খেলার জন্য শেষবারের মতো মেয়ের মুখটাও দেখতে পারলেন না আসিফ
একজন বাবার জন্য এর চেয়ে কষ্ট আর কি হতে পারে? ইংল্যান্ডে তিনি খেলছিলেন দেশের জন্য, আর যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিল মেয়ে। বুকে সেই পাহাড়সমান কষ্ট নিয়েই খেলে গেলেন আসিফ আলি। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডে থেকেই শুনলেন তার আদরের কন্যাটি আর পৃথিবীতে নেই।
অন্য সময় হলে হয়তো এই সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতেন আসিফ আলি। কিন্তু এই সময়টায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া পাকিস্তানি এই মিডল অর্ডারের জন্য ভীষণ কঠিন ছিল।
বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাননি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ডাক পেয়ে তাই দ্বিতীয় ভাবনার সুযোগ ছিল না। অসুস্থ মেয়েকে রেখেই আসিফ পারি জমান ইংল্যান্ডে।
রোববার লিডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে চলছিল পাকিস্তানের। ম্যাচে আসিফ আলি করেন ১৭ বলে ২১ রান। এই সময়টাই ক্রিজে থাকতে মনের সঙ্গে তাকে কতটা যুদ্ধ করতে হয়েছে, একজন বাবা ছাড়া বোধ হয়ে সেটা কেউই উপলব্ধি করতে পারবেন না।
কয়েক মাস আগেই ক্যান্সার ধরা পড়ে আসিফ আলির মেয়ের। রোববার পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান খেলতে নামার কয়েক ঘন্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর অবস্থায় তার মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নেয়া হয়। সেই খবরটি শুনেই মাঠে নামেন আসিফ। তারও আধা ঘন্টা আগেই পরপারে পারি জমিয়েছে কন্যা।
ট্রাজিক এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। মেয়ের মৃত্যুর খবর পরে জেনেছেন আসিফ, কিন্তু শেষবারের মতো তার মুখটাও দেখতে পারেননি।
মেয়ের অসুস্থতার এই খবর অনেকটা দিন ধরেই বুকে চেপে রেখেছেন আসিফ। এরই মধ্যে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হয়ে পাকিস্তান সুপার লিগে খেলেছেন। এরপর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে মনকে শক্ত করেই মাঠে খেলে গেছেন।
জীবন কখনও কখনও খুব নিষ্ঠুর। জীবিকার তাগিদে কখনও এমন কিছু মেনে নিতে হয়, যা আসলে মেনে নেয়ার মতো নয়!
এমএমআর/জেআইএম