এই দলটির কাছে জয়ের আশা করাই যায়: দুর্জয়
এবারের বিশ্বকাপে কী করবে বাংলাদেশ? ওমান, স্কটল্যান্ড আর পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে খেলে প্রথম পর্ব টপকে যেতে পারবে কি না, পারলে, দ্বিতীয় বা মূল পর্বে গিয়ে কী করবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল? প্রথম পর্ব থেকে উঠে আসা দূর্বল প্রতিপক্ষ ছাড়া ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড আর আফগানিস্তানের কাউকে হারাতে পারবে কী?
আসলে বাংলাদেশের যে শক্তি ও সামর্থ্য, তা দিয়ে কতদুর যাওয়া সম্ভব? এসব প্রশ্ন এখন প্রতিটি বাংলাদেশ সমর্থকের মনে উঁকিঝুকি দিচ্ছে। তবে তাদের জন্য আশারবানী শুনিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয়। তার ধারণা, এবার আগের যে কোন বারের চেয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টাইগারদের পারফরমেন্স ভাল হবে এবং জয়ের সংখ্যাও বেশি থাকবে।
কারণ ব্যাখ্যা করে দুর্জয় বলেন, আসলে আগে আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভাল খেলতাম না। তাই হারতাম। এখন ভাল খেলি, তাই জয়ের আশা করাই যায়।
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক ও চৌকশ ক্রিকেটার এবং বিসিবি নির্বাচনে সদ্য বিজয়ী পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয় জাগো নিউজের সাথে একান্ত আলাপে ওই উক্তি ছাড়া আরও অনেক কথাই বলেছেন। আসুন শোনা যাক দুর্জয়ের সে কথোপকোথন-
জাগো নিউজ: এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভাল করার সম্ভাবনা আসলে কতটা?
দুর্জয়: আসলে খেলা হবে ডিফারেন্ট কন্ডিশনে। আমরা হোমে ভাল করেছি। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কন্ডিশনটা টোটালি ডিফারেন্ট থাকবে। আমাদের দেশের মাটিতে ব্যাটসম্যানরা খুব স্ট্রাগল করেছে। উইকেটটাও ব্যাটসম্যানদের ফেবারে ছিল না। এখন যে কন্ডিশনে ওয়ার্ল্ডকাপ হবে, সেখানে হয়ত ব্যাটিং সহায়ক উইকেট থাকবে। তাই ব্যাটিং ভাল হতেই হবে।
জাগো নিউজ: ব্যাটিং ভাল বলতে আসলে কী বোঝাতে চাইছেন? করণীয়টা আসলে কী হতে হবে?
দুর্জয়: প্রথম কথা হলো লো স্কোরিং ম্যাচের আশা করলে হবে না। খেলা হবে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে। সেটা ভেবে ও ধরেই লক্ষ্য এবং কৌশল আঁটতে হবে। সেখানে রান করতেই হবে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’তে হাত খুলে খেলতে হবে। সঙ্গে রানের চাকাও সচল রাখা জরুরি। এ দুটি কাজই সঠিকভাবে করে দেখাতে হবে।
জাগো নিউজ: কিন্তু বাংলাদেশের কী সেই ব্যাটিং শক্তি আছে? আমাদের ব্যাটসম্যানরা কতটা ক্যাপাবল?
দুর্জয়: আমরা ক্যাপাবল। অবশ্যই ক্যাপাবিলিটি আছে। তবে সেটা মাঠে সঠিক সময় প্রয়োগ করে দেখাতে হবে।
জাগো নিউজ: এর বাইরে ব্যাটিং নিয়ে আর কিছু বলার আছে আপনার?
দুর্জয়: আরও একটু অ্যাগ্রেসিভ ব্যাটিং করতে হবে।
জাগো নিউজ: তামিমকে কতটা মিস করবে দল?
দুর্জয়: তামিমের অভিজ্ঞতা মিস করবো। তবে নতুন যারা আছে, তারাও খারাপ না। এখানে সৌম্য, লিটন আছে। মনে হয় কভার করার মত সামর্থ্য ওদের আছে।
জাগো নিউজ: অনেকদিন টি-টোয়েন্টির মূল পর্বে জয় নেই। এবার কী জয় ধরা দেবে?
দুর্জয়: দেখেন টি-টোয়েন্টি হলো ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাট। আগে আমরা ভাল খেলতাম না। তাই হারতাম বেশি। এখন কিন্তু আমরা ভাল খেলতে শুরু করেছি। ভাল খেলছিও। তাই আমার মনে হয় জেতার চান্স বেশি এবার। আগের যে কোনোবারের তুলনায় এবার জেতার সম্ভাবনা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে আমরা জয় আশা করতেই পারি।
জাগো নিউজ: কোন দলের বিপক্ষে জয়ের বেশি আশা করছেন?
দুর্জয়: আসলে আমাদের ৪টি প্রতিপক্ষই বেশ শক্ত। নিউজিল্যান্ড ডেঞ্জারাস দল। নিউজিল্যান্ড, ইন্ডিয়া আর পাকিস্তান তিনটি দলই টি-টোয়েন্টির বেস্ট টিমের মধ্যে আছে। আবার আফগানিস্তানও কিন্তু হেলাফেলার দল না। বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ। তাই এদের কাউকে আলাদা করে ছোট ভাবার কারণ নেই। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আসলে সেভাবে চিন্তা করারও সুযোগ নেই। আমার মনে প্রতিপক্ষ হিসেবে সবাই সমান। তবে আমাদের যে কাউকে হারানোর ক্ষমতা ও সামর্থ্য আছে। নির্দিষ্ট দিনে সামর্থ্যের সেরাটা প্রয়োগ করার ওপরই নির্ভর করছে সবকিছু।
জাগো নিউজ: ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সাথে সিরিজ জয়ের প্রভাব থাকবে কতটা?
দুর্জয়: রেজাল্ট অনুযায়ী মোরাল হাই থাকবে। তবে ব্যাটিংটা কভার করতে হবে। ব্যাটসম্যানরা যে শেরে বাংলার স্লো এবং লো ও খানিক টার্নিং উইকেটে খারাপ করেনি। তবে আরও ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি উইকেটে খেলবো, আরও অ্যাগ্রেসিভ, আরও স্ট্রোক প্লে করতে হবে।
জাগো নিউজ: সাকিব এবং মোস্তাফিজের আইপিএল খেলে বিশ্বকাপ দলে আসা কতটা প্লাস পয়েন্ট হবে?
দুর্জয়: অবশ্যই প্লাস পয়েন্ট। তারা ভেন্যুগুলো সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে দলে আসবে। সাকিব সেভাবে খুব বেশি ম্যাচ না পেলেও তার অভিজ্ঞতা দলের জন্য সহায়ক হবে। আর মোস্তাফিজ দেশেও ভাল বল করছে। আইপিএলেও ভাল বোলিং করেছে। সব মিলিয়ে আমার মনে হয় আগের চেয়ে এবার ভাল করার সম্ভাবনা আছে।
এআরবি/আইএইচএস