আফগানদের হারিয়ে স্বপ্নের সূচনা করেছিল বাংলাদেশ
* ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ, প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান
বাংলাদেশের ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থানে আসার পেছনের সময়টাকে ক্রিকেট বোদ্ধারা দুইভাগে ভাগ করবেন। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগের বাংলাদেশ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপের পরের বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের আগের বাংলাদেশ যে ক্রিকেটে কখনও সাফল্য পায়নি তা নয়, কিন্তু সেখানে ধারাবাহিকতার অভাব ছিল সুস্পষ্ট। ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা কিংবা ওই টুর্নামেন্টে শচীনের শততম সেঞ্চুরির ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে দেয়ার ঘটনা তো কম সাফল্যমণ্ডিত নয়!
তবুও কেন দুই ভাগ? এর কারণ হচ্ছে, ২০১৫ সালের পর থেকে সম্পূর্ণ বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশ। এর আগে সাফল্য পেলেও সেগুলো ছিল মাঝে-মধ্যে। ধারাবাহিকতাহীন। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে বলতে গেলে এক ধরনের ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
২০১৪ সালের শেষ মুহূর্তে এসে নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটানো হলো। দায়িত্ব দেয়া হলো মাশরাফির কাঁধে। সেই কাঁধটা এতই চওড়া যে বাংলাদেশকে বহন করে নিয়ে আজ অবধি পথ চলছেন মাশরাফি। তার নেতৃত্বের প্রথম ধাপ ছিল জিম্বাবুয়েকে ৫-০ ব্যবধানে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করা এবং পরের ধাপের শুরু হয়েছিল ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে।
এই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ মুখোমুখি আফগানিস্তানের। পঁচা শামুকে পা কাটার মত, ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে আফগানদের কাছে ঘরের মাঠে হেরেছিল বাংলাদেশ। যে কারণে, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আফগানদের মুখোমুখি হওয়ার আগে একটা দুরু দুরু ভাব মনের মধ্যে তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু মাঠে নামার পর সব কিছুই উড়িয়ে দেয় টাইগাররা। আফগানিস্তানকে ১০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপে স্বপ্নের সূচনা করে বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহীম।
ক্যানবেরার মানুকা ওভালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ম্যাচটি, ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি। তামিম আর এনামুল হক বিজয়ের উদ্বোধনী জুটিতে উঠে যায় ৪৭ রান। ১৯ রান করে তামিম, এরপর ২৯ রান করে বিদায় নেন বিজয়।
তিন নম্বরে সৌম্য সরকার করেন ২৮ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হন ২৩ রান করে। মিডল অর্ডারে এসে দলের হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহীম। এ দু’জনের ১১৪ রানের বিশাল জুটির ওপর ভর করেই লড়াকু সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
৫১ বলে ৬৩ রান করে আউট হন সাকিব আল হাসান। মুশফিকুর রহীম করেন সর্বোচ্চ ৭১ রান। ৫৬ বলে খেলা এই ইনিংসটি সাজানো ছিল ৬টি বাউন্ডারি আর ১টি ছক্কায়। মাশরাফি করেন ১৪ রান। তবুও ইনিংসের একেবারে শেষ বলে এসে তাসকিন আউট হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ হলো অলআউট। স্কোরবোর্ডে ওঠে ২৬৭ রান।
জবাব দিতে নেমে আফগান ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের বোলারদের সামনে। মাশরাফি, রুবেল, তাসকিন, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, সৌম্য এবং সাব্বির বাংলাদেশের পক্ষে বোলিং করেন। এর মধ্যে মাশরাফি নেন ৩ উইকেট। ২টি নেন সাকিব আল হাসান। আফগানরা ৪২.৫ ওভারে অলআউট হয়ে গেলো মাত্র ১৬২ রানে। বাংলাদেশ জিতে গেলো ১০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে।
আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন মোহাম্মদ নবি। ৪২ রান করেন সামিউল্লাহ সিনওয়ারি। এছাড়া নওরোজ মোগল ২৭, নজিবুল্লাহ জাদরান করেন ১৭ রান।
আইএইচএস/এমএস