচ।
১৪৮ রানের লক্ষ্যে ‘লঙ্কার ঝাঁজে’ শুরু থেকেই চোখ জ্বালাপোড়া করতে থাকে বাংলাদেশি ব্যাটারদের। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা বাংলাদেশ ২৫ বল আগেই ৮৩ রানে গুটিয়ে যায়।
৩। ৮৪ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা; ২ নভেম্বর, ২০২১
ভেন্যু: শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত
এবারের গল্পটা একটু ভিন্ন। আবুধাবিতে এবার আগে ব্যাটিং করে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার পাওয়া ব্যাটিংয়ের ‘অফার’ কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।
দলীয় রানের কোটা ৫০ পেরোনোর আগেই বাংলাদেশ হারায় প্রথম ছয় ব্যাটারকে। আট নম্বরে নেমে শেখ মেহেদি ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৫ বলে ২৭ করলেও শতরানের কোটা পার হতে পারেনি বাংলাদেশ। এনরিখ নর্তজের বলে নাসুম আহমেদ হিট উইকেট হলে ১০ বল আগে ৮৪ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংসের চাকা।
৪। ৯৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ; ২৫ মার্চ, ২০১৪
ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা, বাংলাদেশ
শতরানের নিচে অলআউট হওয়ার রেকর্ড করতে ঘরের মাঠকেও ছাড়েনি বাংলাদেশ। এবার রেকর্ডটি হয়েছিল স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন।
ক্যারিবীয়দের ছুঁড়ে দেয়া ১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম চার ওভারেই একে একে বিদায় নেন তামিম ইকবাল (৫), এনামুল হক বিজয় (১০) ও সাকিব আল হাসান (০)।
চতুর্থ উইকেটে মুশফিকুর রহিম-মুমিনুল হক মিলে ৩৫ রানের জুটি গড়ে সামাল দেন প্রাথমিক ধাক্কা। দশম ওভারের প্রথম বলে সুনিল নারিনকে স্লগ সুইপ করতে শর্ট ফাইন লেগে ক্রিসমার সান্তোকির শিকার হন মুমিনুল।
এরপরেই পথ হারাতে শুরু করে বাংলাদেশ। বিশেষ করে, স্যামুয়েল বদ্রির লেগস্পিন বিষে (৪-০-১৫-৪) হাঁপাতে থাকে স্বাগতিকেরা। শেষ ওভারের প্রথম বলে সোহাগ গাজিকে বোল্ড করে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন আন্দ্রে রাসেল। বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ৯৮ রানে।
লিখেছেন : অয়ন রায় অঙ্কন
আইএইচএস/