ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

রকিবুল-সাঙ্গাকারাকে ছাড়িয়ে তামিমের আরেক রেকর্ড

শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ | প্রকাশিত: ০২:১১ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

‘আশ্চর্য্য! মেয়েটা রেগে গেল কেন?’- জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের কালজয়ী ধারাবাহিক নাটক ‘আজ রবিবার’ এর পরিচিত চরিত্র আনিস ভাইয়ের (জাহিদ হাসান) মুখ থেকে বের হওয়া বিখ্যাত সংলাপ এটি। প্রায় ত্রিশ বছর আগের এ নাটকের সংলাপ ২০২০ সালে বিসিএলের দল মধ্যাঞ্চলের খেলোয়াড়দের মনে ঘুরতেই পারে।

এক্ষেত্রে মেয়েটার জায়গায় হবে পূর্বাঞ্চলের ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের নাম ও আনিস ভাইয়ের জায়গায় বসানো যায় মধ্যাঞ্চলের খেলোয়াড়দের। ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি পূরণ করার পর যে রূদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন তামিম, তাতে মধ্যাঞ্চলের খেলোয়াড়দের মুখে মনের অজান্তেই বের হয়ে যেতে পারে, ‘আশ্চর্য্য! তামিমটা রেগে গেল কেন?’

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের অষ্টম আসরের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে পূর্বাঞ্চলের হয়ে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে তিনশ রান করেছেন দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। পূর্বাঞ্চলের ইনিংস ঘোষণার আগে তামিম অপরাজিত ছিলেন ৩৩৪ রানে। যা ভেঙে দিয়েছে একাধিক রেকর্ড।

শনিবার ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন তামিম। দিন শেষে ২৮১ বল খেলে অপরাজিত ছিলেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ২২২ রান করে। আজ (রোববার) সকালে একই ডঙে খেলে ৩১৫ বলে ছুঁয়ে ফেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম আড়াইশ রানের মাইলফলকও।

Tamim

এরপরই কেমন যেন খোলসবন্দী হয়ে পড়েন তামিম। আড়াইশ থেকে থেকে তিনশতে যেতে ৯২টি বল লেগেছে তামিমের। যা কি না তার এ ইনিংসের প্রথম পাঁচ ফিফটির চেয়ে ধীরতম। সবমিলিয়ে ৫৬০ মিনিটে ১০৯টি সিঙ্গেল, ১৪টি ডাবল, ১টি ট্রিপল ও ৪০টি বাউন্ডারির মাধ্যমে তিনশ রান করেন তামিম।

তবে তিনশ পূরণ হওয়ার পরই আবার ভিন্ন রূপ তামিমের ব্যাটে। যেখানে প্রথম ৪০৭ বল খেলেও একবারের জন্যও ছক্কা হাঁকাতে যাননি তিনি, সেখানে তিনশ হওয়ার পর মুখোমুখি ১৫তম বলেই হাঁকান ছক্কা। পরের চার বলে হাওয়ায় ভাসিয়ে বল সীমানা ছাড়া করেন আরও দুইবার। ১৪০তম ওভারের পঞ্চম বলে তামিম তার ইনিংসের তৃতীয় ছক্কা হাঁকানোর পরপরই ইনিংস ঘোষণা করেন পূর্বাঞ্চল অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ।

তার আগে তামিমের নামের পাশে জমা হয় ৪২৬ বলে ৪২ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৩৩৪ রানের অপরাজিত এক ইনিংস। অর্থাৎ ৪০৭ বলে তিনশ করার পর খেলা ১৯ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৩৪ রান করেন তামিম। যা তাকে এনে দিয়েছে বাংলাদেশের পক্ষে এবং বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড।

২০০৬-০৭ মৌসুমে জাতীয় লিগের ম্যাচে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বরিশালের হয়ে সিলেটের বিপক্ষে ৩১৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন ডানহাতি রকিবুল। ৬৬০ মিনিট ৬০৯ বলে ৩৩ বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল ঐ ট্রিপল সেঞ্চুরি।

Tamim-Rqib

এতদিন ধরে এটিই ছিলো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস। সেটিকে আজ ছাড়িয়ে গেছেন তামিম। মজার বিষয় হলো, তামিমের এ কীর্তিটি ফিল্ডিংয়ে থেকেই দেখেছেন রকিবুল হাসান। দৌড়ে এসে অভিনন্দনও জানিয়েছেন তামিমকে।

এছাড়া তামিম ছাড়িয়ে গেছেন আরেক কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারাকেও। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৩১৯* রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাঙ্গাকারা। এতদিন বাংলাদেশের মাটিতে এটিই ছিলো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। যা আজ থেকে দখলে নিয়েছেন দেশসেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল।

একনজরে তামিম ইকবালের ৩০০

পঞ্চাশ রান - ৭৬ বল, ১০৫ মিনিট, ৭ চার
একশ রান - ১২৬ বল, ১৭১ মিনিট ১৪ চার
দেড়শ রান - ১৮০ বল, ২৪৫ মিনিট, ২১ চার
দুইশ রান - ২৪২ বল, ৩০২ মিনিট, ২৯ চার
আড়াইশ রান - ৩১৫ বল, ৪৪৯ মিনিট, ৩৪ চার
তিনশ রান - ৪০৭ বল, ৫৬০ মিনিট, ৪০ চার

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস

১. তামিম ইকবাল - ৩৩৪* রান (২০১৯-২০)
২. রকিবুল হাসান - ৩১৩* রান (২০০৬-০৭)
৩. নাসির হোসেন - ২৯৫ রান (২০১৭-১৮)
৪. মার্শাল আইয়্যুব - ২৮৯ রান (২০১২-১৩)
৫. মোসাদ্দেক হোসেন - ২৮২ রান (২০১৪-১৫)

এসএএস/জেআইএম