নিষেধাজ্ঞা কাটিয়েই কি টেস্ট খেলতে নেমে যেতে পারবেন সাকিব?
শুধু সাকিব ভক্তদের কথা বলা কেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের রাতে ঘুম হচ্ছে না একদমই। তাদের সামনে এখন ‘এক টিকেটে দুই ছবি’ দেখার সুবর্ণ সুযোগ। প্রিয় জাতীয় দলের মাঠে ফেরা আর পছন্দের তারকা সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞামুক্তি এবং তারও ব্যাট-বল হাতে মাঠে নামার হাতছানি।
সব মিলে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে রীতিমত অন্যরকম উত্তেজনা, শিহরণ। একটা দারুণ অনুভূতি নাড়া দিচ্ছে সবাইকে। ভক্ত ও সমর্থকদের বড় অংশ মুখিয়ে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে আবার ব্যাট ও বল হাতে মাঠে দেখতে।
অনেকের মনেই কৌতুহলী প্রশ্ন উকি ঝুঁকি দিচ্ছে-‘আচ্ছা, আগামী ২৯ অক্টোবরই তো আইসিসির নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হচ্ছেন সাকিব, শ্রীলঙ্কা সফরের সম্ভাব্য সূচি দেখে মনে হচ্ছে তখন সবে প্রথম টেস্ট শেষ হবে। তবে কি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই আবার মাঠে নামবেন 'চ্যাম্পিয়ন' সাকিব?’
এদিকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কথায় নড়েচড়ে বসেছেন সাকিব ভক্তরা। তাদের আশা, উৎসাহ ও উদ্দীপনা বেড়েছে বহুগুণে। বোর্ড প্রধান এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, সাকিবকে দ্বিতীয় টেস্টেই দেখতে চান।
আর তাতেই আশার প্রহর গুনছেন ভক্ত ও সমর্থকরা। কবে শেষ হবে প্রথম টেস্ট? কখন শুরু বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় টেস্ট? কবে সাকিবকে আবার ব্যাট ও বল হাতে মাঠ মাতাতে দেখা যাবে?
বিসিবি বস দিনক্ষণের হিসেবটা ভালোই কষেছেন। তিনিও জানেন, প্রথম টেস্ট শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ২৪ অক্টোবর। ৫ দিন পুরো খেলা হলে সেই ম্যাচ শেষ হবে ২৮ অক্টোবর। আর ২৯ অক্টোবর মুক্ত হয়ে যাবেন সাকিব। ধরা হচ্ছে, তিন থেকে চার দিন পর মানে ৩১ অক্টোবর না হয় ১ নভেম্বর শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। আর সেখানেই সাকিবকে খেলানোর চিন্তা পাপনের।
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ঠিক আছে। আইসিসি চেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মত মর্যাদাপূর্ণ লড়াই, যেখানে র্যাঙ্কিং আর পয়েন্টের হিসেব আছে। এমন জায়গায় সাকিবের মত অপরিহার্য ও সেরা ক্রিকেটার দলে থাকা মানে শক্তি, উদ্যম ও সামর্থ্য বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া। আর টেস্টে সাকিবের বোলিং এখনো বাংলাদেশের মূল শক্তি।
এ বাঁহাতি স্পিনারই দীর্ঘ পরিসরের খেলায় বাংলাদেশের এক নম্বর উইকেট শিকারি বোলার। সাথে ব্যাটিংটাও অনেক বড় সম্পদ। বোর্ড সভাপতিও তা মাথায় এনেছেন। তিনিও ভেবেছেন, সাকিবের কাছ থেকে যত বেশি সার্ভিস পাওয়া যায়, তত মঙ্গল। আর তাই তাকে তিন টেস্ট ম্যাচের অন্তত দুটিতে খেলানোর চিন্তা।
বিসিবি সভাপতির ইচ্ছে ঠিক আছে। তবে তার বাস্তবায়ন নিয়ে আছে সংশয়। প্রশ্ন উঠেছে, সেটা কতটা বাস্তব? এক বছরের বেশি সময় ক্রিকেটের বাইরে থেকে নিষেধাজ্ঞা মুক্তির ৭২ ঘন্টা পরই ৫ দিনের টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারবেন সাকিব?
সাকিবের জন্য অবশ্য সবই সম্ভব। তিনি শতভাগ পেশাদার। মাঠে নামার আগেই নিজেকে তৈরি করার কৌশল তার খুব ভালোই জানা। দলের সাথে না থেকে একা একাও যে নিজেকে পুরোপুুরি প্রস্তুত করে ফেলা সম্ভব এবং জায়গামত সেরা পারফরম করা যায়, সাকিব তা গত বিশ্বকাপেই দেখিয়েছেন।
কাজেই এক বছর নিষিদ্ধ থাকার পর মাঠে ফিরেও যে সাকিব বড় কিছু করতে চাইবেন এবং তার সে সক্ষমতা আছে, সেটা নিয়ে সংশয়-সন্দেহ নেই অতিবড় সাকিব বিরোধীরও। এবারও আমেরিকা থেকে ফেরার আগেই বিকেএসপির দুই শিক্ষক, গুরু ও মেন্টর মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আর নাজমুল আবেদিন ফাহিমের সাখে কথা বলে রেখেছেন।
দেশে ফিরে বিকেএসপিতে নিবিড় অনুশীলনে সাকিব কাটাবেন বেশ কিছুদিন। কাজেই ধরে নেয়া যায়, সাকিব হয়তো দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে ফেরার জন্য নিজেকে ঠিক তৈরি করে ফেলবেন। সে প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি, দৃঢ় সংকল্প ও সদিচ্ছা তার পুরোপুরিই আছে। এখন দেখার বিষয়, তার ফেরাটা কেমন হয়!
এআরবি/এমএমআর/পিআর