খেলোয়াড়দের মতো আম্পায়ারদেরও ‘ফর্ম’ থাকে
ক্রিকেট মাঠে আম্পায়ারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের যেকোনো সিদ্ধান্তে বদলে যেতে পারে ম্যাচের পুরো চিত্রনাট্য। আর ভুল সিদ্ধান্ত দিলে সেটি কখনও কখনও বদলে দেয় ম্যাচের ফলাফলই। তাই আম্পায়ারিংয়ের কাজটি নিবিড় মনোযোগ দিয়েই করতে হয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের।
সদ্যসমাপ্ত ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজে যা বেশ ভালোভাবেই করেছেন ভারতীয় আম্পায়ার নিতিন মেনন। সিরিজে বিদ্যমান চাপের কারণেই নিজের কাজটা ভালোভাবে করতে পেরেছে বলে মনে করেন ৩৭ বছর বয়সী এ আম্পায়ার। তার মতে, খেলোয়াড়দের যেমন ফর্ম থাকে, আম্পায়ারদেরও থাকে এটি।
গত বছরের জুনে আইসিসির এলিট প্যানেলভুক্ত আম্পায়ার হয়েছেন নিতিন মেনন। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বড় ম্যাচে দায়িত্ব পাওয়ার জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের চার টেস্ট, তিন টি-টোয়েন্টি ও তিন ওয়ানডেতে আম্পায়ারিং করেছেন তিনি।
দায়িত্ব পালনের এ সময়টায় সবার প্রশংসায় ভেসেছেন মেনন। কেননা প্রশংসাযোগ্য পারফরম্যান্সই ছিল তার। পুরো সিরিজে তার নেয়া ৩১টি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিল ভারত ও ইংল্যান্ড। এর মধ্যে মাত্র ৫টিতে সিদ্ধান্ত বদলেছে। বাকি ২৬টিতে মেননের সিদ্ধান্তই সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।
এমন সাফল্যমণ্ডিত এসাইনমেন্টের পর তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে সংবাদসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া। যেখানে মেনন বলেছেন, ‘গত দুই মাস অসাধারণ ছিল। যখন মানুষ নিজের ভালো কাজগুলো খেয়াল করে এবং ভালো কথা বলে, তখন খুব ভালো লাগে। এ সিরিজটি মোটেও সহজ ছিল না। সবকিছু মিলিয়ে অনেক চাপ ছিল এখানে।’
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দুই মাসের মধ্যে এতগুলো ম্যাচ কিংবা এত বেশি দিন আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করতে হতো না মেননকে। কঠিন অবস্থার মধ্যে ম্যাচের পর ম্যাচ সফলভাবে এ দায়িত্ব পালনের পেছনে মানসিক দৃঢ়তাকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন মেনন।
তার ভাষ্য, ‘আমার বিশ্বাস, আম্পায়ারিংয়ের বিষয়টা পুরোটা মানসিক শক্তিমত্তার ওপর নির্ভর করে। যত বেশি, তত বেশি মনোযোগ। চাপের মধ্যে যদি আমরা সেরাটা দিতে পারি, তাহলেই বোঝা যায় আমরা মানসিকভাবে কতটা দৃঢ়। টানা ম্যাচে আম্পায়ারিং করা আমার জন্য নতুন নয়। কারণ ভারতে অনেক বেশি ঘরোয়া ক্রিকেট হয়। কম-বেশি ৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ করতে হয় রঞ্জি ট্রফির সময়।’
মেনন আরও যোগ করেন, ‘এমনকি আইপিএলেও কোনো বিরতি ছাড়া আমরা ১৪ থেকে ১৬টা ম্যাচে দায়িত্ব পালন করি। তো এসব অভিজ্ঞতা এবারের সিরিজে কাজে গেছে। খেলোয়াড়দের মতো আম্পায়ারদেরও ফর্ম থাকে। আমার সবসময় মনে হয়, যখন আমি ফর্মে থাকি, তখন যত বেশি সম্ভব ম্যাচে আম্পায়ারিং করা উচিত।’
এসএএস/এমএস