ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

কে এই রাসেল ডোমিঙ্গো?

ক্রীড়া প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:০৩ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৯

নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকান রাসেল ডোমিঙ্গোকেই টাইগারদের প্রধান কোচ হিসেবে বেছে নিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নিউজিল্যান্ডের মাইক হেসনও ছিলেন বিসিবির পছন্দের তালিকায়। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার মিকি আর্থার, শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে, জিম্বাবুয়ের গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারেরও সাক্ষাৎকার নিয়েছিল বিসিবি। কিন্তু টাইগারদের কোচের পদ অলঙ্কৃত করছেন ডোমিঙ্গোই।

কে এই রাসেল ডোমিঙ্গো? কেনই বা তাকে প্রধান কোচ হিসেবে বেছে নিলো বিসিবি? আগামী দুই বছরের জন্য এ ডোমিঙ্গোর হাতেই তুলে দেয়া হচ্ছে সাকিব-তামিম-মুশফিকদের দায়িত্ব।

৪৫ বছর বয়সী রাসেল ডোমিঙ্গোর সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের সাবেক কোচ ছিলেন। প্রোটিয়াদের সাবেক কোচ- এ পরিচয়েই এখন হাই প্রোফাইল কোচে পরিণত হয়েছেন রাসেল ডোমিঙ্গো।

এছাড়া একটা কাকতালীয় ব্যাপারও আছে। রাসেল ডোমিঙ্গো যখন (২০১৩ খেবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত) দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ ছিলেন, তখন তার সহকারী ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন নেইল ম্যাকেঞ্জি। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ।

যদিও বিশ্বকাপের পর ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়ে ম্যাকেঞ্জি শ্রীলঙ্কা সফরে টাইগারদের সঙ্গে থাকতে পারেননি। এছাড়া ওই সময় ডোমিঙ্গোর সহকারী হিসেবে পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেন চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ এবং কয়েকদিন আগেই (বিশ্বকাপের পরপরই) তাকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি।

রাসেল ডোমিঙ্গোর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার কি? খুঁজতে গেলে আপনি কিছুই পাবেন না। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই খেলেননি তিনি। অনেক ফুটবলে কোচ হোসে মরিনহোর মত, যিনি নিজে ফুটবলার ছিলেন না। কিন্তু হয়েছেন বড় মাপের কোচ।

তবে রাসেল ডোমিঙ্গো যে একেবারে ক্রিকেটার ছিলেন না তা নয়। তিনি খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন প্রোভিন্সের হয়ে। ১৯৭৪ সালের ৩০ আগস্ট পোর্ট এলিজাবেথে জন্মগ্রহণ করেন ডোমিঙ্গো। ক্রিকেটের প্রতি টান একেবারে ছোটবেলা থেকেই। যে কারণে ইস্টার্ন প্রোভিন্সের জুনিয়র দলের হয়ে খেলা শুরু করেন।

কিন্তু খেলোয়াড়ি জীবনের একেবারে শুরুতেই কেন যেন হঠাৎ মনে করলেন, খেলোয়াড় হওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। যে কারণে সিনিয়র কোনো দলের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করার আগেই খেলা ছেড়ে দিলেন। এবং ২২ বছর বয়সেই বেছে নিলেন কোচিং ক্যারিয়ার। যে সময়ে একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার শুরু হয়, সে সময়ে ডোমিঙ্গোর শুরু হলো কোচিং ক্যারিয়ার।

২৫ বছর বয়সেই ইস্টার্ন প্রোভিন্সের ইয়থ কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর আবার তিনি কাজ করেন দক্ষিণ আফ্রিকা ন্যাশনাল একাডেমিতে হিল্টন অ্যাকারম্যানের অধীনে। সেখানেই কোচ হিসেবে তার সামনে জ্ঞানের জগত উন্মোচিত হয়। যে কারণে, ২০০৪ সালেই ডোমিঙ্গোর হাতে তুলে দেয়া হয় দক্ষিণ আফ্রিকা অনুধ্বং-১৯ দলের দায়িত্ব।

সেবার (২০০৪ সালে) বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোচ ছিলেন তিনি। পরের বছরই ডোমিঙ্গো দায়িত্ব নেন দক্ষিণ আফ্রিকা ঘরোয়া ক্রিকেটের ফ্রাঞ্চাইজি দ্য ওয়ারিয়র্সের কোচের। তার অধীনেই ওয়ারিয়র্সরা ২০০৯-১০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার শিরোপা অর্জন করে।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতেও ২০১০ এবং ২০১১ সালে ওয়ারিয়র্সের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে পরাজিত হয় তার দল।

২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান ডোমিঙ্গো। তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্টই ছিল বাংলাদেশে। একই বছর বাংলাদেশ ‘এ’ দল যখন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যায়, তখনও প্রোটিয়াদের কোচ ছিলেন তিনি।

২০১১ সালেই দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন নিয়োগ পাওয়া কোচ গ্যারি কারস্টেনের অধীনে সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ পান রাসেল ডোমিঙ্গোও। ২০১২ সালের ডিসেম্বরেই গ্যারি কারস্টেনকে সরিয়ে দেয়া হয় দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি কোচের পদ থেকে। সেখানে প্রধান কোচ হিসেবে (টি-টোয়েন্টি দলের) দায়িত্ব দেয়া হয় রাসেল ডোমিঙ্গোর কাঁধে।

২০১৩ সালে প্রোটিয়াদের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান গ্যারি কারস্টেন। দেশটির প্রধান কোচ হওয়ার পথে ডোমিঙ্গোর সামনে আর কোনো বাধা থাকলো না। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডও ডোমিঙ্গোর ওপরই আস্থা রাখলো এবং তাকে নিয়োগ দিলো প্রধান কোচ হিসেবে।

রাসেল ডোমিঙ্গোর অধীনে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলেছিল সেমিফাইনালে। ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপেও ডোমিঙ্গোর অধীনে সেমিফাইনালে উঠেছিল প্রোটিয়ারা। সব মিলিয়ে প্রোটিয়াদের কোচ হিসেবে ডোমিঙ্গো দায়িত্ব পালন করেন ২০১৭ সাল পর্যন্ত। তখন তাকে সরিয়ে ওটিস গিবসনকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় প্রোটিয়ারা। সেই থেকে মোটামুটি ফ্রি’ই ছিলেন রাসেল ডোমিঙ্গো।

আইএইচএস/এমকেএইচ

আরও পড়ুন