৩৫ জনের ক্যাম্পে মাশরাফি-জহুরুল, নেই তামিম
যদিও আফগানিস্তানের সাথে এক টেস্ট এবং জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানকে নিয়ে বাংলাদেশে যে তিন জাতি টি-টোয়েন্টি আসর হবে, তার কোনটাতেই তিনি নেই।
তবে জিম্বাবুয়ের সাথে একদিনের সিরিজ বা ম্যাচ দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারেন। এমন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে নির্বাচকরা আগেভাগেই স্থির করে রেখেছিলেন, মাশরাফি বিন মর্তুজাকে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ডাকা হবে এবং ৩৫ জনের কন্ডিশনিং ক্যাম্পের দলে থাকবেন মাশরাফিও।
গত ৮ আগস্ট জাগো নিউজে ‘কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকছেন মাশরাফিও!’ শিরোনামে সে খবর ফলাও করে প্রকাশিতও হয়েছে। সেটাই সত্য। ৩৫ জনের প্রাথমিক দলে আছেন ওয়ানডে ক্যাপ্টেন মাশরাফিও।
তবে শেষ খবর, মাশরাফি আপাততঃ জিম্বাবুয়ের সাথে খেলে অবসর নেবেন না। আরও দুই মাস সময়ে চেয়েছেন। কাজেই মাশরাফি এ কন্ডিশনিং ক্যাম্পে যোগ দেবেন কি না? সেটাও একটা প্রশ্ন।
ওয়ানডে পারফরমার ও অধিনায়ক মাশরাফির টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়াই শেষ কথা নয়, আজ সন্ধ্যায় যে ৩৫ জনের খেলোয়াড় তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে সাত আট জন তুর্কি তরুণের সাথে আরও একজন সিনিয়র ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন যিনি ৬ বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে।
তিনি জহুরুল ইসলাম অমি। এ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকেও রাখা হয়েছে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে। অমিকে টেস্ট দলে বিশেষ বিবেচনায় রাখা হবে।
২০১৩ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার সাথে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন জহুরুল। একমাস পর এপ্রিলে হারারাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট আর ৮ মে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ বার ওয়ানডে খেলেছেন জহুরুল। যার আভাস মিলেছিল কয়েক মাস আগে বিকেএসপিতে।
আবাহনী আর লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের প্রিমিয়ার লিগ নির্ধারনী ম্যাচ দেখতে বিকেএসপি গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ‘সাবেক কোচের’ তকমা গায়ে মাখা স্টিভ রোডস। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠের ভিআইপিতে বসে পাশাপাশি খেলা দেখছিলেন স্টিভ রোডস আর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু।
আবাহনীর হয়ে সৌম্য সরকারের সাথে ওপেন করতে নামা জহুরুল ইসলাম অমিকে দেখিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলে উঠলেন, ওর (জহুরুল অমির) ব্যাটিংটা একটু মন দিয়ে লক্ষ্য করুন। আমরা আগামীতে তাকে টেস্ট মেটারেল মনে করছি। ব্যাটিং টেকনিকটা পরিপাটি আর সোজা ব্যাটে ঠান্ডা মাথায় বলের মেধা ও গুণ বিচার করে খেলে সে।
কোচ স্টিভ রোডস কোনরকম মন্তব্যে না গিয়ে নান্নুকে দুটি প্রশ্ন করলেন, প্রথম প্রশ্ন। আচ্ছা এই কালো লম্বা সুঠামদেহী আবাহনী ওপেনারের (জহুরুল ইসলাম অমির) বয়স কত? আর দ্বিতীয় প্রশ্ন। সে শর্ট বল কেমন খেলে? বাউন্সারে ভড়কে যায় না তো?
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন উত্তরে বলেছিলেন, বয়স বেশি না। ৩০-৩১ হবে। আর নাহ ওহ বাউন্সারে ভয় পায় না। আবার তেড়েফুঁড়ে পুল-হুকও খেলে না। না খেলে ছেড়ে দেয়। তখনই মনে হচ্ছিল জহুরুল ইসলাম অমির প্রতি নির্বাচকদের চোখ আছে। তাই হলো। ৩৫ জনের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে খুব ওপরের দিকে পাঁচ নম্বরেই আছে জহুরুল ইসলাম অমির নাম।
আগেই জানা তামিম ইকবাল আফগানিস্তানের সাথে একমাত্র টেস্ট আর জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানকে নিয়ে অনুষ্ঠেয় তিন জাতি টি-টোয়েন্টি আসরে অংশ নেবেন না তামিম ইকবাল। দেশের এক নম্বর ওপেনার ছুটির আবেদন করেছিলেন। তা মঞ্জুর হয়েছে। তামিম নেই ৩৫ জনে।
এর বাইরে গত এক বছর যারা জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাদের প্রায় সবাই আছেন এই দলে। এর বাইরে আছেন এক ঝাঁক তরুণ। যাদের সবাই আছেন হাই পারফরমেন্স হাই পারফরমেন্স (এইচপি) স্কোয়াডে।
কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ৩৫ ক্রিকেটার হলেন
ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, সাদমান ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, মুশফিকুর রহীম, মুমিনুল হক সৌরভ, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমান রুম্মন, আফিফ হোসেন ধ্রæব, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, শফিউল ইসলাম, ফরহাদ রেজা, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী, আবু হায়দার রনি, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, আরিফুল হক, ইয়াসির আলি চৌধুরী, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাইফ হাসান, নাঈম শেখ, নাঈম হাসান, শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, ইয়ানিস আরাফাত মিশু, মেহেদী হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
এআরবি/আইএইচএস/এমএস