১৯ রানে শুরু করে ১৪ বছরে ২১৯’এ মুশফিক
দলের সাথে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন ব্যাকআপ উইকেটরক্ষক হিসেবে। তার ব্যাটিং নিয়ে ছিলো না তেমন কোন উচ্চাশা। অথচ সফরের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ৬৩ এবং অপরাজিত ১১৫ রানের ইনিংস খেলে টিম ম্যানেজম্যান্টকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেন ১৮ বছরের ‘সেই ছোট্ট’ ক্রিকেটার।
যার ফলে ওই সফরের ১ম টেস্টে ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামিয়ে দেয়া হয় ১৮ বছরের তরুণ মুশফিকুর রহিমকে। ম্যাচে অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার ভিড়ে নিজের প্রথম ইনিংসে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রানের ইনিংস, দুই ইনিংস মিলে রান করেন ২২ (১৯ ও ৩)।
আজ থেকে ঠিক ১৪ বছর আগে ২৬ মে তারিখে লর্ডসে শুরু হয়েছিল একজন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকের যে যাত্রা, তা আজও চলমান তার আপন মহিমায়। প্রায় দেড় দশকের এ যাত্রায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের হাঁটি হাঁটি পা পা থেকে শুরু করে শক্ত সামর্থ্য হয়ে দৌড়ানো পর্যন্ত- প্রত্যেক ঘটনার সাক্ষী মুশফিক। মাত্র ১৯ রানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করা মুশফিকের নামের পাশে এখন রয়েছে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ২১৯* রানের রেকর্ড।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাফল্য-ব্যর্থতা, পতন-উত্থানের সাক্ষী থাকা মুশফিক ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক। তার অধীনে বাংলাদেশ টেস্টে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, শ্রীলংকার মত পরাশক্তিদের। প্রথমবারের মতো খেলেছে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে। সবমিলিয়ে ৩৭টি ওয়ানডে, ৩৪টি টেস্ট এবং ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিক।
এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৬টি টেস্ট খেলেছেন মুশফিক। দেশের ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এবং এখনো পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ২টি ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিক মোট ৬টি সেঞ্চুরিতে ৩৫.১৪ গড়ে রান করেছেন ৪০০৬।
রঙিন পোশাকের ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০৫ ম্যাচ খেলে ৩৪.৭৬ গড়ে মুশফিকের রান ৫৫৫৮, সেঞ্চুরি ৬টি। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতেও টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৭টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৪ ফিফটিতে মুশফিকের নামের পাশে রয়েছে ১১৩৮ রান।
২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করা মুশফিক আজ পা দিলে ১৫তম বছরে। এ বছরটিকে রাঙিয়ে রাখার দারুণ সুযোগ রয়েছে এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের সামনে। আগেই জানিয়েছেন এবারের বিশ্বকাপে তার একটি লক্ষ্য রয়েছে, কিন্তু সেটি কী তা বলেননি মুশফিক। তবে মুশফিকের লক্ষ্য পূরণ হলেই আনন্দে ভাসবে বাংলাদেশ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১৮ কোটি বাংলাদেশিরও প্রার্থনা থাকবে মুশফিকের সঙ্গে।
এসএএস/আরআইপি