ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

বাংলাদেশের পঞ্চম হওয়ার ম্যাচ কাল পাকিস্তানের সঙ্গে

আরিফুর রহমান বাবু | লর্ডস, লন্ডন থেকে | প্রকাশিত: ১২:২৫ এএম, ০৫ জুলাই ২০১৯

ইশ! একবার ভাবুন তো, বাংলাদেশ যদি ভারতকে হারাতে পারতো আর সেমিফাইনালের লাইনআপ যদি এখনো চূড়ান্ত না হতো, তাহলে কাল বাংলাদেশ আর পাকিস্তান ম্যাচটি কেমন হতো? একেবারে ‘মার মার কাট কাট’ যাকে বলে।

কিন্তু তা আর হলো কই? বাংলাদেশ আগের ম্যাচে সম্ভাবনা জাগিয়েও ভারতের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিপক্ষে ইংল্যান্ড জেতায় পাকিস্তানেরও কপাল পুড়লো। না হয় ৫ জুলাই বাংলাদেশ আর পাকিস্তান ম্যাচ যদি চতুর্থ সেমিফাইনাল নির্ধারণী খেলা হতো, তাহলে আকর্ষণ, প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর উত্তেজনা থাকতো সর্বোচ্চ।

যে কারণে গৌতম ভট্টাচার্য্যের কণ্ঠে খানিক হতাশা। কিন্তু কি আর করা? পশ্চিম বঙ্গ তথা ভারতের এই মেধাবী ও নামি লিখিয়ে বরেণ্য সাংবাদিক তবু এই ম্যাচ কভার করতে এখন লর্ডসে। ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার ম্যাচ পরশু ৬ জুলাই হেডিংলিতে।

কিন্তু ভারতীয় সাংবাদিক বহরের জৈষ্ঠ সদস্য সুপ্রসিদ্ধ লিখিয়ে গৌতম ভট্টাচার্য্য কেনো লর্ডসে! মেলাতে কষ্ট হচ্ছে। ভাবছেন নিজ দেশের বিশ্বকাপে রবিন লিগের শেষ ম্যাচ বাদ দিয়ে পশ্চিম বঙ্গের সংবাদ প্রতিদিনের এ যুগ্ম সম্পাদক এমনি এমনি বাংলাদেশ আর পাকিস্তান ম্যাচ কভার করতে লর্ডসে এসেছেন।

বিষয়টি তেমন নয়। গৌতম ভট্টাচার্য্য কেন, কোন সাংবাদিক চাইলেই বিশ্বকাপে কোন ম্যাচ ছেড়ে আরেক ম্যাচ কভার করতে পারবেন না। সে নিয়মনীতি আর রীতিই নেই। অ্যাক্রিডেটেশন কার্ড নিশ্চিত হওয়ার পরপরই ম্যাচ কভারের আবেদন করতে হয়। সেটা অন্তত দুই মাস আগে সেরে ফেলার নিয়ম। তখনই আইসিসি মিডিয়া অপারেশন্সের কাছে লিখিতভাবে জানাতে হয় কে কোন ম্যাচ কভার করতে চান।

তাই গৌতম ভট্টাচার্য্যও বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের ম্যাচ কভারে আবেদন করে রেখেছিলেন। তখন কি তিনি আর ভেবেছিলেন এই ম্যাচ গুরুত্বহীন হয়ে উঠবে? কঠিন সত্য হলো, ৫ জুলাই বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের ম্যাচটি এখন সবরকম গুরুত্ব হারিয়েছে।

তবে বাংলাদেশের জন্য এ ম্যাচ হতে পারে সান্ত্বনার ম্যাচ। পাকিস্তানকে হারাতে পারলে ২০ বছর আগে নর্দাম্পটনের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটানো সম্ভব হবে। ভারতের সঙ্গে নিজেদের ভুলে জয় হাতছাড়া করলেও পাকিস্তানকে হারাতে পারলে একটা অন্যরকম মানসিক পরিতৃপ্তি অনন্ত কাজ করবে। তার চেয়ে বড় কথা, কাল সরফরাজ আহমেদের দলকে হারাতে পারলে টাইগাররা পাবে পঞ্চম স্থান।

সেমিফাইনাল খেলতে না পারলেও পাঁচ নম্বর হয়ে দেশে ফেরা যাবে। ইতিহাস জানাচ্ছে ১৯৯৯ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসেও বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচটি খেলেছিল ওয়াসিম আকরামের পাকিস্তানের সঙ্গে। এবারও ঠিক তাই, খালি ভেন্যু বদলেছে এই যা।

