তীরে এসে তরী ডোবার উপক্রম রূপগঞ্জের
নিকট প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে সুপার লিগ শুরু করে ও নাইম ইসলাম বাহিনীর শিরোপা অনিশ্চিত। বরং তিন নম্বরে থেকে সুপার লিগ শুরু করা আবাহনীর সামনে এখন শিরোপা জয়ের হাতছানি।
আজ বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জকে ১০২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপার অনেকটাই কাছে আবাহনী। এখন হিসেব একটাই, বিকেএসপির একই মাঠে শেখ জামালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ জিতলেই অন্য কোনো সমীকরণের ধার না ঘেঁষে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে জাতীয় দলের তারকাখচিত বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী।
তখন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে জিতলেও আর লাভ হবে না। কারণ তখন আবাহনীর সঙ্গে পয়েন্ট সমান হয়ে গেলেও নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকার কারণে শিরোপা হাতছাড়া করে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
প্রথম পর্বে আবাহনীর বিপক্ষে ৬ উইকেটে জিতেছিল রূপগঞ্জ। কিন্তু সুপার লিগে হারলো ১০২ রানে। ফলে হেড টু হেডে রয়েছে সমতা। ফলে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় নিজেদের শিরোপা ধরে রাখতে সমর্থ হবে আকাশী-নীলরা। তবে সুযোগ রয়েছে রূপগঞ্জেরও। সেক্ষেত্রে আবাহনীকে হারতে হবে নিজেদের শেষ ম্যাচ এবং রূপগঞ্জকে জিততে হবে তাদের শেষ ম্যাচ।
বিকেএসপির তিন নম্বরে মাঠে প্রথম ইনিংস শেষেই মূলত জয় নিশ্চিত হয়ে যায় আবাহনীর। কারণ সৌম্য সরকারের সেঞ্চুরি এবং মোহাম্মদ মিঠুনের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৭৭ রানের। যা তাড়া করতে নেমে তরুণ ওপেনার নাঈম শেখের ক্যারিয়ার সেরা সেঞ্চুরির পরেও ২৭৫ রানের বেশি করতে পারেনি রূপগঞ্জ। ১০২ রানের বড় জয়ে শিরোপা থেকে এক হাত দূরে রয়েছে আবাহনী।
৩৭৮ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে নাইম শেখ ব্যতীত রূপগঞ্জের কেউই তেমন জবাব দিতে পারেননি। মেহেদি মারুফ ১০, মুমিনুল হক ৪, নাঈম ইসলাম ২০, জাকের আলি ৩, শাহরিয়ার নাফিস ২ রান করে আউট হলে ৮৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে রূপগঞ্জ।
রিশি ধাওয়ানের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৬১ রান যোগ করেন নাইম শেখ। ধাওয়ান আউট হন ৩৯ বলে ২৯ রান করে। সপ্তম উইকেটে নাইমের মতো নিজের ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং করেন ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ শহীদও। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৭ বলে ৫৩ রানের ইনিংস।
পরে ব্যাটিং স্বত্ত্বার ছাপ রাখেন বল হাতে ৫ ওভারে ৫৭ রান খরচ করা তাসকিন আহমেদও। মাত্র ২৩ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। অপরপ্রান্তে সঙ্গীর অভাবে থাকা নাইম শেখও তুলে নেন লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, দুটিই চলতি লিগে। শেষপর্যন্ত ১৩ চার ও ২ ছয়ের মারে ১৩৫ বলে ১২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
আবাহনীর পক্ষে বল হাতে ৩টি উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এছাড়া মাশরাফি বিন মর্তুজা ২টি, মোসাদ্দেক হোসেন ১টি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নেন ১টি উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে রূপগঞ্জের সামনে ৩৭৮ রানের বিশাল এক রানের লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে দিলো আবাহনী। সৌম্য সরকারের ঝড়ো সেঞ্চুরির সঙ্গে জহুরুল ইসলাম অমির ধৈর্য্যশীল ৭৫ রানের ইনিংস এবং মোহাম্মদ মিঠুনের টর্নেডো- সব মিলিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আবাহনীর স্কোরবোর্ডে রান দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৩৭৭ রান।
উদ্বোধনী জুটিতে ২৪.২ ওভারেই ১৬৯ রানের বিশাল এক জুটি গড়ে তোলেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার আর জহুরুল ইসলাম অমি। এরই মধ্যে ৭১ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন সৌম্য। ৭৯ বলে ১০৬ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। ৮৩ বল খেলে ৭৫ রানের ইনিংস গড়ে তোলেন জহুরুল ইসলাম।
নাজমুল হোসেন শান্ত ২৩ বলে ২৪, ওয়াসিম জাফর ৩৯ বলে ৪৬, সাব্বির রহমান ২৪ বলে ৩৩ এবং ৬ নম্বরে নেমে ৩৪ বলে ৬৪ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মারও মারেন তিনি।
শেষ দিকে মোসাদ্দেক ৬, সাইফুদ্দিন ১১ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ১ রান করেন। রূপগঞ্জের হয়ে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন ভারতীয় ঋশি ধাওয়ান। ১০ ওভারে তিনি দেন ৮১ রান। উইকেট নেন ১টি। শুভাশিস রায় দেন ৭৪ রান। উইকেট ১টি। তাসকিন আহমেদ ৫ ওভার বল করে দেন ৫৭ রান। উইকেট নিয়েছেন ২টি। এছাড়া মোহাম্মদ শহীদ ৯ ওভারে ৬২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
এআরবি/এসএএস/এমএস