ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

করোনা পরবর্তী ক্রিকেটে যা করা যাবে, যা করা যাবে না

ক্রীড়া প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৫৮ এএম, ২৩ মে ২০২০

গত আড়াই-তিন মাস ধরে সারাবিশ্বেই বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার কথা বলা হচ্ছে গুরুত্বের সঙ্গে। মহামারী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা সরকারের পক্ষ থেকেও দেয়া হয়েছে নানান বিধিনিষেধ।

এবার তেমনই কিছু বিধিনিষেধের প্রণয়ন করল ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। করোনাকে জয় করে ক্রিকেট মাঠে ফেরানোর জন্য নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করেছে আইসিসি। সব দেশের ক্রিকেট বোর্ড, খেলোয়াড় এমনকি আম্পায়ারদেরও মানতে হবে এসব নিয়মকানুন।

যার মধ্যে রয়েছে, মাঠ ও মাঠের বাইরে প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা; খেলোয়াড়রা আর কখনও আম্পায়ারদের কাছে নিজের ক্যাপ, সানগ্লাস কিংবা সোয়েটার দিতে পারবে না; প্রতিবার বল ধরার পর হাত স্যানিটাইজ করে নিতে হবে; আম্পায়াররা বল ধরার সময় গ্লাভস ব্যবহার করবেন।

এমন বেশ কিছু নিয়ম জানিয়ে শুক্রবার 'ক্রিকেট ফেরানোর গাইডলাইন' নামে একটি বিশদ ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছে আইসিসি। যেখানে আন্তর্জাতিক, ঘরোয়া এমনকি কমিউনিটি ক্রিকেটের জন্যও দেয়া হয়েছে নির্দিষ্ট নীতিমালা। তবে সবকিছুর ক্ষেত্রেই স্ব-স্ব সরকারের বিধিনিষেধের কথাও বলা হয়েছে।

আইসিসির গাইডলাইনের উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো:

খেলোয়াড়-আম্পায়ারদের সার্বক্ষণিক সামাজিক দূরত্ব

প্রকাশিত ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, 'ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড় এবং আম্পায়ারদের অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। যার ফলে কারও ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিস (যেমন ক্যাপ, সানগ্লাস, তোয়ালে কিংবা সোয়েটার) অন্য খেলোয়াড় বা আম্পায়ারের কাছে দেয়া যাবে না। বোলারদের নিজেদের ব্যবহার্য জিনিস রাখার জন্য একটা ব্যবস্থা করতে হবে। আম্পায়ারদেরও বল ধরার সময় গ্লাভস ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে।'

সামাজিক দূরত্বের বিধান শুধু মাঠের খেলা শুরুর সময়েই না, মানতে হবে অনুশীলনেও। দুজন খেলোয়াড়ের মধ্যে দেড় মিটার (কিংবা স্ব-স্ব সরকারের বিধান) দূরত্ব বজায় রাখা অত্যাবশক। খেলোয়াড়দের বাসা থেকেই তৈরি হয়ে মাঠে আসার ব্যাপারেও উৎসাহিত করছে আইসিসি। মাঠের ড্রেসিংরুম কিংবা চেঞ্জিং রুম ব্যবহারের সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অনুসরণ।

এছাড়া শারীরিক স্পর্শের মাধ্যমে সাফল্য উদযাপন, পানি কিংবা জুসের বোতল ও একই তোয়ালে একের অধিক ব্যক্তির ব্যবহার করা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এসবের ব্যাপারেও নিরুৎসাহিত করছে আইসিসি।

ক্রিকেট বল হতে পারে ভাইরাসের বাহক

অন্যসব বিধিনিষেধ মানলেও সবাইকে ব্যবহার করতে হবে একটি বল। ফলে ভাইরাসের বাহক হতে পারে ক্রিকেট বল। এই ঝুঁকি কমাতে ক্রিকেট বলে লালার ব্যবহার বন্ধ করতে বলেছে আইসিসি। তবে বলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ঘাম ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছে তারা।

এ বিষয়ে আইসিসির গাইডলাইনে বলা হয়েছে, 'খেলোয়াড়দেরকে বল ম্যানেজম্যান্টের স্বচ্ছ ধারণা দিন। এর মধ্যে থাকবে বল ধরার পর নিয়মিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা; মাঠের মধ্যে যেহেতু বারবার বল ধরতেই হবে, তাই তখন চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ না করা এবং ভুলক্রমেও বলের লালা ব্যবহার না করা।

কোন খেলোয়াড় কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হলে?

আইসিসির গাইডলাইনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি কোন খেলোয়াড়, ম্যাচ অফিসিয়াল বা সাপোর্ট স্টাফের সদস্যরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে চলতি ম্যাচের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে আইসিসি জানিয়েছে, তখন সংশ্লিষ্ট সবাইকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হবে।

গাইডলাইন ডকুমেন্টে লেখা রয়েছে, 'সাধারণভাবেই ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের কাছাকাছি থাকা এবং বিভিন্ন সুবিধাদি ভাগ করে নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। ফলে কোন খেলোয়াড় বা সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির মধ্যে যদি করোনার উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে সেখানের প্রত্যেককে আইসোলেশনে থাকতে হবে এবং যারা কাছাকাছি থাকবে তাদের নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।'

ম্যাচ অফিসিয়ালরা অধিক ঝুঁকিতে

যেহেতু ধরা হয় যে, ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তাই ম্যাচ রেফারি, আম্পায়ার এমনকি টিমের সাপোর্ট স্টাফের সদস্যদের এই ক্যাটাগরিতে রেখেছে আইসিসি। যে কারণে এসব ব্যক্তিদের কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা কিংবা আগের অসুস্থতা থাকলে তাদের দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার ব্যাপারেও নিরুৎসাহিত করেছে আইসিসি। শুধু ষাটোর্ধ্ব নয়, আগের অসুস্থতার ইতিহাস থাকলে যে কাউকেই বাড়তি সতর্কতা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে।

এসএএস/এমএস