ব্যাটে-বলে ‘বুড়ো’ দিলশানের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন ২০১৬ সালে, স্বীকৃত ক্রিকেটে সবশেষ খেলেছেন ২০১৭ সালে। বয়সের কাঁটাটা ৪৪ ছুঁয়েছে গত অক্টোবরে। কিন্তু তাতে কী? বিশ্ব ক্রিকেটের নামীদামী সব ‘বুড়ো’দের নিয়ে আয়োজিত রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে যেন ২৫ বছরের যুবক শ্রীলঙ্কান তিলকারাত্নে দিলশান।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ব্যাটে-বলে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করছেন শ্রীলঙ্কা লেজেন্ডস দলের অধিনায়ক তিলকারাত্নে দিলশান। সবকিছুকে ছাপিয়ে গেলেন রোববার রাতে ইংল্যান্ড লেজেন্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে। রীতিমতো একা হাতেই তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন কেভিন পিটারসেনের দলকে।
ভারতের রায়পুরে শহীদ বীর নারায়ণ সিং স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড লেজেন্ডসের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জিতেছে শ্রীলঙ্কা লেজেন্ডস। যেখানে দিলশানের পারফরম্যান্স বল হাতে ৬ রানে ৪ উইকেট এবং ব্যাটিংয়ে ২৬ বলে ৬১ রানের অপরাজিত টর্নেডো ইনিংস। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।
ম্যাচটিতে আগে টস হেরে ব্যাট করে দিলশানের স্পিনঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে পুরো ২০ ওভার খেলেও ৯ উইকেট হারিয়ে ৭৮ রানের বেশি করতে পারেনি ইংল্যান্ড। জবাবে ৪ উইকেট হারালেও দিলশানের মারকাটারি ব্যাটিংয়ে মাত্র ৭.৩ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে লঙ্কান লেজেন্ডস।
ইংল্যান্ড লেজেন্ডসকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রথম ওভারেই বল হাতে তুলে নেন লঙ্কান দলের অধিনায়ক দিলশান। ম্যাচের একদম প্রথম বলেই তিনি লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন ফিল মাস্টার্ডকে। নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সাজঘরে পাঠান উসমান আফজালকে। একই ওভারে সাজঘরের পথ দেখান কেভিন পিটারসেনকেও।
দিলশানের এই স্পিন বিষে মাত্র ৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। নিজের প্রথম স্পেলে দিলশানের বোলিং ফিগার ছিল ২-১-১-৩। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন রঙ্গনা হেরাথ, নুয়ান কুলসেকারারা। যার ফলে প্রথম পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে মাত্র ৬ রান করতে পারে ইংল্যান্ড। ইনিংসের অষ্টম ওভারে গিয়ে প্রথম বাউন্ডারি পায় তারা।
দশম ওভারে দ্বিতীয়বারের মতো আক্রমণে আসেন দিলশান। এবারের ওভারের শেষ বলে ফেরান ২৪ বল খেলে ৬ রান করা ওয়াইজ শাহকে। দশ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ২২ রান। মাঝে চতুর্থ উইকেটটি শিকার করেন কৌশল্য বীরারত্নে। নিজের শেষ ওভারে আর উইকেট পাননি দিলশান। ফলে তার বোলিং শেষ হয় ৪-১-৬-৪ ফিগার নিয়ে।
শেষদিকে ক্রিস ট্রেমলেটের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে কিছু রান তুলতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড। ডানহাতি এ দীর্ঘদেহী পেসার ৩ ছক্কার মারে করেন ১০ বলে ২২ রান। এছাড়া জিম ট্রাউটন ২২ বল খেলে করেন ১৮ রান। আর কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। শেষপর্যন্ত ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ৭৮ রানে।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দিলশান ব্যতীত আর কেউই রানের দেখা পাননি। অবশ্য এর দরকারও পড়েনি। ইংল্যান্ডের বোলারদের বেধড়ক পিটুনি দিয়ে ১১ চার ও ১ ছয়ের মারে ২৬ বলে অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস খেলেন দিলশান। এতেই মাত্র ৭.৩ ওভারে ৮১ রান করে ফেলে শ্রীলঙ্কা, পায় ৬ উইকেটের জয়।
এসএএস/জেআইএম