মিসবাহ-ইনজামামদের ধুয়ে দিলেন কামরান আকমল
গতবছর নিজের ঘোষিত পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ওয়ানডে একাদশে নিজেকে রেখেছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান কামরান আকমল। তার মতে দেশের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ক্রিকেটার তিনি। অথচ জাতীয় দলে প্রায় ৬ বছর ধরে সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি।
মাঝে ২০১৭ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিনটি ওয়ানডে ও চারটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ঠিকই- কিন্তু এর আগে শেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৪ সালে। আর টেস্ট ক্রিকেটে সবশেষ খেলেছেন ২০১০ সালে। বলা চলে, কামরান আকমলকে নিয়ে আর ভাবছে না পাকিস্তানের নির্বাচকরা।
আর এতেই ক্ষেপেছেন ৩৮ বছর বয়সী কামরান। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফরমার তিনি। সবশেষ কায়েদে আজম ট্রফিতেও ৬০.৪০ গড়ে ৯০৬ রান নিয়ে হয়েছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। কিন্তু তাকে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বা টেস্ট সিরিজের জন্য বিবেচনা করেনি মিসবাহ উল হক নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি।
যেমনটা আগে করেনি ইনজামাম উল হকের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেলও। প্রায় ছয় বছর ধরে অপেক্ষা করতে করতে ধৈর্য্যহারাই হয়ে পড়েছেন কামরান। তাই এবার খোলামেলাভাবেই প্রকাশ করেছেন নিজের ক্ষোভ। নির্বাচকদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আর কী করলে তাকে নেয়া হবে জাতীয় দলে?
সংবাদ মাধ্যমে কামরান বলেন, ‘আমি হতাশ হই না, কিন্তু সবকিছুরই একটা সীমা আছে। প্রায় ৫ বছর হয়ে গেছে। আপনি একটা নতুন ব্যবস্থার কথা বললেন, যেখানে কি না কোয়ালিটিকে গুরুত্ব দেয়া হবে এবং সেরা পারফরমাররা অটোমেটিক সুযোগ পেয়ে যাবে। তাহলে কি এবার আমার ভারত বা অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে পারফর্ম করতে হবে সুযোগ পাওয়ার জন্য? আমি পাকিস্তানি খেলোয়াড়, গত পাঁচ বছর ধরেই পারফর্ম করছি। আর কত সহ্য করবো?’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এখন কি তাহলে আমি প্রধানমন্ত্রীর (ইমরান খান) কাছে যাবো? তাকে গিয়ে দেখাবো যে, এই দেখুন আমার গত পাঁচ বছরের পারফরম্যানস! ব্যাপারটা যদি এমন হয়, আমার চেয়ে ভালো পারফরম্যানস করা কেউ আমার আগে খেলছে, তখন মানা যায়। আমি বলছি, প্রয়োজনে আমাকে উইকেটরক্ষক হিসেবেই খেলানো হোক।’
এসময় বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের স্কোয়াডের সমালোচনা করে কামরান বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে জায়গা খালি আছে, কিন্তু আপনি (নির্বাচকরা) জোর করে অন্য কাউকে খেলাচ্ছেন। এটা পাকিস্তান দল, পাকিস্তানকেই এগিয়ে রাখুন। কেউ যখন পারফর্ম করছে, তাকে সুযোগ দিন। আমার মতো অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা সুযোগ প্রাপ্য। আপনি ফাওয়াদ আলমের দিকেই তাকান, তার পারফরম্যানস দেখান। আমি মনে করি, তার ব্যাপারেও সীমা অতিক্রম হয়ে গেছে। আমি তো আর পারফরম্যানস ছাড়া কথা বলছি না।’
ফিটনেস টেস্টের জন্য সাবেক কোচ মিকি আর্থুর ‘ইয়ো ইয়ো’ টেস্টের প্রবর্তন করেছিলেন পাকিস্তান দলে। কামরান খোলামেলা সমালোচনা করেন এ ব্যাপারেও। উদাহরণ টানেন সাবেক ক্রিকেটার ইনজামাম উল হক, শোয়েব আখতারদের।
কামরান বলেন, ‘আমাদের সামনেই তো উদাহরণ আছে। শোয়েব আখতার, ইনজি (ইনজামাম) ভাই, ইউসুফ (মোহাম্মদ ইউসুফ) ভাই- তাদের তো মাঠে লুকিয়ে রাখতে হতো। ইনজি ভাই স্লিপে দারুণ ছিলেন। শোয়েব ভাই শুধু বোলিং করতেন এবং ম্যাচ জেতাতেন। আপনি কি মনে করেন যে আমরা পাগল? তারা আসলে বর্তমানে ক্রিকেটারদের পাগল বানিয়ে ছাড়ছে।’
এসএএস/জেআইএম