বোল্ড ছাড়া অন্য কোনো আউট হন না তামিম!
তামিম ইকবাল নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ দলের সেরা ব্যাটসম্যান। যেদিন তিনি ভালো সূচনা এনে দেবেন, সেদিন বাংলাদেশের রানও চলে যাবে অনেক দূর- এটা বলাইবাহুল্য। অথচ সেই তামিমের ব্যাটে রান নেই। পুরো বিশ্বকাপে কেবল একটি হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। বিশ্বকাপের পরও ব্যর্থতার মিছিল চলছেই তামিমের।
গত এক বছর ব্যাট হাতে দারুণ ব্যর্থ তামিম। কারণ সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি ঠিক এক বছর আগে, ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে ১০৩ রান করেছিলেন তিনি। এরপর আর কোনো সেঞ্চুরি নেই। এরপর এ নিয়ে ২১ ম্যাচ খেললেন। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৬টি। সর্বোচ্চ রান ৮১।
তবে বাংলাদেশের সেরা এই ব্যাটসম্যানের সম্প্রতি আউট হওয়ার ধরণ দেখলে যে কেউ অবাক হয়ে যাবেন। প্রতিপক্ষ বোলাররা নিশ্চিত তাকে নিয়ে দারুণ গবেষণা করছেন এবং কিভাবে তাকে বোল্ড করা যায়, তার সহজ ফর্মুলাও হয়তো বের করে ফেলেছেন।
বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সি গায়ে ইতিমধ্যেই ২০৩টি (আজকের ম্যাচসহ) ওয়ানডে খেলে ফেলেছেন তামিম। এর মধ্যে ব্যাট করেছেন ২০১ ম্যাচে। অপরাজিত ছিলেন কেবল ৮ ম্যাচে। বাকি ১৯৩ ম্যাচেই আউট হয়েছেন তিনি।
আউট হওয়া নিয়ে হয়তো বা এতটা গবেষণা হতো না। একজন ব্যাটসম্যান যে কোনোভাবেই আউট হতে পারেন, বোল্ড, কট, রানআউট, এলবি ডব্লিউ কিংবা কট-বিহাইন্ড। কিন্তু কোনো ব্যাটসম্যান যদি টানা একের পর এক ম্যাচে বোল্ড হতে থাকেন, তখন সেটা একটু দৃষ্টি কটুই বটে। এ নিয়ে প্রশ্ন জাগাটাও স্বাভাবিক।
আজও (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে) তিনি আউট হয়েছেন বোল্ড হয়ে। ইসুরু উদানার বলটি ব্যাটের নিচের কানায় লাগিয়ে নিজেই টেনে আনেন স্ট্যাম্পে। হয়ে গেলেন বোল্ড এবং এ নিয়ে টানা ৬ ম্যাচ বোল্ড আউট হলেন তামিম ইকবাল। আরেকটা বিষয় দৃষ্টিকটু লেগেছে, সেটা হচ্ছে ইয়র্কারের সামনে তার মুখ থুবড়ে ক্রিজের ওপর পড়ে যাওয়া। মালিঙ্গার বলেও পড়তে দেখা গেছে তাকে। আজ নুয়ান প্রতীপের বলেও মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি।
সর্বশেষ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টনটনে ৪৮ রান করে রানআউট হয়েছিলেন তামিম। এরপরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ থেকেই শুরু হলো তার বোল্ড হওয়া। অসিদের বিপক্ষে সেদিন তামিম করেছিলেন ৬২ রান। কিন্তু মিচেল স্টার্কের বলে হয়েছিলেন বোল্ড।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাউদাম্পটনে করেছিলেন ৩৬ রান। কিন্তু মোহাম্মদ নবির ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ভারতের বিপক্ষে বার্মিংহ্যামে করেছিলেন ২২ রান। পরে মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে যান তামিম। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে লর্ডসে রানই করতে পারেননি বাংলাদেশ দলের এই ওপেনার। বরং, শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
এরপর তামিমের নেতৃত্বেই শ্রীলঙ্কা সফর শুরু হলো। আর প্রেমাদাসায় লাসিথ মালিঙ্গার ইয়র্কারে প্রথম ম্যাচেই বোল্ড হয়ে গেলেন তিনি। কোনো রানই করতে পারেননি। আজ ১৯ রান করে হলেন বোল্ড। তামিমের এভাবে বোল্ড হওয়ার ধারাবাহিকতা আর কত চলতে থাকবে?
সর্বশেষ ৬ ম্যাচে তামিমের আউট হওয়ার ধরণ
আউটের ধরণ |
বোলার |
রান |
ইনিংস |
প্রতিপক্ষ |
ভেন্যু |
তারিখ |
বোল্ড |
মিচেল স্টার্ক |
৬২ |
২য় |
অস্ট্রেলিয়া |
নটিংহ্যাম |
২০ জুন ২০১৯ |
বোল্ড |
মোহাম্মদ নবি |
৩৬ |
১ম |
আফগানিস্তান |
সাউদাম্পটন |
২৪ জুন২০১৯ |
বোল্ড |
মোহাম্মদ শামি |
২২ |
২য় |
ভারত |
বার্মিংহ্যাম |
২ জুলাই ২০১৯ |
বোল্ড |
শাহিন আফ্রিদি |
৮ |
২য় |
পাকিস্তান |
লর্ডস |
৫ জুলাই ২০১৯ |
বোল্ড |
লাসিথ মালিঙ্গা |
০ |
২য় |
শ্রীলঙ্কা |
আর প্রোমাদাসা |
২৬ জুলাই ২০১৯ |
বোল্ড |
ইসুরু উদানা |
১৯ |
১ম |
শ্রীলঙ্কা |
আর প্রেমাদাসা |
২৮ জুলাই ২০১৯ |
আইএইচএস/পিআর