পাকিস্তান সফর বাতিলের ইঙ্গিত বিসিবি সভাপতির
করোনা পরিস্থিতি দিনকে দিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। খেলাধুলার অনেক বৈশ্বিক আসরই সাময়িকভাবে বন্ধ। দক্ষিণ আফ্রিকার ভারত সফর স্থগিত হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ড সিরিজও বন্ধ। ভারতের আইপিএলও পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। গুঞ্জন আছে, আইপিএল হলেও তা হতে পারে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে।
এরকম নেতিবাচক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পাকিস্তান সফর কি হবে? এক ওয়ানডে ও এক টেস্ট খেলার জন্য চলতি মাসের শেষদিকে যে টাইগারদের করাচি যাওয়ার কথা আছে, তা কি হবে? এরকম সময়োচিত ইস্যু নিয়ে আজ (শনিবার) সকালে কথা বলেছেন বিসিবি সিইও নিজাম উদ্দীন চৌধুরী সুজন।
তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, যেহেতু পাকিস্তান স্বাগতিক। তাই তারা (বিসিবি) তাকিয়ে পিসিবির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। বিসিবি সিইও আরও জানান, পাকিস্তানে চলতি পিএসএল থেকে জনাদশেক ভিনদেশি ক্রিকেটার নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছেন। বিসিবি প্রধান নির্বাহীর শেষ ভাবটা এমন, আমরা সফরকারী দেশ। যেকোনো মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তবে স্বাগতিক যেহেতু পাকিস্তান, তাই সিদ্ধান্তটা পিসিবির পক্ষ থেকেই আসুক।
পরে পড়ন্ত বিকেলে ঠিক মাগরিবের আজানের আগে একই বিষয়ে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। ভাবা হচ্ছিল, বিসিবি প্রধান হয়তো সরাসরি পাকিস্তান সফর বাতিলের ঘোষণা দেবেন। তবে তিনি সরাসরি তা বলেননি। জাতীয় দল আপাতত পাকিস্তান যাবে না- সরাসরি এমন ঘোষণা আসেনি বিসিবি প্রধানের মুখ থেকে।
সিইও নিজাম উদ্দীন চৌধুরী সকালে যে সুরে কথা বলেছেন, বিকেলে বিসিবি সভাপতিও অনেকটা তাই বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘পিসিবির সঙ্গে কথা বলে দুই-এক দিনের ভেতর আমরা সিদ্ধান্ত জানাবো।’
বিসিবি সভাপতি সারা বিশ্বের পরিবেশ-পরিস্থিতির আলোকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া এখন শুধু দুই দেশের সরকার, বোর্ডের হাতেই সীমাবদ্ধ নেই। করোনার কারণে অনেক দেশের সাথে বিমান যোগাযোগও প্রায় বন্ধ হবার উপক্রম। তাই বিষয়টি দিনকে দিন জটিলই হয়ে পড়েছে এবং অনিশ্চয়তাও এসে ভর করেছে।
তাই তো বিসিবি বিগ বসের মুখে এমন কথা, ‘চতুর্দিকে চলাচলে অনেক কড়াকড়ি ও নিরাপত্তার বেষ্টনি চলে এসেছে। কাজেই অনিশ্চিয়তা তো আছে। আমরা অপেক্ষা করছি, আশা করছি যে কাল পরশুর মধ্যেই চূড়ান্ত একটা কিছু হয়ে যাবে। এটা ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়াধীন আছে। কাল পরশুর মধ্যেই ফাইনাল একটা কিছু জানাতে পারব। তবে যেটা বললাম সব জায়গায় যেভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে, তাতে সম্ভাবনা আসলে... খুবই কঠিন।’
শোনা যাচ্ছে পিসিবি নাকি ভেন্যু বদলের কথা বলেছে। বিসিবি প্রধান সেই প্রস্তাবকে অমূলক বলে অভিহিত করেছেন। এ সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা, ‘ভেন্যুর সঙ্গে তো ট্রাভেল রেস্ট্রিকশনের সম্পর্ক নেই। কেউ তো বলতে পারবে না, ওমুক দেশে যেতে পারবা, কিন্তু ওমুক ভেন্যুতে যেতে পারবে না। এমন তো আর না। দেশের বাইরে যাওয়া আসা এটাই তো নিষেধাজ্ঞা। এই যে শ্রীলঙ্কা, ভারতে যেটা হয়েছে, বাইরে থেকে দেশে গেলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন। আমাদের প্লেয়ারদের যদি ফিরে এসে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়, তাহলে তো মুশকিল। এইগুলো আপনাদের জানতে হবে, বুঝতে হবে। যতদিন যাচ্ছে রেস্ট্রিকশন বাড়ছে। এই জন্য হয়তো এটা আমাদের অন্য সময় করতে হতে পারে।’
বিসিবি সভাপতি অন্য দেশের সিরিজগুলোর উদাহরণ টেনে বলেন, ‘আপনারা যদি দেখেন, বাইরের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিরিজই এখন বন্ধ হয়ে গেছে। আইপিএলের মত টুর্নামেন্টও পিছিয়ে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সবাই যখন পিছিয়ে দিয়েছে, শুধু আমাদের জন্য নয়, সবার জন্যই চিন্তার বিষয়।’
এআরবি/এসএএস/জেআইএম