সেবার খেলা হয়েছিল নর্দাম্পটনে। আর এবার ক্রিকেট মক্কা লর্ডসে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানের সঙ্গে তাই দলে রদবদল হয়েছিল বেশ। ফ্রন্টলাইন পেসার হাসিবুল হোসেন শান্ত আর মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে বাদ রেখে নিয়ামুর রশিদ রাহুল আর সফিউদ্দীন বাবুকে খেলানো হয়েছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না তাদের দুজনারই ছিল ঐ বিশ্বকাপে প্রথম বা শেষ ম্যাচ।

এবারও কি তাই হবে? পুরো বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো আবু জায়েদ রাহী একটি ম্যাচেরও সুয্গে পাননি। তাকে কি কালকের ম্যাচ খেলানো হবে? রাহী কি রাহুল বা সাইফউদ্দীন বাবুর মত শেষ ম্যাচে সুযোগ পাবেন?

এমন প্রশ্ন কিন্তু উঠেছে। আজ সংবাদ সম্মেলনে কোচ স্টিভ রোডসের কাছেও রাখা হয়েছিল সে প্রশ্ন। তিনি রাহীর পরিশ্রম, চেষ্টা ও প্র্যাকটিসে সিরিয়াস থাকার প্রশংসা করলেও আকার ইঙ্গিতে বলেই দিয়েছেন এবার আর সে অবস্থা নেই। সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভাঙলেও বিশ্বকাপে প্রথমবার পঞ্চম হওয়ার সুযোগ আছে এখনও।

কাল পাকিস্তানের সাথে জিতলেই পঞ্চম হবে মাশরাফির দল। যেটা হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা সাফল্য। সেই সঙ্গে দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান আর অন্যতম পরাশক্তি দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর দূর্লভ কৃতিত্বও হবে অর্জিত।

এমন এক ম্যাচের সামনে রেখে তাই বাংলাদেশ লাইনআপে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটানোর কথা ভাবছে না। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানালেন লন্ডন সময় রাত সাড়ে আটটায় (বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টায়) টিম মিটিংয়ে একাদশ চূড়ান্ত হবে।

তবে নান্নু আভাস দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হয়ত খেলবেন। রিয়াদকে শতভাগ ম্যাচ ফিট দাবি করে নান্নু বলেন, যেহেতু রিয়াদ ফিট, তাই হয়ত তার ফেরার সম্ভাবনাই বেশি। সেক্ষেত্রে সাব্বির বাদ যাবে। মুশফিকের কনুইতে ব্যাথা আছে বেশ তবে ফ্র্যাকচার হয়নি। তবু আজ রাত পর্যন্ত নিশ্চিত নন মুশফিকুর রহিম।

লর্ডসের প্র্যাকটিস কমপ্লেক্সে আজ সকালে নেটে ব্যাটিং করতে গিয়ে বল লেগে ডান হাতের কনুইতে ব্যাথা পাওয়া মুশফিককে সাথে সাথে লর্ডসের ড্রেসিং রুমে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে, এক্স-রেও করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানালেন, হাতের ব্যথা পাওয়া জায়গা ফুলে অছে। ব্যথাও আছে বেশ। তবে ফ্র্যাকচার হয়নি। তাই যদি রাতের ভিতরে ফোলা আর ব্যথা কমে যায়, তাহলে হয়ত মুশফিক খেলবে।

শোয়েব মালিকের বিদায়ী ম্যাচ!

মাশরাফির বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচ কাল। তা নিয়ে আজ তেমন হৈচৈ হলো না ঠিক, তবে আরও একটি বিষয় উচ্চারিত হলো। পাকিস্তানি সাংবাদিকরা নিশ্চিত করলেন, অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক কালই হয়তো তার শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি খেলবেন।

যদিও এ ম্যাচে তার খেলার সম্ভাবনা কম। কিন্তু যেহেতু বিশ্বকাপ বড় মঞ্চ, তাই তাকে কাল বাংলাদেশের সঙ্গে খেলার সুযোগ দিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় নেবার সুযোগ করে দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে এবং সম্ভবত শোয়েব মালিক কালই ক্রিকেটকে গুডবাই জানাচ্ছেন।

এআরবি/এসএএস

আরও পড়ুন