ওয়াসিম জাফরই কি বদলে দিলেন সৌম্যকে!
তার ব্যাটে রান নেই। অথচ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়ে গেছেন। ভক্ত-সমর্থকদের রাজ্যের দুশ্চিন্তা। সৌম্য সরকারকে কেন বিশ্বকাপ দলে নেয়া হলো, এমন প্রশ্নও ছিল সমালোচকদের। সৌম্য সেটার জবাবটা অবশেষে দিয়েছেন ব্যাটেই।
আগের ম্যাচে ঝড়ো এক সেঞ্চুরি করেই ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সৌম্য। এবার তো ছাড়িয়ে গেলেন সব কিছুকেই। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করলেন, গড়লেন ছক্কার রেকর্ডও। সেটাও আবার কোন ম্যাচে, আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন করার গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচে।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব আবাহনীর সামনে ছুড়ে দিয়েছিল ৩১৮ রানের বড় লক্ষ্য। কিন্তু এই বড় লক্ষ্যকে মামুলি বানিয়ে ছাড়লেন সৌম্য সরকার আর জহুরুল ইসলাম। দুই ওপেনার মিলেই গড়লেন ৩১২ রানের জুটি, এরপর আর এই ম্যাচ আবাহনী হারে কি করে!
জহরুল সেঞ্চুরি করে শেষ মুহূর্তে এসে আউট হয়েছেন। তবে সৌম্যকে থামাতে পারেননি শেখ জামালের বোলাররা। ১৫৩ বলে তিনি অপরাজিত থাকেন ২০৮ রানে, যে ইনিংসে চারের চেয়ে ছক্কা বেশি। ১৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে বাঁহাতি এই ব্যাটিং জিনিয়াস ছক্কা হাঁকান ১৬টি!
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি, এবার কি ডাবল সেঞ্চুরির লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন? সৌম্য বলেন, ‘তিনশোর উপরে রান তো অবশ্যই একটা চাপ। আমার শুরু থেকে লক্ষ্য ছিল না ডাবল সেঞ্চুরি বা এমন কিছু করার। এমন কোনো টার্গেট ছিল না। ১৯০ পর্যন্তও আমি ঠিক ডাবল সেঞ্চুরির কথা মাথায় আনিনি। তবে ১৯০ পার হওয়ার ভাবলাম, এখন আর আউট হওয়া যাবে না। এবার ইনিংসটা টেনে নেয়া যায়। আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, যত লম্বা খেলতে পারব, দল তত উপকৃত হবে। আমি চেষ্টা করেছি, ইনিংসটাকে যত সম্ভব বড় করা যায়।’
সৌম্যর এই বড় ইনিংসের পেছনেও কিন্তু একটা গল্প আছে। ওয়াসিম জাফরের অবদানও আছে। জানা গেছে, গত কয়েকদিনে তার সঙ্গে টুকটাক কাজ হয়েছে আবাহনীর এই ভারতীয় ব্যাটসম্যানের।
সেটাই কি কাজে দিলো? এ নিয়ে সৌম্যর অভিমত, ‘ওয়াসিম জাফর অনেক বড় খেলোয়াড়, যার নামের পাশে প্রথম শ্রেণি ও অন্যান্য ক্রিকেট মিলে ৪০ হাজারের মতো রান। তার প্রচুর বড় ইনিংস রয়েছে। আমি তার কাছ থেকে কোনো টেকনিক্যাল সাহায্য নেইনি। তবে তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি কিভাবে লম্বা ইনিংস খেলেন, সেটা করতে কি ধরণের শারীরিক-মানসিক প্রস্তুতি লাগে, সেগুলো নিয়ে আলাপ করেছি। আমি বিশ্বাস করি, এটা আমার সামনেও কাজে দেবে।’
সামনে বিশ্বকাপ। ফর্ম ফিরে পাওয়ায় নিশ্চয়ই মাথার উপর থেকে অনেক বড় একটা বোঝা নেমে গেল। সৌম্য নিজেও মনে করছেন, এই ইনিংস দুটি তাকে বিশ্বকাপে ভালো খেলতে উৎসাহিত করবে, ‘আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি আর এবার ডাবল সেঞ্চুরি। অবশ্যই বিশ্বকাপে ভালো খেলার টনিক হবে। আশা করছি, ভালো করতে পারব।’
এআরবি/এমএমআর/পিআর