সুপার ওভারের নায়ক স্টোকস-আর্চার
অনেক পাওয়ার এক ম্যাচ ইংল্যান্ডের। শিরোপা শুধু নয়, বহুদিনের স্বপ্নপূরণ। ক্রিকেটের জনক হয়েও এতদিন পর্যন্ত শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি। এর আগে তিন তিনবার ফাইনালে উঠে হয়েছে স্বপ্নভঙ্গ। অবশেষে ঘুচলো সে আক্ষেপ।
সেটাও আবার যেনতেনভাবে নয়। লর্ডসের ঐতিহাসিক ভেন্যুতে শ্বাসরূদ্ধকর এক ফাইনাল জিতে। যে ফাইনাল শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছিল না। মূল ম্যাচ টাই হওয়ার পর গড়াল সুপার ওভারে, তারপর সেখানেও টাই। শেষপর্যন্ত মূল ম্যাচে বাউন্ডারিতে এগিয়ে থাকায় জয়ী ইংল্যান্ড।
এমন এক ম্যাচে ইংলিশদের জয়ের নায়ক কে? বলতে গেলে একাই লড়াই করা বেন স্টোকস। সুপার ওভারে এসেও নায়ক এই অলরাউন্ডারই। সঙ্গে নিলেন যার বিশ্বকাপ দলে আসাই ছিল বড় চমক, সেই জোফরা আর্চারকে।
ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ২৪২ রান, কিন্তু এমন পিচে রান করা মোটেই সহজ ছিল না। একটা সময় তাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল স্বাগতিকরা। সেখান থেকে বলতে গেলে একাই দলকে টেনে তুলেন বেন স্টোকস। হার না মানা ৮৪ রান করে দলকে নিয়ে যান একদম 'টাই' পর্যন্ত।
টাইয়েও ইংলিশদের ত্রাতার ভূমিকায় এই বেন স্টোকস। ট্রেন্ট বোল্টের করা প্রথম দুই ডেলিভারিতে সুযোগ না থাকায় রানই নেননি, স্ট্রাইকে থাকতে চেয়েছেন নিজেই। তৃতীয় বলে হাঁকান ছক্কা। ভাগ্য যেন তার শরীরটাকেও স্পর্শ দিয়ে গিয়েছিল। চতুর্থ বলে দুই নিতে গেলে স্টোকসের গায়ে লেগেই ওভার থ্রোতে ৬ হয়ে যায়।
পঞ্চম বলে সিঙ্গেলসের জায়গায় ডাবলস নিতে গিয়ে সঙ্গীকে হারান রানআউটে। শেষ বলেও একইভাবে ডাবলস নিতে গিয়ে রানআউটে হয়েছে এক, তবে কাজের কাজটা করে দিয়েছেন স্টোকসই। বলতে গেলে সুপার ওভারেও একাই লড়েছেন। ইংল্যান্ড তুলতে পারে ১৫ রান।
পরে বোলিংয়ে এসে তুলির শেষ আঁচড়টা দিয়েছেন জোফরা আর্চার, যার এই বিশ্বকাপে খেলারই কথা ছিল না। নানা ঘটন-অঘটনের পর এসেছেন দলে, শেষ পর্যন্ত ফাইনালের মঞ্চ আলোকিত করলেন।
ওভারের প্রথম বলে স্ট্রাইক নেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। অতিরিক্ত চাপে শুরুর বলটি নিশামের ব্যাট থেকে অনেক দূরে করে বসেন আর্চার। আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা দুই হাত প্রসারিত করে জানিয়ে দেন এট ই ওয়াইড বল। ফলে ৬ বলে ১৫ রানে নেমে আসে সমীকরণ।
পরের বলটিই ইয়র্কার করেন আর্চার। তবু সে বল থেকে ২ রান নিতে সক্ষম হন নিশাম। ৫ বলে বাকি থাকে ১৩ রান। দ্বিতীয় বলেই বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে বসেন নিশাম। ২ বলে ৯ রান করে ফেলায় শেষের ৪ বলে কিউইদের বাকি থাকে ৭ রান।
ছন্দে থাকা নিশাম তৃতীয় বলে নেন আরও ২ রান। সমীকরণ নেমে আসে ৩ বলে ৫ রানে। চাপের মুখে চতুর্থ বলটি করেন স্লোয়ার। যে বলে আবার ২ রান নেন নিশাম। কিন্তু শেষ ২ বল থেকে নিশাম ও গাপটিল মিলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি। এমন এক লড়াইয়েও স্নায়ু ঠিক রেখে বল করে নিজের জাতটা চিনিয়ে দিলেন ক্যারিবীয় বংশোদ্ভূত জোফরা আর্চার।
এমএমআর/এমএসএইচ