চালাকি করতে গিয়েই ‘গলায় দড়ি’ আকমলের
প্রায় একই ধরনের অপরাধে সম্প্রতি তার দুই সতীর্থ খেলোয়াড় মোহাম্মদ ইরফান পেয়েছিলেন ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা (আরও ৬ মাস স্থগিত), মোহাম্মদ নাওয়াজকে বাইরে থাকতে হয়েছিল মাত্র ২ মাস। সবশেষ বিশ্বতারকা সাকিব আল হাসানকে দেয়া হয়েছে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা। যার মধ্যে একবছর আবার স্থগিত করা হয়েছে শুরুতেই।
কিন্তু পাকিস্তানি ক্রিকেটার উমর আকমলকে সরাসরি দেয়া হয়েছে ৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা। রাখা হয়নি কোন স্থগিতাদেশও। অর্থাৎ পূর্ণ মেয়াদে তিন বছর সাজা ভোগ করেই তবে ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন এ পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
মূলত ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দুইবার ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও সেগুলো গোপন রাখার কারণেই সাজা পেতে হয়েছে উমরকে। একই অপরাধ ছিল সাকিব, ইরফান, নাওয়াজদের। তবে সাকিবসহ উল্লিখিত ক্রিকেটাররা গোপন রাখার অপরাধ সরাসরি মেনে নিয়েছিলেন।
কিন্তু নিজের অপরাধ না মেনে উল্টো চালাকির মাধ্যমে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি করে নিজের পক্ষে অসাঢ় সাফাই গেয়েছেন। যার ছিল না কোন ভিত্তি। তাই পিসিবির ডিসিপ্লিনারি প্যানেল কঠোর শাস্তিই দিয়েছে তাকে। বলা যায় অতি চালাকি করতে গিয়েই গলায় দড়ি পড়ল আকমলের।
আনুষ্ঠানিক শুনানিতে একাই হাজির হয়েছিলেন আকমল। তার সঙ্গে ছিল না কোন আইনজীবী। সেখানে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব বোর্ডকে না জানানোর অপরাধটির পক্ষে যৌক্তিকতা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলেন আকমল। অথচ এই অপরাধ করেও তার মধ্যে ছিল না কোন অনুতাপ।
শুনানি শেষে পিসিবির কৌসুলি তাফাজ্জুল রিজভী মিডিয়াতে বলেন, ‘নিজের দোষকে সমর্থন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল আকমল। তার জবাব ছিল বিভ্রান্তিকর। সে কখনওই নিজের দোষ মেনে নেয়নি আবার অস্বীকারও করেনি। তাকে যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, সেগুলো মেনে নিয়েছে। তবু না জানানোর অপরাধ স্বীকার না করে, বরং কেন জানায়নি সে বিষয়ে অসাঢ় যুক্তিস্থাপন করছিল। কিন্তু এর কোন সুযোগ নেই। হয় তুমি জানিয়েছ না হয় গোপন রেখেছ। মাঝামাঝি কিছু নেই।’
তবু আকমলের জন্য একটি সুযোগ রেখেছিলেন বিচারপতি। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল নিজের অপরাধ স্বীকার করছেন কি না। স্বীকার করলে হয়তো ইরফানের মতো স্বল্প মেয়াদের শাস্তিই পেতেন আকমল। তা না করে বারবার সাফাই গেয়ে গেছেন তিনি। ফলে শাস্তির মাত্রাটাও বেড়েছে চক্রবৃদ্ধি হারে।
তাফাজ্জুল বলেন, ‘আজকেও সম্মানিত বিচারক তাকে (আকমল) পরিষ্কারভাবে জিজ্ঞেস করেছে, যদি সে নিজের দোষ স্বীকার করে নেয়। কিন্তু আকমল বারবার নিজের পক্ষেই কথা বলছিল। ফলে তাকে দুইবার প্রস্তাব গোপন রাখার শাস্তিই দেয়া হয়েছে। এর আগে ইরফানকে কম সাজা দেয়া হয়েছিল কারণ সে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছিল। কিন্তু আকমল পুরো বিপরীত কাজই করেছে।’
এসএএস/জেআইএম