নামের পাশের বদনাম ঘোচাতে হিরো হতে চেয়েছিলেন সাইফউদ্দিন
ফিজিও থিহান চন্দ্রমোহনের উদ্ধৃতি দিয়ে ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন, প্রধান নির্বাচক নান্নু মিডিয়ায় জানিয়েছেন, পিঠের ব্যথা আর হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারেননি সাইফউদ্দিন। কিন্তু মাঝে তার বিপক্ষে পত্রিকায় নিউজ হয়েছিল।
বলা হয়েছিল দলের অভ্যন্তরে নাকি একটা কথা প্রচলিত আছে যে, সাইফের বিগ ম্যাচ ‘ফোবিয়া’ আছে। তিনি বড় দল দেখলে ভড়কে যান, না খেলার বাহানা খোঁজেন। যেকোন ক্রিকেটারের বিপক্ষে এটি এক বড় অভিযোগ।
তবে তখন সাইফউদ্দিন সে অভিযোগ খন্ডন করেননি। ঐ কথা সত্য না মিথ্যা- তা নিয়ে একটি কথাও বলেননি কোথাও। তবে আজ (মঙ্গলবার) মুখে কথা ফুটেছে সাইফউদ্দিনের।
ভারতের বিপক্ষে খেলা শেষে মিক্সড জোনে কথা বলতে এসে সাইফ জানিয়ে দিলেন, তার বিপক্ষে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল, সেটা একদমই ভিত্তিহীন এবং পণ করেছিলেন বড় ম্যাচে ভাল খেলে এবং সম্ভব হলে ম্যাচ জিতিয়ে প্রমাণ করবেন, তিনি বড় ম্যাচ দেখে ভয় পান না।
তাই তো সাইফউদ্দিন বলে ওঠেন, ‘কিছুদিন আগে আমাকে নিয়ে একটা ব্যাড নিউজ হয়েছিল, আমি বড় ম্যাচের আগে ভয় পেয়ে ইনজুরির অজুহাতে সরে গিয়েছি। আমার খুব খারাপ লেগেছিল। তখন থেকে আমার পরিকল্পনায় ছিল যে, আমি বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ জিতিয়ে হিরো হবো। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম বল থেকে শেষ পর্যন্ত আমার ইচ্ছা ছিল ম্যাচ জেতানোর। আমার নামে যেসব কথা উঠছিল আমি যেন সেগুলোকে ভুল প্রমাণ করতে পারি এজন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা ছিল।’
ঐ ইস্যুতে তার শেষ কথা, ‘প্লেয়ারদের মাঠে জবাব দিতে হয়। মাঠেই আমরা চেষ্টা করি নিজেদের জবাবটা দেওয়ার। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে ভাবিনি। দল সেমিতে গেলে ভালো হতো। আমি উইকেট রান না পেলেও তখন ভালো লাগত।’
এদিকে দলের সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভঙ্গে আর সবার মত সাইফউদ্দিনেরও মন খারাপ। তার কথা, ‘অবশ্যই খারাপ লাগার মতো একটা দিন ছিল। আমরা টুর্নামেন্ট থেকে বের হয়ে গেছি। চেষ্টা ছিল ম্যাচ জেতানোর। এরকম একটা সুযোগের জন্য সবসময় অপেক্ষায় ছিলাম। ইচ্ছা ছিল হিরো হওয়ার। আমার ব্যাটে-বলে হচ্ছিল। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল যে আমি আজ পারবো। দূর্ভাগ্যবশত হয়নি। ব্যাড ডে ছাড়া কিছুই না।’
জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ না জেতালেও যুব দলের হয়ে একাধিক ম্যাচ উইনিং ইনিংস আছে তার। সেটাই ছিল অনুপ্রেরণা। সে কথা ভেবেই আজ নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন।
এমন তথ্য জানিয়ে সাইফউদ্দিন বলেন, ‘আমার চেষ্টা ছিল। হয়তো আন্তর্জাতিক ম্যাচে এরকম ম্যাচ জেতাইনি। কিন্তু যুব দলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এরকম ম্যাচ জিতিয়েছিলাম। ওই দিনটার কথা স্মরণ করছিলাম। আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবো। নিজের সাথে নিজেকে বলছিলাম।’
আজকের হার না মানা হাফ সেঞ্চুরি সম্পর্কে বলতে গিয়ে সাইফউদ্দীন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন কোনো খেলা এখনও খেলিনি। কিন্তু যুব দল ও ঘরোয়া ক্রিকেটে এরকম পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করেছি। ওই অভিজ্ঞতার কথাগুলো মনে করেছি।’
সাকিব আল হাসান একাই অসাধারণ খেলছেন। তার এই দুর্দান্ত পারফরমেন্স আর সবার জন্য অনুপ্রেরণা হলেও সাইফের আক্ষেপ, ‘বাকিরা সে অর্থে সাকিবকে সাপোর্ট দিতে পারেনি। তাহলে ফল আরও ভাল হতে পারতো। তাই মুখে এমন কথা, নো ডাউট সাকিব ভাইয়ের স্বপ্নের মতো সিরিজ যাচ্ছে। আমরা যদি আরও কয়েকটা প্লেয়ার আরও অবদান রাখতে পারতাম তাহলে উনার জন্য আরও ভালো হতো।’
এআরবি/এসএএস