ডব্লিউ জি গ্রেসের স্মৃতি বিজড়িত ব্রিস্টল গ্রাউন্ড
ইংল্যান্ডের আরেকটি পুরনো স্টেডিয়াম ব্রিস্টল ক্রিকেট গ্রাউন্ড। স্পন্সরশিপের কারণে এই স্টেডিয়ামকে অনেকেই ব্রাইট সাইড গ্রাউন্ড হিসেবেও চিনে থাকেন। কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব গ্লস্টারশায়ারের হোম ভেন্যু এই মাঠটি, সেই ১৮৮৯ সাল থেকে। অর্থ্যাৎ, গত ১৩০ বছর গ্লস্টারশায়ারের হোম ভেন্যু এই মাঠ।
এবারের বিশ্বকাপে এই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ। ১ জুন, আফগানিস্তান-অস্ট্রেলিয়া, ৭ জুন পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা এবং ১১ জুন বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা- এই তিনটি ম্যাচ। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে আরও তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই মাঠে। ১৯৮৩ সালে শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ড, ১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান এবং কেনিয়া-ভারত- এই তিনটি ম্যাচ।
ব্রিস্টল ক্রিকেট গ্রাউন্ডের সুন্দর একটি ইতিহাস রয়েছে। শুরুতে এই গ্রাউন্ডের নাম ছিল অ্যাশলে ডাউন গ্রাউন্ড। ১৮৮৯ সালে কিংবদন্তি ডব্লিউ জি গ্রেস এই মাঠকি কিনে নেন। এরপর থেকে গ্লস্টারশায়ারের হোম ভেন্যু এটি।
তবে স্টেডিয়ামটি পরে আবার বিক্রি করে দেয়া হয় স্থানীয় কনফেকশনারি ফার্ম জে এস ফ্রাই অ্যান্ড সন্সের কাছে। এরপর এই মাঠের নামকরণ হয় ফ্রাইস গ্রাউন্ট নামে। ১৯৩৩ সালে গ্লস্টারশায়ার আবার মাঠটি কিনে নেয় এবং আগের নামই আবার ফিরিয়ে আনা হয় তখন।
১৯৭৬ সালে আবারও বিক্রি করা হয় ব্রিস্টল গ্রাউন্ড। কিনে নেয় রয়্যাল অ্যান্ড সান অ্যালায়েন্স। তারা স্টেডিয়ামটির নামকরণ করে ফনিক্স কাউন্টি গ্রাউন্ড। ৮ বছর ছিল এই নাম। এরপর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় দ্য রয়্যাল অ্যান্ড সান অ্যালায়েন্স কাউন্টি গ্রাউন্ড। নতুন করে ক্লাবটি মাঠটি কিনে না নেয়া পর্যন্ত এই নাম ছিল। ক্লাব কর্তৃক মাঠ পূনরায় কেনার পর বর্তমান নাম নিয়ে আসা হয়।
স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা সাধারণত ৮ থেকে ৯ হাজার। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হলে এই মাঠের দর্শক ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে নেয়া হয় ১৭ হাজার পর্যন্ত।
২০০৯ সালে গ্লস্টারশায়ার ঘোষণা করে, তারা এই স্টেডিয়ামটিতে সংস্কার কাজ পরিচালণা করবে। অন্তত ২০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন করার লক্ষ্য তাদের। তাতে করে এই স্টেডিয়ামের ওয়ানডে স্ট্যাটাসটা বজায় থাকবে। ২০১০ সালে ব্রিস্টল সিটি কাউন্সিল সংস্কারের অনুমতি প্রদান করে।
একই বছর পরিকল্পনা পরিবর্তন করা হয়। মাঠ সংলগ্ন আবাসিক এলাকার কথা চিন্তা করে দর্শক ধারণক্ষমতা কমিয়ে আনা হয় সাড়ে সাত থেকে আট হাজারে। তবে সাময়িকভাবে ১৭ হাজার ৫০০ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে ধারণক্ষমতা। ওই সংস্কারের ফলশ্রুতিতে এখন আধুনিক মিডিয়া সেন্টার এবং কনফারেন্স সুবিধা রয়েছে।
এই মাঠে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ভারতের শচীন টেন্ডুলকার ১৪০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। কেনিয়ার বিপক্ষে একই ম্যাচে রাহুল দ্রাবিড় খেলেছিলেন অপরাজিত ১০৪ রানের ইনিংস। এই মাঠে টেন্ডুলকারের আরও একটি সেঞ্চুরি রয়েছে, ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এছাড়া রিকি পন্টিং, অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফ এবং মঈন আলিও সেঞ্চুরি করেছিলেন এই মাঠে।
আইএইচএস/পিআর