অধিনায়ক ধোনির সফলতার রহস্য জানালেন ভারতের মনোবিদ
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা অধিনায়ক কে?- এমন প্রশ্নের জবাবে উঠে আসবে বেশ কয়েকটি নাম। যুক্তিতর্ক চলবে কপিল দেব, সৌরভ গাঙ্গুলি কিংবা মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঘিরে। তবে একই দেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়কের নাম জিজ্ঞেস করা হলে, যে কেউ এক বাক্যে মেনে নিতে বাধ্য সেটি আর কেউ নয়- মহেন্দ্র সিং ধোনি।
কারণ ধোনির নেতৃত্বে সম্ভাব্য সকল শিরোপা জিতেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। ২০০৭ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টি থেকে শুরু করে ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কিংবা টেস্ট ক্রিকেটের শীর্ষস্থানে ওঠা- সবই হয়েছে ধোনির নেতৃত্বে।
ধোনির এমন সফলতার চর্চা হয় সারা বিশ্বজুড়েই। কীভাবে পেরেছেন এমন অভাবনীয় সব সাফল্য পেতে? ভারতীয় দলটাই বা কীভাবে বদলে গেছে তার অধীনে? এসব বিষয় জানতে ভক্ত-সমর্থকদের আগ্রহের কমতি নেই।
প্রায় এক দশক পর সে রহস্য জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক মনোবিদ প্যাডি আপটন। তার মতে টিম মিটিং এবং অনুশীলনের ব্যাপারে অনেক বেশি সিরিয়াস থাকার কারণেই নিয়মিত সাফল্য পেত ভারতীয় দল।
সেসবের স্মৃতিচারণ করে আপটন বলেন, ‘আমি যখন ভারতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিলাম, তখন টেস্টের অধিনায়ক অনিল কুম্বলে এবং ওয়ানডেতে মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রতিটি ব্যক্তি খেলোয়াড়কে উজ্জীবিত রাখার জন্য আমাদের বিশেষ উপায় ছিলো। তাই আমরা দলের সবাইকে জিজ্ঞেস করলাম, অনুশীলনে সময়মত থাকা কি গুরুত্বপূর্ণ? সবাই উত্তর দিয়েছিল, হ্যাঁ।’
‘তো আমরা তখন তাদের জিজ্ঞেস করলাম, কেউ যদি টিম মিটিং অথবা অনুশীলনে সময়মত আসতে ব্যর্থ হয়, তবে কি তাকে বাদ দিয়ে দেয়া হবে?- এমন প্রশ্নের জবাবে কেউ সদুত্তর দিতে পারেনি। তাই সবাই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে জানালো, এটার সিদ্ধান্ত অধিনায়কেরই নেয়া উচিৎ’- আরও বলেন আপটন।
তিনি জানান, এমন পরিস্থিতিতে কুম্বলে ঠিক করেন কোনো খেলোয়াড় অনুশীলনে দেরি করলে ১০ হাজার রুপি জরিমানা গুনবে। কিন্তু ধোনির এত অল্প শাস্তি মনঃপুত হয়নি। তাই সে ঠিক করলো দলের একজন খেলোয়াড় দেরি করলে, দলের সবাইকে ১০ হাজার রুপি করে জরিমানা দিতে হবে।
আপটনের ভাষ্যে, ‘টেস্ট দলে কুম্বলে ঠিক করলো যে দেরি করবে সে ১০ হাজার রুপি জরিমানা দেবে। আমরা যখন ওয়ানডে দলে কুম্বলের এই শাস্তির কথা তুললাম, তখন ধোনি জানালো সেও শাস্তির পক্ষে। তবে তা শুধু একজনের নয়, দলের কেউ দেরি করলে সবাইকেই ১০ হাজার রুপি করে দিতে হবে। ধোনির এমন সিদ্ধান্তের পর আর কেউ কখনোই অনুশীলনে দেরি করেনি।’
এসময় ধোনির প্রশংসা করে আপটন আরও বলেন, ‘ধোনির মূল শক্তির জায়গা ছিলো তার শান্ত থাকার ক্ষমতা এবং যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়া, সেটা যতো কঠিনই হোক। একজন অধিনায়ক হিসেবে যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের সামর্থ্য এবং ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করতে পারে সে। এমনকি দলের খেলোয়াড়দেরও শান্ত থাকতে সহায়তা করে সে। এটাই তার মূল শক্তি।’
এসএএস/এমকেএইচ