ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

স্বপ্ন দেখি সাকিব-রিয়াদের হাতে একটা বিশ্বকাপ

সাথিরা জাকির জেসি | প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২১

দীর্ঘ সময় পর বিশাল কোনো আইসিসি আসরে খেলতে গেলো টিম বাংলাদেশ। অবশ্য অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য। প্রস্তুতি বলতে গেলে এই আসরে সবার আগে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মতো বড় দলগুলোর সাথে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস।

যদিও এ দুটি সিরিজ নিয়ে কিছু কথা থেকেই যায়। যেমন, (১) অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের পুরো টিম না আসা, যারা বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টিতে অংশগ্রহণ করবেন। (২) উইকেট কন্ডিশনটা একেবারে স্লো এবং টার্নিং উইকেট করা- বাংলাদেশ দলের জন্য সিরিজ দুটি নিজেদের ঘরে ধরে রাখতে সহায়তা করেছে।

অবশ্য আমি কিন্তু এভাবে ভাবতে চাইও না, আবার ভাবিও না। আমার কাছে মনে হয়, জয় সেটা যে কোনো দলের সাথেই হোক না কেন- সমান গুরুত্ব রাখে। আবার ধরুন- আত্মবিশ্বাসের কথা। যে কোনো জয় এবং ভালো পারফরম্যান্স দলের এবং ব্যক্তিগত আত্মবিশ্বাস অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। অন্ততপক্ষে এত বছর সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার পরে এইটুকু তো বলতেই পারি যে, ক্রিকেটে আত্মবিশ্বাসটা অত্যন্ত জরুরি। যার আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক শক্তি যত বেশি সে তত ভালো খেলোয়াড়। অবশ্য স্কিল এবং ফিটনেস থাকতেই হবে তার সাথে।

যাই হোক, দুটো ভালো সিরিজ জয়ের পরে অবশ্যই ভালো কিছু হবে, সেই আশায় সবাই ঘর বাধতে শুরু করেছিল। কিন্তু সেই আশায় হঠাৎ করেই এক অজানা ধাক্কা আসলো। সেটা হলো তামিম ইকবাল। টিম সিলেকশনের আগে তামিম ইকবাল জানিয়ে দিলেন যে তিনি থাকছেন না এই বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টিতে এবং সেটা শুনে অবাক হয়েছিলেন খোদ বোর্ড প্রেসিডেন্ট, সিলেক্টরসহ পুরো বাংলাদেশ। সবার মনে বহু প্রশ্নের ঝড় উথাল-পাতাল করতে থাকলো, তামিম কেন খেলবে না? তামিম না থাকলে কী হবে টিম বাংলাদেশের? কে করবে ওপেনিং? তামিমকে ছাড়া কী জিততে পারবে বাংলাদেশ?

আরো অনেক অনেক প্রশ্ন। তার একটাই কারণ, আমাদের দেশে তো তামিমের বিকল্প ওপেনার এখনও তৈরি হয়নি। তারপরও সাধুবাদ জানাতে হয় ইয়াং এবং ট্যালেন্টেড ওপেনার নাইম শেখকে। তামিমের মত মারকুটে ব্যাটিং না করলেও দলের প্রয়োজনে একদিকে দায়িত্ব নিয়ে ধীরে ধীরে কিভাবে দলকে জেতাতে হয় সেটা অল্প সময়ে খুব ভালোভাবে রপ্ত করেছেন এই ইয়াং স্টার।

ওপেনিংয়ে অন্য প্রান্তে অন্য কেউ খুব একটা ভালো সাপোর্ট না দেয়ায় যেন এই অল্প সময়ে সব ভার, সব দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে এবং যতটুকু সাধ্য তার থেকে অনেক বেশিই হয়তো বা করেছেন দলের জন্য। অবশ্য আমার এই কথাগুলোর সাথে অনেকে দ্বিমত পোষণ করতেই পারেন। অনেকেই তার স্লো স্ট্রাইক রেট নিয়ে কথা বলতেই পারেন।

কিন্তু উইকেট যেখানে ব্যাটিংয়ের ফেবারে নয়, সেখানে উইকেটে টিকে থাকাটাই হলো সবচেয়ে বড় লড়াই। সেখানে স্ট্রাইক রেটটা খুব একটা ইমফরট্যান্ট বিষয় বলে আমি মনে করি না। যেখানে উইকেটে টিকে থেকে ম্যাচ জেতানোটাই সবচেয়ে বড় বিষয়, আর যে ব্যাটসম্যান এমন কঠিন উইকেটে স্ট্রাগল করতে পারেন, সেই ব্যাটসম্যান বিশ্বের যে কোনো উইকেটেই ভালো করতে পারেন।

এবং তিনি করেছেনও। ওমানের সাথে প্র্যাকটিস ম্যাচে ৬৩ রান করেছেন ৫৩ বলে। স্ট্রাইক রেটটা ছিল তার ১১৮.৮৬। যেটা ছিল সেই ম্যাচে টিম বাংলাদেশের মধ্যে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। অবশ্য লিটন দাসও অসাধারণ করেছেন। ৫৩ রান করেছেন ৩৩ বলে, ১৬০.৬০ স্ট্রাইক রেটে। অবশ্যই এই প্র্যাকটিস ম্যাচের ওপেনিং পার্টনারশিপ দেখে সবার কপাল থেকেই হয়তো চিন্তার ভাঁজ কিছুটা হলেও কমেছে। আশাটা বেড়েছে বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টিতে আরও ভালো করার।

নুরুল হাসান সোহানের কথা না বললেই নয়। অসাধারণ উইকেটকিপিং এবং চমৎকার ব্যাটিং। মিডল অর্ডার বা লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের কাছে ঠিক যেমন পুরো বিশ্ব দেখতে চায়, ঠিক তেমনই সোহান। প্র্যাকটিস ম্যাচে ৩২৬.৬৬ স্ট্রাইকরেটে ১৫ বলে করেছেন ৪৯ রান। তার মধ্যে ৭টাই ছিল ছক্কার মার। চোখ জুড়ানো সেই ব্যাটিং দেখলেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আনন্দটা বুঝে যাবেন দর্শকরা।

বাংলাদেশের সিনিয়র খেলোয়াড়দের নিয়ে কিছু বলার নেই। আজকে বাংলাদেশের ক্রিকেট যে অবস্থানে আছে তার অবদান আকরাম খান, হাবিবুল বাশার, নান্নু, বুলবুল, সুজন, রফিক ভাইদের সাথে মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদদের সবার। এখন দায়িত্ব নিতে হবে এই ইয়াং খেলোয়াড়দের। মোস্তাফিজ, নাসুম, নাইম, সোহান, শামীম, সাইফউদ্দিনরা কী পারবে রিয়াদ-সাকিবকে তাদের জীবনের সেরা উপহারটা তুলে দিতে? আমরা আশাবাদী। আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি এবং আমি স্বপ্ন দেখি- সাকিব রিয়াদের হাতে একটা বিশ্বকাপ এবং আমার বিশ্বাস সেটা আসবেই কোনো একদিন।

আইএইচএস/