পঞ্চপাণ্ডবের হাফসেঞ্চুরি
'পঞ্চপাণ্ডব'- শব্দটা শুনলেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত যে কারো মনে বেজে ওঠে একসঙ্গে পাঁচটি নাম। বর্তমান বাংলাদেশ দলের স্তম্ভ যে পাঁচজন- মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাদের একসঙ্গে ভালোবেসে ডাকা হয় 'পঞ্চপাণ্ডব'।
ক্রিকেট দলে তাদের অবদানের কারণেই মূলত বলা হয় এমন। আর সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে এ পাঁচজনের একসঙ্গে পূরণ হয়েছে একটি চক্র। মোস্তাফিজ-মাশরাফির বোলিং আর সৌম্য-মুশফিকদের ব্যাটে পাওয়া ৫ উইকেটের জয়টি ছিলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পঞ্চপান্ডবের একসঙ্গে খেলা ৫০তম জয়।
অর্থাৎ মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা খেলেছেন এমন ম্যাচগুলোতে (সব ফরমেট মিলিয়ে) বাংলাদেশের ৫০তম জয়। ম্যাচ জেতার এ ফিফটি করতে পঞ্চপাণ্ডবের একসঙ্গে খেলতে হয়েছে ১০৩টি ম্যাচ। ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া পঞ্চপান্ডবের এই এক যুগের যাত্রায় ৫০তম জয় বিশেষ এক মাইলফলক।
২০০৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পঞ্চপান্ডবের যাত্রা। তবে প্রথম জয়টি পেতে অপেক্ষা করতে হয় ২০০৮ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত, তাদের তৃতীয় ম্যাচে। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে জয়ের খাতা খুলেছিল পঞ্চপান্ডব। আর ১০৩তম ম্যাচে এসেছে মিলেছে ৫০তম জয়।
মাশরাফি বিন মর্তুজার ইনজুরির কারণে পঞ্চপাণ্ডব একসঙ্গে টেস্ট খেলতে পেরেছে মাত্র ১টি। কারণ ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে ম্যাচে শেষবারের মতো টেস্ট খেলেছেন মাশরাফি, সে ম্যাচটিই ছিলো মাহমুদউল্লাহর অভিষেক টেস্ট ম্যাচ। তবে সে ম্যাচে ৯৫ রানের সহজ জয় পেয়েছিল টাইগাররা। ফলে পঞ্চপান্ডবের টেস্ট অধ্যায়টা রয়েছে শতভাগ সফল।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এই পাঁচ একসঙ্গে খেলেছেন ৭৩টি ম্যাচ। এর মধ্যে পরিত্যক্ত হয়েছে ৩টি এবং ৩৩টি ম্যাচে পরাজয়ের বিপরীতে জয় মিলেছে ৩৭টি ম্যাচেই। অর্থাৎ ওয়ানডে ক্রিকেটেও পঞ্চপান্ডবের সাফল্যের পাল্লাটা ভারী। এর মধ্যে ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানো ম্যাচ, একই বছর ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ২০১৮ সালের এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলার মতো সাফল্যগুলো উল্লেখযোগ্য।
তবে সে তুলনায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব একটা ভালো যায়নি পঞ্চপাণ্ডবের যাত্রা। একসঙ্গে ২৯ ম্যাচ খেলে ১টি পরিত্যক্ত ম্যাচ বাদে ১২টি জয়ের বিপরীতে পরাজয়ের সংখ্যাই ১৬ ম্যাচে। তবু এর মধ্যে রয়েছে ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনাল খেলার মতো সুখস্মৃতি।
এসএএস/পিআর