নিজেকে নির্দোষ দাবি করে যা বললেন জাভেদ ওমর
অভিযোগ গুরুতর। এক নম্বর হচ্ছে, তার আচরণ সন্দেজনক। দুই নম্বর, তিনি নাকি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় তথ্য পাচার করে ছিলেন এবং সে কারণেই আইসিসি নাকি ভবিষ্যতে জাভেদ ওমর বেলিমকে টিম ম্যানেজমেন্টের অংশ না করার নির্দেশনা দিয়েছে বিসিবিকে।
রীতিমত গরম ও চাঞ্চল্যকর খবর। প্রকাশিত খবরে অবশ্য বিসিবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তার যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, সেটার সত্যতা ও নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, খোদ বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দীন চৌধুরী সুজন জানিয়ে দিয়েছেন, ‘জাভেদ ওমর বেলিমের বিপক্ষে আইসিসি আমাদের, তথা বিসিবির কাছে কোন অভিযোগ করেনি। আমরা আইসিসির কাছ থেকে তার আচরণ সন্দেহজনক এবং তাকে ভবিষ্যতে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কোন দায়িত্ব না দেই- এমন কোন নির্দেশনাও পাইনি।
জাগো নিউজের পাঠকদের সামনে আগেই তা তুলে ধরা হয়েছে। যার বিপক্ষে এমন অভিযোগ সেই জভেদ ওমর বেলিম কি বলছেন? তার ভাষ্যই বা কি?
তা জানতে সকাল থেকেই মিডিয়ার ফোন। বাসায় টেলিভিশন ক্যামেরা ও রিপোর্টার ছুটে আসা। ভিডিও কনফারেন্সে বিষয়টির ব্যাখ্যা চাওয়া। তবে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোন টেলিভিশন চ্যানেলে ইন্টারভিউ দেননি জাভেদ ওমর। শুধু টেলিফোনে কথা বলেছেন।
জাগো নিউজের সাথে আজ দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার আগে মুঠোফোন আলাপে পুরো বিষয়টি নিয়ে একান্তে কথা বলেছেন জাতীয় দলের এই সাবেক ওপেনার। সেখানে জাভেদ ওমর এমন অভিযোগকে নির্জলা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন। তার সোজা-সাপটা উত্তর, ‘আমার বিপক্ষে এত বড় অভিযোগ, সবার আগে জানবে আমার ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। তারা জানে না, সিইও সকালবেলা আমাকে ফোনে জানালেন, না না, আইসিসি থেকে এমন কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি। আপনার বিপক্ষে কোন অভিযোগও করেনি আইসিসি।’
জাভেদ আরও বলেন, ‘আমি আসলে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম কি করবো? বিষয়টি স্পর্শকাতর। আমার ক্যারিয়ার শুধু নয়, আমার ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনেও একটা কালো দাগের আঁচড়। তবে বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দীন চৌধুরী সুজন আমাকে বলেছেন, যেহেতু অভিযোগটি সত্য নয়। ভিত্তিহীন, তাই ব্যাখ্যা যা দেবার বিসিবিই দেবে। আমাকে অফিসিয়ালি এ ব্যাপারে কোন বিবৃতি না দেয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। তাই আমি এখনো কোন টিভিতে ইন্টারভিউও দেইনি।’
এত বড় অভিযোগে অস্থির জাভেদ ওমর জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি আমার খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলাম নিট অ্যান্ড ক্লিন, প্রথমবারের মত নারী দলের ম্যানেজার হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ছিলাম ভাল করতে এবং মেয়েদের পাশে থাকতে সদা তৎপর। সেখানে এমন একটা অভিযোগ, সত্যিই খুব খারাপ লেগেছে। আমার বিশ্বাস, আমি একটি পা’ও ভুল পথে ফেলিনি। মনে হয় না, আামার কোন কার্যক্রম বা পদক্ষেপে ঊনিশ-বিশ হয়েছে।’
জাভেদ আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘কারো একটি উড়ো মন্তব্যে যে আমার ব্যক্তি জীবনের ওপর একটা বড়সড় দাগ লাগলো, আমি যে সমাজ, দেশ ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সমালোচনার পাত্র হলাম- এটা অনেক বড় মানসিক ধাক্কা ও যন্ত্রনা। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, আমার বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ প্রমাণ হলে যে কোন শাস্তি আমি মাথা পেতে নিব।’
জাভেদের শেষ কথা, ‘যে অভিযোগ করুক না কেন, সবচেয়ে বড় কথা আমার দেশের বোর্ড আমার পক্ষে। আইসিসিও বোর্ডকে কোন অভিযোগ করেনি এবং নির্দেশনাও দেয়নি- খোদ বিসিবি সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন আমাকে এটা পরিষ্কার জানিয়েছেন এবং বিব্রত ও অস্থির না হবার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই আমি কোন আইনী অ্যাকশনে যেতে চাই না। তবে এটা ঠিক, যদি বোর্ড আমার বিপক্ষে অভিযোগ আনতো, তাহলে আমি নিজেকে ডিফেন্ড করার জন্য অবশ্যই আইনের আশ্রয় নিতাম। যেহেতু তা হয়নি। আইসিসি আর বিসিবি কেউই আমার বিপক্ষে কোন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেনি, তাই আমি আপাততঃ কোনোরকম লিগ্যাল অ্যাকশনে যাব না। দেখি পুরো বিষয়টা বিসিবি কিভাবে ট্যাকল করে।’
এআরবি/আইএইচএস