দক্ষতা প্রদর্শনের সেরা মঞ্চ টেস্ট ক্রিকেট : সাইফ
বুধবার থেকে শুরু হবে বাংলাদেশের জিম্বাবুয়ে সফরের একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। তার আগে শনিবার দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। জিম্বাবুয়ের নির্বাচিত একাদশের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম দিন রানের দেখা পেয়েছে টাইগার ব্যাটসম্যানরা।
দিন শেষে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩১৩ রান। বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম ৩০ বলে ০ রানে আউট হওয়া ব্যতীত বাকি সবাই সাবলীল ব্যাটিং করেছেন। এমন নয় যে জিম্বাবুয়ের বোলারদের বিপক্ষে ধুঁকতে হয়েছে তাকে। বেশ কিছু ভালো শট খেলেছেন তিনি। কিন্তু সবই ছিল ফিল্ডারদের হাত বরাবর।
শুরুতে সাদমান আর শেষ সেশনের প্রথম ওভারে অধিনায়ক মুমিনুল হকের উইকেট ব্যতীত আর কোনো সাফল্য পায়নি স্বাগতিক দলটি। অন্যদের ব্যাটিংয়ের সুযোগ করে দিতে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন বাংলাদেশের চার ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশের পক্ষে সাইফ হাসান ১০৮ বলে ৬৫, নাজমুল হোসেন শান্ত ১০৭ বলে ৫২, মুমিনুল ৭৭ বলে ২৯, সাকিব আল হাসান ৫৬ বলে ৭৪, লিটন দাস ৮২ বলে ৩৭, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭১ বলে ৪০ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১১ বলে ৫ রান করেছেন।
অর্থাৎ সারা দিনে জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন সাকিব-সাইফরা। তবে দিনের খেলা শেষে এটি নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগতে রাজি নন ডানহাতি ওপেনার সাইফ হাসান। বরং প্রস্তুতি ম্যাচটিকে নিজেদের আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি হিসেবেই নিচ্ছেন তিনি।
বিসিবির সরবরাহকৃত ভিডিওবার্তায় সাইফ বলেছেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচ তো আসলে সবসময় আত্মবিশ্বাসের জন্য আমরা খেলি। আজকের উইকেটে প্রথম ৮-১০ ওভার ভালো সুবিধা ছিল পেসারদের জন্য। এরপর ব্যাটিংবান্ধব হয়ে গেছে। তো সবমিলিয়ে খুব ভালো প্রস্তুতি হয়েছে আমাদের। আশা করি, এটা মূল ম্যাচে কাজে আসবে।’
কিংবদন্তি ক্রিকেটার কিংবা বিশ্ব খ্যাত বিশ্লেষকদের সবাই এক বাক্যে মেনে নেন, টেস্ট ক্রিকেটই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা যেকোন ক্রিকেটারের জন্য। এবার সেই একই কথা বললেন বাংলাদেশ দলের ২২ বছর বয়সী তরুণ ওপেনার সাইফ হাসান। পাশাপাশি উন্নতির দিকেও তাগাদা দিলেন তিনি।
সাইফের ভাষ্য, ‘নিঃসন্দেহে টেস্ট ক্রিকেট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, এটাই আমাদের দক্ষতা দেখানোর সেরা মঞ্চ। যেহেতু আমি টেস্ট দলে আছি, নিজের শতভাগ পারসেন্ট দেয়ার চেষ্টা করব। আর এখানে আমাদের দক্ষতা বাড়ানোর অনেক জায়গা আছে।’
চলতি জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে যোগদান করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ব্যাটসম্যান অ্যাশওয়েল প্রিন্স। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আশা সাইফের।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ব্যাটিং কোচের কাছ থেকে অনেক অভিজ্ঞতা নেয়ার আছে। তিনি যেই দলে খেলেছেন, সেখানে অনেক কিংবদন্তি প্লেয়াররা ছিল। তার কাছ থেকে অনেক কিছু নেয়ার আছে। এ পর্যন্ত মাত্র একদিন কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আশা করি, উনার কাছ থেকে অনেক কিছু নিতে পারব।’
এসময় সাইফ জানান, জিম্বাবুয়ের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে না তাদের, ‘মাত্র আমরা আমাদের দেশ থেকে এসেছি, গ্রীষ্মকাল ছিল। তবে এখানের শীতকাল, দেশের শীতকালের মতোই। তাই মানিয়ে নিতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। সবকিছু সহজই আছে।’
তবে দেশ ছাড়ার আগে সবশেষ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলে গেছে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা। কিন্তু জিম্বাবুয়েতে প্রথমে খেলতে হবে টেস্ট ম্যাচ। পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে দ্রুত এর সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটাই সফলতা হিসেবে মনে করেন সাইফ।
তিনি বলেছেন, ‘পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের এ জিনিসটা খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নেয়া উচিত। আমরা শেষ যে টুর্নামেন্ট খেলছি, ডিপিএল টি-টোয়েন্টি ছিল। আবার এখানে আসছি চারদিনের (পাঁচ দিন) ম্যাচ। তো এটা আমাদের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ, খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে হবে। কারণ সবাই সব জায়গায় যখন খেলে, এরকমই খেলে। তাই মানিয়ে নেয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। যত তাড়াতাড়ি মানায় নিতে পারব, তত আমাদের জন্য সহজ হবে।’
এসএএস/এমকেএইচ