অনন্য সব রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে এবারের আইপিএল
বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। অর্থের ঝনঝনানির সঙ্গে গ্ল্যামারের হাতছানি বাড়তি আকর্ষণ যোগ করে এ টুর্নামেন্টে। তবে এত সবের ভিড়ে কিন্তু হারিয়ে যায় না মাঠের খেলা ক্রিকেট। ব্যাট-বলের লড়াইটাও হয় জমজমাট।
তাই তো আইপিএলের প্রতি আসরেই দেখা মেলে নানান সব কীর্তির, নতুন করে লেখা হয় হরেক রেকর্ড। সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আইপিএলের সদ্যসমাপ্ত আসরেও মিলেছে অনেক রেকর্ডের দেখা। অনন্য সব কীর্তি গড়েছে দলগুলো।
আইপিএলের এবারের আসরে উল্লেখযোগ্য যেসব রেকর্ড হয়েছে সেগুলোই তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে:
১৩- আইপিএলের যেকোনো ম্যাচে এক দলে সর্বোচ্চ ৪ জন বিদেশি খেলানোর নিয়ম থাকলেও এবারের আসরে ১৩ বার দেখা মিলেছে ৪ জনের কম বিদেশি নিয়ে খেলতে নামার নজির। যা কিনা এক আসরে চারের কম বিদেশি নিয়ে খেলতে নামার নতুন রেকর্ড। এর আগে ২০১৭ সালে এমন ঘটনা ঘটেছিল ছয়বার। এবারের আসরে দুইটি ম্যাচে দুই দলেই ছিলো চারের কম বিদেশি খেলোয়াড়। অথচ আগের এগারো আসরে এমন দেখা গিয়েছিল মাত্র একবার।
১১- এ আসরে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর পয়েন্ট ছিলো ১১। আইপিএলের ইতিহাসে এটিই টেবিলের তলানির দলের সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়ার রেকর্ড। পুরো টুর্নামেন্টের ২০ শতাংশ ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়েছে ১০ রানের কম ব্যবধানের জয় কিংবা শেষ ওভারে।
৩২- পুরো টুর্নামেন্টে নিজেদের একাদশে ঘুরে-ফিরে মোট ৩২ খেলোয়াড়কে নিজেদের আগের ম্যাচের একাদশ থেকে পরিবর্তন করেছে কিংস এলেভেন পাঞ্জাব। এমনকি পুরো আসরে একবারও পরপর দুই ম্যাচে একই একাদশ নিয়ে খেলেনি তারা।
১২- এ আসরে আইপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ জন অনুর্ধ্ব-১৯ খেলোয়াড় খেলেছেন। এই ১২ জন মিলে খেলেছেন ৭২টি ম্যাচ। ১৬ বছর ১৫৭ দিন বয়সে ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে খেলতে নেমে আইপিএলের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন প্রয়াস রয় বর্মন। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ফিফটি করেছে রিয়ান পরাগ। মাত্র ১ রানের জন্য আইপিএলের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার কীর্তি গড়তে পারেননি পৃথ্বি শ।
১৩- টুর্নামেন্টের শেষ তিন ওভারে ৫০ বা তার বেশি রান হয়েছে ১৩ বার। যা কিনা এক আসরের সর্বোচ্চ। এর মধ্যে হায়দরাবাদের বিপক্ষে শেষ ২.৪ ওভারে ৫৪ এবং ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে শেষ ২.১ ওভারে ৫৩ রান করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে কলকাতা।
৫- এ আসরে ৬৯২ রান করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের পুরষ্কার 'অরেঞ্জ ক্যাপ' জিতেছেন হায়দরাবাদের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। এ নিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো আইপিএলে ৫০০+ রান করার নজির দেখালেন তিনি। এ কীর্তি গড়ার পথে ক্রিস গেইলকে সরিয়ে তিনিই এখন আইপিএলে বিদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (৪৭০৬)। এছাড়া গেইলের ২ বার অরেঞ্জ ক্যাপ জেতার রেকর্ড ভেঙে তৃতীয়বারের মতো এটি জিতেছেন ওয়ার্নার।
৫০.০৯%- পুরো টুর্নামেন্টে হায়দরাবাদের মোট রানের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৫০.০৯ শতাংশ রানই এসেছে দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো এবং ডেভিড ওয়ার্নারের জুটি থেকে। আইপিএল ইতিহাসে টানা তিন ম্যাচে ১০০ রানের জুটি গড়া প্রথম রেকর্ডও গড়েছেন তারা।
২০৪.৮২- এবারের আসরে কমপক্ষে ১০০ বল খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট ছিলো আন্দ্রে রাসেলের। তিনি ২০৪.৮২ গড়ে করেছিলেন ৫১০ রান। যা কিনা এক আসরে সর্বোচ্চ আসরের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটাও ছিলো তার। ২০১৫ সালের আসরে রাসেল খেলেছিলেন ১৯২.৯০ স্ট্রাইকরেটে।
৫৬- ১৪ ম্যাচে সম্ভাব্য ১৪০ উইকেটের মধ্যে মাত্র ৫৬টি নিতে পেরেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। যা কিনা এক আসরে কোনো দলের সর্বনিম্ন উইকেট শিকারের নজির। এর আগে ২০০৯ সালের আসরে তারা শিকার করেছিল ৫৯ উইকেট।
২৬- এবারের পার্পল ক্যাপ তথা সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির পুরষ্কার জিতেছেন ইমরান তাহির। তার উইকেট ছিলো ২৬টি, আইপিএলের এক আসরে কোনো স্পিনারের এটিই সর্বোচ্চ উইকেট নেয়ার রেকর্ড। এর আগে ২০১২ সালে সুনিল নারিন এবং ২০১৩ সালে হরভজন সিং নিয়েছিলেন ২৪টি করে উইকেট।
এসএএস/জেআইএম