অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে করতে হবে মিতব্যয়ী বোলিং
আর কয়েক ঘন্টা পর নটিংহ্যামে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ। ম্যাচটি ঘিরে বৃষ্টি আতঙ্ক আছে। যদিও জানা গেছে সকালটা রোদেলাই সেখানে। ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িযে দেয়া যায় না। সেটা অবশ্য অন্য হিসেব। আমাদের হিসেবটা কষতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে। তারা এই বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট দল, আমাদের জন্য শক্তিশালী প্রতিপক্ষ।
বাংলাদেশ যেভাবে এগুচ্ছে তাতে মাশরাফিদেরও এখন ফেভারিট বলতে পারি। এখন বিশ্বে এমন কোনো দল নেই যারা বাংলাদেশকে বলে-কয়ে হারাতে পারবে। তাই এ ম্যাচের ফল কী হবে তার ভবিষ্যতবাণী করাও সম্ভব না। আমি আগেও বলেছি, ম্যাচ জিততে হলে ব্যাটিংয়ে ভালো একটা পার্টনাশিপ দরকার। যেমন আগের ম্যাচে সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ১৮৯ রানের পার্টনারশিপটাই আমাদের জয়ের পথ সুগম করেছিল। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের শুরুটাও ভালো ছিল।
একটা বড় পার্টনারশিপের সঙ্গে ছোট দুই-একটি পার্টনারশিপ হলেই স্কোর প্রত্যাশামতো হয়। সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ দলের ব্যাটম্যানরা একটা ছন্দে আছেন। এখন নজরটা দিতে হবে ভালো বোলিংয়ে। বোলিং যে খারাপ হচ্ছে তা নয়। ভালোর তো আর শেষ নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ব্যাটসম্যানরা ৩২১ রান টপকে ম্যাচ জিতেছে। ব্যাটিংটা যেভাবে হচ্ছিল, বিশেষ করে সাকিব আর লিটনের, তখন মনে হয়েছিল ৩৫০ রান তাড়া করাও যেতো।
কিন্ত একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে ৩০০ প্লাস রান চেজ করতে গেলেই একটু চাপ থাকে। সেটা মাঠ বড় হোক আর ছোট। প্রতিপক্ষ আগে ব্যাট করলে তাদের ৩০০ এর নিচে আটকে রাখতে পারলে বোলিংটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে শুরু করা যায়। বাংলাদেশ ৩২১ রান চেজ করে জিতলো আগের ম্যাচে। অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাট করে এমন একটা পূজি করলে তাও চেজ করা অসম্ভব নয়। কিন্তু রান যদি ৩৫০ প্লাস হয় তখন ম্যাচ কঠিন হয়ে যাবে। চেষ্টা করতে হবে তাদেও ৩০০ এর নিচে আটকে রাখার।
যে কারণে, বোলারদের আরেকটু হিসেবি বল করতে হবে। শুরু থেকেই মিতব্যয়ী বোলিং করতে হবে। আগে-পরে যখনই বোলিং করুক, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রানের লাগামটা টেনে ধরতে না পারলে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ যদি আগে ব্যাট করে তাহলে ৩৫০ বা এর কাছাকাছি রান করলেই ফাইট হবে ম্যাচে।
আরেকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে ইংলিশ কন্ডিশন আমাদের জন্য যতটা কঠিন, অস্ট্রেলিয়ার কাছে ততটা নয়। কারণ, ওরা ওই কন্ডিশনেও খেলে অভ্যস্থ। বাংলাদেশ দলের পজিটিভ দিক হলো আগের ম্যাচে লিটন দাসের দুর্দান্ত ওই ব্যাটিং। প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই সে আত্মবিশ্বাস নিয়েই ব্যাটিং করেছেন। প্রথম ম্যাচ বলে শুরুতে একটুৃ নার্ভাস ছিলেন লিটন। কিন্তু সে নিজে নিজেই ওভারকাম করেছেন সে অবস্থা থেকে। তারপর স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং করেছেন।
সাকিব আল হাসান বিশ্বকাপের মাঝপথ পর্যন্ত রানে লিড করছেন। এটা কিন্তু বাংলাদেশের জন্য বিশাল এক ব্যাপার। আসলে এখন বাংলাদেশের প্রমান করার সময় যে, কোনো অবস্থানে আছে। বলবো ইতিহাস গড়ার সময় এখন। সাকিব যেভাবে দায়িত্ব নিয়ে খেলছেন তাতে মানুষের প্রত্যাশা কিন্তু বাড়ছে।
তবে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিংয়ে আমি একটু হতাশ। এটা ঠিক আগের ম্যাচে এক ওভারে তার নেয়া দুটি উইকেট ছিল টার্নিং পয়েন্ট। কিন্তু মানুষ তার কাছে আরো ভালো কিছু আশা করে। আমি নিজে পেস বোলার। আমি সব সময় তাকিয়ে থাকি পেস বোলারদের ভেরিয়েশন দেখার জন্য। মুস্তাফিজ ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়াবেন-সেটা মিস করছি।
তবে এখানো সময় আছে। মোস্তাফিজ তার আসল বোলিং কারিশমা দেখাবেন নিশ্চয়ই। এ ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ম্যাচটাও আরো মরণ কামড় দিতে হবে। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-সব দিকে ভালো করতে না পারলে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারানো কঠিনই হবে।
আরআই/জেআইএম