ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

‘আমিরের অবসর পাকিস্তানের জন্য অশনিসংকেত’

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:৪৭ পিএম, ২৭ জুলাই ২০১৯

স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে ক্যারিয়ার থেকে পাঁচটি বছর। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেট মাঠে ফিরেছিলেন বীরের মতোই। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের একমাত্র বড় শিরোপা আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালেও করেছিলেন বিধ্বংসী বোলিং।

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাত্র ২৭ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের তারকা পেসার মোহাম্মদ আমির। যদিও ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি খেলবেন তিনি। কিন্তু ক্রিকেটের অভিজাত ফরম্যাট থেকে এত অল্প বয়সেই অবসর নেয়াটা মানতে পারছেন না পাকিস্তানের সাবেক তারকারা।

আমিরের আগে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে গতির ঝড় তুলেছেন শোয়েব আখতার। ক্যারিয়ার থেকে পাঁচ বছর হারিয়ে ফেলেও, শোয়েবকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিলো আমিরের সামনে। কিন্তু হুট করেই ছেড়ে দিলেন টেস্ট ক্রিকেটটা।

যা মানতে পারছেন না শোয়েব আখতার থেকে শুরু করে ওয়াসিম আকরাম, রমিজ রাজারা। সবারই প্রতিক্রিয়া জানান দিচ্ছে একটি মন্তব্যের, তা হলো আমিরের অবসর নেয়ার ঘটনা পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্যই অশনিসংকেত। হতে পারে তার দেখাদেখি অন্য পেসাররাও এ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব বলেন, ‘আমিরের অবসরের পর আমরা হয়তো হাসান আলি, ওয়াহাব রিয়াজ, জুনায়েদ খানদেরকেও একই পথে হাঁটতে দেখবো। আমি বুঝতে পারছি না পাকিস্তান দলের আসলে হয়েছেটা কী? মাত্র ২৭ বছরে আমির কীভাবে অবসর নিল? পাকিস্তান তার ওপর অনেক বিনিয়োগ করেছে, ফিক্সিং স্ক্যান্ডাল থেকে মুক্ত করে সুযোগ দিয়ে যাচ্ছে। এখন সে ভালো ফর্মে আসলো আর অবসর নিয়ে নিল।’

এসময় তিনি আমিরের এমন সিদ্ধান্তের পেছনে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকেই দায়ী করেন শোয়েব। তিনি বলেন, ‘এসব বোলাররা এখন শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতে চায়। এটাই মূল কারণ। আমির, ওয়াহাব, হাসান আলি- সবাই শুধু টি-টোয়েন্টির প্রতি ঝুঁকে আছে। তাদের কাছে ওয়ানডে খেলাও যেনো অনেক বড় এক কাজ।’

শোয়েব আরও বলেন, ‘মাত্রই ক্যারিয়ারের চূড়ায় উঠছিল আমির আর সে কি-না অবসর নিয়ে নিল। আমি সত্যিই অনেক হতাশ। আমিরের এখন সময় হয়েছিল পাকিস্তান দলকে কিছু ফিরিয়ে দেয়ার। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তান খুব ভালো করতে পারছে না। আমিরের উচিৎ ছিল সামনে এগিয়ে আসা এবং দলের হয়ে সিরিজ জেতা। আমি তো হাঁটুর ইনজুরি নিয়েও ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডে সিরিজ জিতিয়েছি।’

পাকিস্তানের এ গতিতারকা আমিরের প্রতি এতোটাই চটেছেন যে, সরাসরি জানিয়েছেন আমিরকে যেনো আর কোনো ফরম্যাটেই না নেয়া হয়। শোয়েবের বিশ্বাস এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হস্তক্ষেপ করবেন।

তিনি বলেন, ‘আমি পাকিস্তানের নির্বাচক কমিটির অংশ হলে, এসব খেলোয়াড়দের কোনো ফরম্যাটেই খেলতে দিতাম না। তুমি অর্থ লাভের জন্য অনেক সময় পাবে কিন্তু যখন পাকিস্তান ক্রিকেটের তোমাকে দরকার, তখন মুখ ফেরাতে পারো না। আমি অনুরোধ করবো পিসিবি যেনো এ বিষয়ে কঠোর হয়। আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এ বিষয়টায় নজরদারি করা প্রয়োজন।’

প্রায় একই কথা শোনা যায় ওয়াসিম আকরাম ও রমিজ রাজার কণ্ঠে। তারাও ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না আমিরের এ সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ।

ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘মাত্র ২৭ বছর বয়সে আমিরের টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত আমাকে অবাক করেছে। কারণ সাধারণ ২৭-২৮ বছরেই আপনি ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে পা রাখেন। আর টেস্ট ক্রিকেট হলো এমন এক জায়গা, যেখানে আপনি নিজের সামর্থ্যের সেরাটা প্রমাণের সুযোগ পাবেন। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলতে গেলে পাকিস্তান দলের আমিরকে লাগবে।’

রমিজ রাজার কণ্ঠেও ভেসে আসে হতাশা। তিনি বলেন, ‘এ বয়সে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেয়া সত্যিই হতাশাজনক। টেস্ট ক্রিকেটই আপনাকে কিংবদন্তি বানাতে পারে। এছাড়া পরিসংখ্যানকে পাশে রেখে পাকিস্তান ক্রিকেটের কথা ভাবলেও সিদ্ধান্তটি একদমই যথাযথ হয়নি। আমিরের এখন সময় হয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেটকে কিছু দেয়ার, সে তা নাকচ করে দিল।’

এসএএস/এমকেএইচ

আরও পড়ুন