চতুর্থ ফাইনালে এসে ঘুচলো শিরোপার আক্ষেপ
শিরোপা লড়াইয়ের শেষ মঞ্চ, ফাইনাল। এই ফাইনালে এসে ট্রফিটা ছুঁতে না পারার কষ্ট যে কি! যে হারায়, সে-ই শুধু বুঝে। ইংল্যান্ডের সে অভিজ্ঞতা হয়েছে আগে তিনবার, একবারও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি।
ক্রিকেটের জনক তারা। অথচ বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে কখনও জয় পায়নি! ব্যাপারটা বেশ বেমানানই বটে। তবে নিয়তি তাদের বারবারই কাঁদিয়েছে। সেই ১৯৭৯ সালে প্রথম। তারপর ১৯৮৭ আর ১৯৯২। হাত ছোঁয়া দূরত্ব থেকে কষ্ট নিয়ে শেষ করতে হয়েছে ইংলিশদের।
১৯৯২ সালের পর তো পেরিয়ে গেল ২৭ বছর। ফাইনালটাও তো দূরের বাতিঘর হয়ে গিয়েছিল ক্রিকেটের জনকদের। অবশেষে ফাইনালে উঠা হলো, আর ২৭ বছর পর ফাইনালে উঠেই স্বপ্ন ধরা দিল ইংলিশদের।
এবার স্মৃতিতে বাঁধাই হয়ে থাকবে ২০১৯ সাল। যেখানে লেখা থাকবে ঘরের মাঠ লর্ডসে এই বছরই নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।
তবে এমন এক ম্যাচ কি নাটকীয়তায় শেষ হয়েছে, সেটা হয়তো অনেকেরই মনে থাকবে না। মূল ম্যাচে টাই, টাইয়েও টাই। তারপর বাউন্ডারির হিসেবে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এমন এক ফাইনাল এর আগে কখনই দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব। নতুন ইতিহাস গড়লো ইংল্যান্ড, ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় যোগ করলো বিশ্বকাপ ফাইনালটিও।
এই বিশ্বকাপের আগে যে তিন ফাইনালে উঠে ব্যর্থ হয়েছে ইংলিশরা :
১৯৭৯ বিশ্বকাপ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ- ২৮৬/৯, ইংল্যান্ড- ১৯৪/১০
ফলাফল- ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯২ রানে জয়ী
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরে প্রথমবারের মতো ফাইনালে যঠে ইংল্যান্ড। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬০ ওভার খেলে ভিভ রিচার্ডসের ১৫৭ বলে ১৩৮ রানের উপর ভর করে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান তুলে ক্যারিবীয়রা।
জবাব দিতে নেমে অধিনায়ক মাইক ব্রেয়ারলি ও ওপেনার জিওফ্রি বয়কটের ৫৭ রান ছাড়া কোন ব্যাটসম্যানই বলার মতো রান করতে পারেননি। যে কারণে ইংল্যান্ডকে হারতে হয় ৯২ রানের বড় ব্যবধানে।
১৯৮৭ বিশ্বকাপ
অস্ট্রেলিয়া- ২৫৩/৫, ইংল্যান্ড- ২৪৬/৮
ফলাফল- অস্ট্রেলিয়া ৭ রানে জয়ী
১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবার নিজেদের ঘরের মাঠ বাদে ফাইনালে পৌঁছায় ইংল্যান্ড। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল চির প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দীর ফাইনালের এই লড়াই এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেরা ফাইনালগুলোর একটি।
প্রথমে ব্যাট করে ডেভিড বুনের ১২৫ বলে ৭৫ রানের উপর ভর করে ইংল্যান্ডের সামনে ২৫৪ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় ইংল্যান্ড।
জবাব দিতে নেমে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করে ফেলে তারা। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালেন বর্ডার পার্ট টাইম বোলার হিসেবে বল করতে আসেন সে সময়। আর এসেই ৪১ রানে ব্যাট করা ইংলিশ অধিনায়ক মাইক গ্যাটিংকে অসি ফিল্ডার ডায়ারের ক্যাচ বানান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৭ রানের ব্যবধানে ম্যাচ হেরে যায় ইংল্যান্ড।
১৯৯২ বিশ্বকাপ
পাকিস্তান- ২৪৯/৬, ইংল্যান্ড- ২২৭/১০
ফলাফল- পাকিস্তান ২২ রানে জয়ী
আগে দুইবার ফাইনাল খেললেও ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নেই ইংল্যান্ডের সামনে বিশ্বকাপ জয়ের সবচেয়ে বড় সুযোগ ছিল। কারণ বিশ্বকাপ ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। যারা সে টুর্নামেন্টেই ৭৪ রানে অলআউট হয়েছিল।
প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক ইমরান খানের ১১০ বলে ৭২ রানের উপর ভর করে ২৪৯ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে শূন্য রানে ফিরে যান ইংল্যান্ডের ওপেনার ইয়ান বোথাম। শেষ পর্যন্ত ফেয়ারব্রাদারের ৭০ বলে ৬২ রানের ইনিংসের পরও ওয়াসিম আকরামের ৩ ও মুশতাক আহমেদের ৩ উইকেটে পাকিস্তান জয় পায় ২২ রানে।
এমএমআর/এমএসএইচ