‘সোজা ব্যাটে’ রানখরা কাটলো সৌম্যর
চলতি লিগে সৌম্যর ব্যাট যেন হারিয়ে গেছিল অন্ধকারে। ১১টি ম্যাচ খেলে সেঞ্চুরি দূরে থাক কোনো ফিফটিও ছিলো না তার ব্যাটে। তবু জায়গা পেয়েছেন বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। কারণ তার সামর্থ্যের ব্যাপারে সংশয় নেই জাতীয় দলের।
তবু সৌম্যর ব্যাটে রানখরায় শঙ্কা ঢুকে যায় সমর্থকদের মনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলতে থাকে অফফর্মে থাকা সৌম্যর সমালোচনা। যার ফলে খানিক অস্বস্তিতে পড়ে যান সৌম্য নিজেও। রানখরা কাটানোর জন্য আলাদা করে কাজ করেন নিজের ব্যাটিং নিয়ে।
যার সুফল তিনি পেলেন আজ। বিকেএসপিতে শিরোপা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই খেললেন ৭৯ বলে ১০৬ রানের ইনিংস, দেখালেন সেরা সৌম্যর ঝলক। ম্যাচ শেষে জানালেন সোজা ব্যাটে খেলেই মূলত চাপকে জয় করে রানে ফিরতে পেরেছেন তিনি।
দিনের দ্বিতীয় ওভারে, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদকে লং অনের পাশ দিয়ে সোজা ব্যাটে চার হাঁকানোর মধ্য দিয়ে শুরু। আর পঞ্চাশের আশ-পাশে থাকতে ভারতীয় মিডিয়াম পেসার ঋশি ধাওয়ানের বলে পুল করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। খেলতে চেয়েছিলেন স্কয়ার লেগে, ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে মিস হিট হয়ে লং লেগের উপর দিয়ে সীমানার ওপারে আছড়ে পড়ে ছক্কা।
এছাড়া যে বল যেখানে খেলতে চেয়েছেন, সেখানেই অনায়াসে খেলেছেন। একেবারে চান্সলেস ইনিংস। নিখুঁত-মসৃণ বলতে যা বোঝায়, তেমনই ব্যাট করে গেলেন। ৩৯ বলে এবারের প্রিমিয়ারে প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাওয়ার পর ইনিংসটাকে সৌম্য নিয়ে গেলেন তিন অংকের ঘরেও।
৭১তম বলে সেই বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদকে, দিনের ২৩ নম্বর ওভারের প্রথম বলে কব্জি মোচড়ে শর্ট ফাইন লেগে ঘুরিয়ে সিঙ্গেলস নিয়েই শতরান পূর্ণ করেন সৌম্য সরকার। বলাই বাহূল্য, এবারের মৌসুমে এটা সৌম্যর প্রথম সেঞ্চুরি। ১৫টি চার এবং ২টি ছক্কায় সাজান এই ইনিংস।
ম্যাচ শেষে এ ইনিংসের প্রতিক্রিয়ায় সৌম্য বলেন, ‘অবশ্যই ভালো লাগছে। বড় ইনিংস খেলতে পারলে, সেঞ্চুরি হলে অনেক ভালো লাগে।’
তবে নিজের ওপর একটু ভীতশ্রদ্ধ সৌম্য। কারণটা কী? জানালেন সৌম্য, ‘ইনিংসের প্রায় অর্ধেক বাকি থাকতেই আমি আউট হয়ে গেছি। ইনিংসটা বড় করার অনেক সময় থাকলেও সেটা করতে পারিনি। এটা একটা আক্ষেপই বলতে পারেন। আমার ইনিংসটা আরও বড় করা উচিৎ ছিল।’
প্রশ্ন উঠলো, কোচ স্টিভ রোডস মাঠে আসলেই নাকি আপনি ভালো খেলেন। এটার কোনো রসায়ন রয়েছে কী? ম্যাচ শেষে তার সঙ্গে কথা হয়েছে কোনো? উত্তরে সৌম্য বলেন, ‘না কোনো কথা হয়নি। এমন কোনো রসায়নও নেই (হাসি)।’
এসময় নিজের ইনিংস সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘আমি সোজা ব্যাটে খেলেছি। তেড়েফুঁড়ে না খেলে বলের মেধা বিচার করে নিজেকে সংযত রেখে ব্যাটিং করেছি। চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব সোজা ব্যাটে খেলা যায়।’
এআরবি/এসএএস/পিআর