নারী ক্রিকেটারদের জন্য খুলছে কোয়াবের দরজা
ক্রিকেটারদের অধিকার সংরক্ষণ ও দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের স্বীকৃতি পাওয়া এ সংগঠনের সদস্য এখন প্রায় ৬০০। সংগঠনটি পরিচালনা করে ১৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি।
প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির সভাপতি ছিলেন হেলাল উদ্দিন লিটন এবং সাধারণ সম্পাদক নাঈমুর রহমান দুর্জয়। দুর্জয় এখন এ সংগঠনের সভাপতি। আর সাধারণ সম্পাদক আরেক সাবেক ক্রিকেটার দেবব্রত পাল। সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের নিয়ে গঠিত এ সংগঠনটি নতুন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমান নির্বাহী কমিটির মেয়াদ বছর দেড়েক আগে।
ক্রিকেটারদের এ সংগঠনটিতে এতদিন শুধু ছেলেরাই সদস্য হতে পেরেছেন। কোনো মেয়ে ক্রিকেটার নেই কোয়াবের সদস্য হিসেবে। কিন্তু বর্তমান নির্বাহী কমিটির দুই শীর্ষ কর্মকর্তা সংগঠনে মেয়ে ক্রিকেটারদের সদস্য হওয়ার পথ খোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। তাদের এই চিন্তা তরান্বিত করছে এবার নারী প্রিমিয়ার লিগে কয়েকটি ক্লাবের পারিশ্রমিক নিয়ে টালবাহানার ঘটনাটি।
বিশেষ করে প্রিমিয়ার লিগ থেকে প্রথম বিভাগে নেমে যাওয়া গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের মেয়েদের পারিশ্রমিক আটকে দেয়ার ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ায় তা নিয়ে ব্যপক আলোচনা হয় ক্রিকেটাঙ্গনে। দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজে এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর কোয়াব ও ক্রিকেট বোর্ডের তৎপরতায় তিন দিনের মধ্যে মেয়েদের সব পাওয়ানা পরিশোধ করে ওই ক্লাবটি।
‘এর আগে আমরা কখনো মেয়ে ক্রিকেটারদের কোনো সমস্যা নিয়ে কাজ করিনি। তবে আমাদের জানা ছিল কয়েকটি ক্লাব মেয়েদের পারিশ্রমিক নিয়ে এদিক-সেদিক করে। তাই আমার মনে হচ্ছে, দেশে যেহেতু মেয়েদের ক্রিকেটও এগিয়ে যাচ্ছে তাই তাদের কোয়াবের সদস্য করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারেই দেখা দরকার। আমরা সে চিন্তা ভাবনাই করছি’- বলেন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসেসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক দেব্রবত পাল।
এ বিষয়ে কোয়াবের সভাপতি নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনিও সম্ভাবনার কথা বলেছেন, ‘হ্যাঁ, এমন হতে পারে।’ গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের নারী ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে ঝামেলার খবর প্রকাশের পর নাঈমুর রহমান দুর্জই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাদের টাকা পাইয়ে দিতে। এমনকি ঈদের আগে ক্লাবটি টাকা দিতে না পারলে বিসিবি থেকে তা পরিশোধের উদ্যোগও নিয়েছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এ অধিনায়ক। পরে অবশ্য গুলশান ইয়ুথ ক্লাবই ঈদের আগের দিনে মেয়েদের পাওনা পরিশোধ করে দেয়।
কোয়াবে মেয়েদের সদস্য করার পথ উম্মুক্ত করার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সালমা খাতুন। শুক্রবার তিনি জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘যেহেতু ছেলেরা এখানে সদস্য তাই মেয়েরা সে সুযোগ পেলে ভালোই হবে। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা একটা ভালো উদ্যোগ।’
আরআই/আইএইচএস/এমকেএইচ