আবার জাতীয় দলে ফিরতে চান সাব্বির
ছুটির পর আবার ক্রিকেটারদের কলতানে মুখর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ঈদের পর অনুশীলনে বেড়েছে ক্রিকেটারদের সংখ্যা। ঈদের আগের তুলনায় ঈদের পর আজ (রোববার) দ্বিতীয় দিনে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
নতুন করে যুক্ত হওয়া ক্রিকেটারদের তালিকায় আছেন সাব্বির রহমান রুম্মনও। মাঝে কয়েক বছর মাঠের বাইরের নানা নেতিবাচক ঘটনায় সমালোচিত এই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান। বিতর্ক যেন তার পিছুই ছাড়ে না।
এই কয়েক মাস আগেও একবার বাড়ির সামনে এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সাথে বচসায় লিপ্ত হয়েছিলেন। তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছিল ভুল বোঝাবুঝির। ছড়িয়ে পড়েছিল, তিনি বাড়ির সামনে ময়লা-আবর্জনার গাড়ি রাখা নিয়ে ওই পরিচ্ছন্নতা কর্মীর গায়ে হাত তুলেছেন। পরে জাগো নিউজে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন সাব্বির। জানান, তিনি গায়ে হাত তোলেননি। তবে বচসায় লিপ্ত হয়েছিলেন।
এদিকে সমালোচনার মুখে পড়ার আগে থেকেই ভুগছেন অফফর্মে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার পছন্দ ও বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ ভালো খেললেও জায়গামত পারফর্ম করতে পারেননি। তা নিয়েও হয়েছে বিস্তর কথাবার্তা। সব মিলে অমিত সম্ভাবনা নিয়ে আসা সাব্বিরের দিনকাল ভালো কাটছে না।
এবার তাই নিজেকে আবার ঘষে মেজে উপস্থাপনের চিন্তা। প্রাণপন চেষ্টা। সে লক্ষ্য নিয়েই এবার ব্যক্তিগত অনুশীলনে যোগ দেয়া। আজ অনেকদিন পর অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন।
যেহেতু ক্রিকেটারের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই রোস্টার মেলাতে এখন দুই শিফটে হচ্ছে প্র্যাকটিস। এক শিফট সকালে, আর অন্য শিফট দুপুরে। পরের শিফটে প্র্যাকটিস করা সাব্বির অনেকদিন পর মাঠে নেমে নিজের অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে খানিক আবেগতাড়িৎ হয়ে পড়েছিলেন।
সাব্বির বলেন, ‘প্রায় চার মাস পর মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে এলাম। অনুভূতি প্রকাশ করতে পারব না। তবে খুব ভালো লাগছে। মিরপুর স্টেডিয়ামে অনেক দিন পর একটু ব্যাটিং করলাম। বিসিবি থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। সেগুলো মেনে চলছি। খুব ভালো সুযোগ সুবিধা। ওয়ান বাই ওয়ান অনুশীলন হচ্ছে। সবাই সবার সময় ধরে রাখছে। দুপুরে আমার সময় ছিল। আমি সময়মতো অনুশীলন করেছি।’
করোনার কারণে প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ হয়েছে সেই মার্চের ২০ তারিখের আগে। লিগ বন্ধের পর লকডাউন পুরোদমে শুরুর হতেই ঢাকা ছেড়ে নিজ শহর রাজশাহীতে চলে যান সাব্বির। সেখানে ফিজিক্যাল ট্রেনিং মানে জিমওয়ার্ক করেছেন। পুরোপুুরি ও যথাযথভাবে সম্ভব না হলেও স্কিল ট্রেনিংটাও চালিয়ে গেছেন মোটামুটি।
তবে সেটাকে অপর্যাপ্ত ও অপ্রতুল মনে হয় তার। তাই মুখে এমন কথা, ‘আমার বাসা রাজশাহী। আমি ২৫ মার্চ রাজশাহী চলে গিয়েছিলাম। ওখানে অনুশীলনের সুযোগ পাইনি। করোনার কারণে নিজেকে বন্দী রেখেছিলাম। পরিবারের সঙ্গে হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম। বাসায় কিছু জিম ওয়ার্ক করেছি। আস্তে আস্তে রাজশাহীর ইনডোরে কাজ করেছি। ওখানে যখন কেউ থাকত না তখন একা গিয়ে অনুশীলন করেছি। এছাড়া ক্লেমনের একটি জিম আছে। সেখানে একাই সন্ধ্যায় বা সকালে জিম করেছি। এছাড়া ইনডোরে ব্যাটিং-বোলিং করেছি।’
করোনার মধ্যেই আবার সব কিছু আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হচ্ছে। ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষ হয়েছে। চলছে পাকিস্তান-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ। টিভিতে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর পাকিস্তানের খেলা দেখছেন সাব্বির। নিজেও মুখিয়ে আছেন মাঠে নামতে। আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার তাড়াটাও খুব বেশি করে অনুভব করছেন।
সাব্বিরের ভাষায়, ‘সব খেলোয়াড়রাই অপেক্ষায় আছে কবে খেলা শুরু হবে। মাঝে মাঝে বিরক্তিও চলে এসেছে। অনেক দিন পার হয়ে গেছে। ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান এখন খেলছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজও কিছুদিন আগে খেলেছে। দেখে ভালো লেগেছে যে, খেলা তো শুরু হয়েছে। আমাদের দেশে কিংবা অন্যান্য দেশে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব দ্রুতই আমরাও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলব। উম্মুখ হয়ে আছি খেলার জন্য। এখন অনুশীলন করছি নিজেকে ফিট ও ভালো রাখার জন্য। আশা করছি খেলা শুরু হলে ভালো কিছু করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।’
এআরবি/এমএমআর/জেআইএম