তামিমের ব্যাটে ধর্মশালায় টাইগারদের শুভ সূচনা
বিশ্বকাপের মূল আসরে নামার আগে প্রথম রাউন্ডে খেলার অভিজ্ঞতা ২০১৪ সালের আসরেই হয়ে গিয়েছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। যা চলমান থাকে ২০১৬ সালে ভারতের মাটিতে হওয়া বিশ্বকাপেও। যেখানে মূল আসরে নামার আগে আইসিসি সহযোগী সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে খেলতে হয়েছে প্রথম রাউন্ডে।
সেই আসরের প্রথম রাউন্ডের খেলাগুলো সব ধর্মশালায় রেখেছিলো আয়োজক ভারত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক অদ্ভুত লীলাভূমিই বলা চলে ধর্মশালাকে। সেখানে কোনো ম্যাচ হারেনি বাংলাদেশ। মিশনটা শুরু হয়েছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। তামিম ইকবালের ব্যাটে চড়ে সেই ম্যাচ জিতে নেয় টাইগাররা।
বরাবরের মতো মার্চেই শুরু হয়েছিলো বিশ্বকাপ, ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিলো ৯ তারিখ। টসভাগ্য পাশে পাননি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ। ডাচ অধিনায়ক পিটার বোরেনের সিদ্ধান্ত যথাযথই প্রমাণ করেন তার বোলাররা।
বাংলাদেশের তারকাখচিত ব্যাটিং লাইনআপকে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৩ রানের বেশি করতে দেয়নি নেদারল্যান্ডস। তবে অন্যান্য ব্যাটারদের হতাশার দিনে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হয়ে যান বাঁহাতি ওপেনার তামিম। মূলত তার একার ব্যাটেই জয় পায় বাংলাদেশ।
দলের বাকিরা যেখানে ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি, সেখানে একাই ৮৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস উপহার দেন দেশসেরা এ ওপেনার। ইনিংস সূচনা করতে নেমে শেষপর্যন্ত আর আউটই হননি তামিম। প্রায় চার বছর পর টি-টোয়েন্টি দেখা পান ফিফটির।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংসে তামিম অপরাজিত থাকেন ৮৩ রানে। তার ৫৮ বলের ইনিংসে ছিলো ৬ চার ও ৩ ছয়ের মার। তামিমের এই ইনিংসে ভর করেই মূলত ১৫৩ রান করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ রান আসে সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানের ব্যাট থেকে।
এছাড়া দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি করেন ঠিক ১০ রান। নেদারল্যান্ডসের পক্ষে মাত্র ২১ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন টিম ফন ডার গুটেন। নিজের ৪ ওভারে ১৭ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার পল ফন মেকেরেনের।
রান তাড়া করতে নেমে ছোট ছোট ইনিংসে বাংলাদেশের মনে ভয় ঠিকই ঢুকিয়েছিলো নেদারল্যান্ডস। কিন্তু শেষপর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। স্টিফেন মাইবার্গ ২৯, বেন কুপার ২০, পিটার বোরেন ৩০ ও শেষদিকে মুদাসসার বুখারি ৫ বলে ১৪ রানের ইনিংসে আশা জাগান জয়ের।
কিন্তু মাশরাফি-সাকিবদের কিপটে বোলিংয়ে বাংলাদেশের নামের পাশেই লেখা হয় জয়ী। ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচ করেন মাশরাফি। সাকিব আল হাসান ও আলআমিন হোসেন নেন ২টি করে উইকেট। শেষপর্যন্ত ৮ রানের জয়ে শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ।
স্কোরকার্ড
বাংলাদেশ: ১৫৩/৭ (২০ ওভার; তামিম ৮৩*, সৌম্য ১৫, সাব্বির ১৫, সাকিব ৫, মাহমুদউল্লাহ ১০, মুশফিক ০, নাসির ৩, মাশরাফি ৭, আরাফাত সানি ৮*; মুদাসসার ৪-০-৩১-০, ফন ডার গুটেন ৪-০-২১-৩, ফন মেকেরেন ৪-০-১৭-২, ফন ডার মারউই ৩-০-২৮-১, ফন বিক ৪-০-৪৩-০, বোরেন ১-০-৯-১)
নেদারল্যান্ডস: ১৪৫/৭ (২০ ওভার; মাইবার্গ ২৯, বারেসি ৯, বেন কুপার ২০, বোরেন ৩০, টম কুপার ১৫, ফন ডার মারউই ১, সিলার ৭, মুদাসসার ১৪, ফন বিক ৪*; তাসকিন ৪-০-২১-০, আলআমিন ৩-০-২৪-২, আরাফাত সানি ২-০-১০-০, নাসির ২-০-২৪-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৮-০, মাশরাফি ৪-০-১৪-১, সাকিব ৪-০-২৯-২)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৮ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)
এসএএস/আইএইচএস