টেস্টে আফগানিস্তানকে ভয় পাওয়ার মতো কিছুই দেখছেন না নান্নু
অনেক দিন পর টেস্ট। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে হিসেব কষলে প্রায় ৬ মাস পর আবার টেস্ট খেলতে নামবে টাইগাররা। মাঝে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে জাতীয় দলের অনুশীলন প্রক্রিয়া ছিল প্রায় ওয়ানডে কেন্দ্রিক।
ফিটনেস ট্রেনিং, স্কিল ট্রেনিংয়ের প্রায় পুরোটা জুড়ে ছিল ৫০ ওভারের ফরম্যাট নিয়েই চিন্তা ভাবনা। প্র্যাকটিসের ধরনটাও ছিল সীমিত ওভারের ম্যাচের আদল ও মেজাজে। বিশ্বকাপ তারপর শ্রীলঙ্কা সফর শেষে এখন আবার টেস্টে ফেরা। আবার সাদা বল, কালো সাইটস্কিন আর রঙ্গিন জার্সি বদলে সাদা পোশাক, সাদা সাইট স্কিন আর লাল বলে ফেরা।
প্রতিপক্ষ যদিও আফগানিস্তান। টেস্টের নবীনতম সদস্য। যাদের রয়েছে মাত্র দুটি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। তারপরও দুটি বিশেষ কারণে বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকদর মনে সংশয়। ঘরের মাঠে স্পিন সহায় পিচে রশিদ খান, মুজিব উর রহমান আর মোহাম্মদ নবীর সাড়াশি স্পিন সামলাতে গিয়ে উল্টো বিপাকে পড়বেনা তো টাইগাররা?
যেখানে এই কদিন আগে আফগান ‘এ’ দলের সাথে জিততে ঘাম ছুটে গেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের, সেখানে আফগান মূল দলের সাথে লড়াইও নিশ্চয়ই সহজ হবে না সাকিব বাহিনীর। মোদ্দা কথা, অনেক দিন পর আবার মেজাজ, ধরন, রূপ ও আদল পাল্টে আবারো দীর্ঘ পরিসরে ফেরা। এই বাঁক বদলে কি সমস্যা হবে টাইগারদের?
দল সাজানোর কাজটা যার হাতে, সেই মিনহাজুল আবেদিন নান্নু কি ভাবছেন? তার কি মনে হয়? আফগান যুবাদের সামলাতেই যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে বাংলাদেশের ‘এ’ দলকে, সেখানে পুরোদস্তুর আফগানিস্তানের সাথে লড়াই কেমন হবে? স্বাগতিকরা কি চিন্তিত?
আজ মধ্যাহ্নে জাগো নিউজের সাথে আলাপের শুরুতে এমন প্রশ্নর উত্তর দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক নান্নু শোনালেন অভয়বাণী। যার পরতে পরতে আত্মবিশ্বাস আর অবিচল আস্থা।
নান্নুর চোয়াল শক্ত করা জবাব, ‘না না! ভয়ডরের কি আছে? আর কেনইবা আমরা আফগানিস্তানকে নিয়ে অত চিন্তা করতে যাবো! আফগানরা টেস্টে নতুন দল। তাদের তুলনায় আমাদের দল ও ক্রিকেটাররা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। পরিণত। তারা অনেক পথ পাড়ি দিয়ে আজকের জায়গায়। শুধু অভিজ্ঞতায় নয়, দক্ষতা ও সামর্থ্যে এগিয়ে আমাদের ক্রিকেটাররা। কাজেই আমার মনে হয় না চিন্তার কিছু আছে। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের ছেলেরা খেলবে ঘরের মাঠে। মাঠ, উইকেট আর পরিবেশ-সব চেনাজানা। আমার মনে হয়না ছেলেদের কোন সমস্যা হবে।’
কিন্তু টেস্ট দলের বড় অংশ তো বেশ কিছু দিন দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট থেকে দূরে। শেষ তিন চার মাস সীমিত ওভারের মেজাজে ছিলেন। চিন্তাভাবনা , প্র্যাকটিস আর ম্যাচও খেলেছেন সীমিত ওভারের। তাদের কি কোন সমস্যা হবে না?
প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘তারা সবাই পেশাদার। আশা করি খুব জলদি মানিয়ে নেবে। আর টেস্ট দলের সবাই কিন্তু বিশ্বকাপ দলে ছিলেন না। অন্তত চার থেকে পাঁচজন ক্রিকেটার ভারতে দীর্ঘ পরিসরের এক প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট খেলে এসেছে। তারা কিন্তু বরং দীর্ঘ পরিসরের খেলায়ই ছিল। কাজেই তাদের কোন সমস্যা হবে না। তারা ঐ ফরম্যাটে খেলার ভেতরেই আছে।’
তা না হয় মানা গেল। কিন্তু একটি বিষয় চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। তাহলো, দেশের মাটিতে আফগান যুবাদের সাথে রীতিমত কষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা শক্তির দলের। সন্দেহ নেই আফগানিস্তান মূল দল হবে আরও শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ। তাদের আছে বেশ কজন বিশ্বমানের স্পিনার। তারা কি বাড়তি চিন্তার কারণ নয়?
মিনহাজুল আবেদিন নান্নু উত্তর দেন দুই ভাগে। প্রথম অংশের জবাবে নান্নুর কথা, ‘আসলে আফগানিস্তানের সাথে আমাদের দুই নম্বর জাতীয় দল বা দ্বিতীয় সেরা শক্তির দল খেলেনি। আমাদের একটি দল একই সময় ভারতের মাটিতে দীর্ঘ পরিসরের টুর্নামেন্ট খেলায় ব্যস্ত ছিল। তাই দল পূর্ণশক্তির ছিল না। আমরা একই সময় ভারত সফর আর ঘরের মাঠে আফগানদের সাথে খেলার জন্য দুটি দল করেছিলাম। ঐ দুটি মিলে এক দল করলে সে দল হতো অনেক শক্তিশালী। তাহলে দৃশ্যপট হতো ভিন্ন।’
নান্নু যোগ করেন, ‘আফগান যুবাদের সাথে আমাদের যুবারা পূর্ণ শক্তিতে মাঠে নামেনি। এখন সেই সমান সমান লড়াই দেখে আমাদের জাতীয় দলের সাথে আফগান জাতীয় দলের লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে, আমরা ব্যাকফুটে থাকতে পারি-এমন চিন্তা চিন্তার কোনো কারণ দেখিনা।’
এআরবি/এমএমআর/জেআইএম